Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কূলকিনারা নেই, ক্যাম্পেই ফিরতে হচ্ছে ইরাকিদের

প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ইরাকে যুদ্ধ আর সহিংসতা থেকে বাঁচতে অনেকেই ইউরোপে গিয়েছেন। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে অভিবাসীরা ইউরোপে গিয়েছেন, অনেকেই তার দেখা না পেয়ে আবার অভিবাসন ক্যাম্পে  ফিরে আসছেন। তাই অভিবাসন কর্মীরা বলছেন, এখন ইউরোপ থেকে উল্টো ইরাকে ফিরতে ইছুক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ইরাকেই তারা নতুন করে জীবন শুরু করতে চান। ফ্রান্সো নামের ৭ বছরের একটি শিশু বর্ণনা করছিল কীভাবে সে প্রতিদিন ঘরে বসে বোমার আওয়াজ শুনতে পেতো। ২ বছর আগে মসুলের কাছে তাদের খ্রিস্টান গ্রামে যখন ইসলামী স্টেট জেহাদিরা হামলা চালায় তখন তার সন্তানসম্ভাবা মা তার বোনের জন্মের জন্য এখলাস হাসপাতালে ছিলেন। ফ্রান্সো’র মা বলেন, ইখলাস হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশানে আমার ছোট মেয়ের জন্ম হয়। এই সময় আইএস হামলা চালালে সে অবস্থায় আমাকে এবং বাচাদের নিয়ে পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে আসে। সে সময় আমার জ্ঞানও ছিল না। এখনো সেই ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। আইএস এর হামলায় তাদের বাড়িঘর সব ধ্বংস হয়ে যায়। অতএব তার স্বামী হানি অন্যদের মত ইউরোপগামী অভিবাসন স্রোতে যোগ দেন। তার স্বপ্ন ছিল ইউরোপে তিনি তার পরিবারের জন্য নতুন জীবন শুরু করতে পারেবন। তিনি বলেন, তুরস্ক আর গ্রীসের মাঝে আমাদের নৌকাটি উল্টে যায়। তাবে আমি বেঁচে যাই। সাঁতরে আমি তীরে উঠলে পুলিশ আমাদের গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়ে দেয়। এরপর আমরা বেজমেন্টের কয়েকটি ঘরে থাকি। খাবার নেই, টাকা নেই, অনেক কষ্ট। ৫ মাস পরে আমি ইউরোপে যাবার আসা ছেড়ে দিয়ে আবার ক্যাম্পে চলে আসি।
আরবিলের বাহারকায় বাস্তুচ্যুত ইরাকিদের ক্যাম্প। এখানে এমন অনেক পরিবার রয়েছে যারা দীর্ঘ সময় ধরে এই ক্যাম্পে বাস করছে। ইরাকজুড়ে এরকম প্রায় ৩০ লাখ ইরাকি রয়েছেন, যারা আইএস এর হামলায় বাড়িঘর ছেড়েছেন। এদের অনেকেই ইউরোপে যাবার চেষ্টা করছেন। আবার অনেকের মনে করেন বাড়ির মত শান্তি কোথাও নেই। এরকম একজনের নাম সাব কামাল। তিনি বলেন, আমাদের এই ক্যাম্পে থাকা অভ্যেস হয়ে গেছে। আমাদের পরিবারের সদস্য ৮ জন। অনেকেই ইউরোপ বা তুরস্কে চলে গেছে। যখন এই যুদ্ধ থেমে যাবে তখন তারাও বাড়ি আসবে। মসুল থেকে পালিয়ে আসা আকরাম মনে করেন, ইরাকে তাদের কোন ভবিষ্যৎ নেই। তিনিও সুযোগ পেলেই দেশের বাইরে চলে যেতে চান। আকরাম বলেন, আমরা চলে যেতে চাই। কারণ, ইরাকে আমাদের কোন ভবিষ্যৎ নেই। আমাদের যে বন্ধুরা ইউরোপে গেছে, তার সেখানে বাড়ি পেয়েছে, তাদের ছেলে মেয়েরা শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে। আমাদের ইউরোপে যাওয়ার মত টাকা নেই, তাই এখানে পাড়ে রয়েছি। গত কয়েক মাসে গ্রীস বা ইতালি হয়ে ইউরোপে গমন ইছুক অভিবাসীর সংখ্যা অনেকটাই কম। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তা সান রুবলাক বলছেন, গত বছরের প্রথম ৮ মাসে গড়ে ১শ’ জন করে ফেরত আসা অভিবাসীদের পেয়েছি। কিন্তু এরপর থেকেই এই সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। গত মাসে ১ হাজারেরও বেশি ইরাকি ফেরত আসতে আইওএম এর কাছে সাহায্য চেয়েছে। ইরাকে ফেরত আসা একজন সাবেক গার্ড সাফিন ইসমাইল। সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কূলকিনারা নেই
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ