পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওয়াত আনার উদ্যোগ ঝিমিয়ে পড়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েই দায় সেড়েছেন সকলেই। অথচ বসতবাড়িতে নিষিদ্ধ কেমিক্যাল রেখে ৭১ জনের ‘মৃত্যুর জন্য দায়ী’ হাজী ওয়াহেদ ম্যানশনের দুই মালিক মো. হাসান ও সোহেল ওরফে শহীদকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেননি তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে ঘটনার ২১দিন পার হয়ে গেলেও কিছু আলামত সংগ্রহের বাইরে নেই কোন অগ্রগতি।
অন্যদিকে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় স্থানীয় এক বাসিন্দার করা মামলায় ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিকের দুই ছেলেকে তিন সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তারা হলেন- মো. হাসান ও সোহেল ওরফে শহীদ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরওয়ার কাজল। জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী।
মামলা ও ঘটনা তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা বলছেন, হাজী ওয়াহেদ ম্যানশনের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি নেই। মামলার কিছু আলামত সংগ্রহ ছাড়া সবই স্ত^বির হয়ে আছে।
সরেজমিনে চুড়িহাট্টায় গিয়ে দেখা যায়, আগুনের ২১দিন পরও ওয়াহেদ ম্যানশন ও আশপাশে পোড়া গন্ধ। ভবনের দোতলায় যেখানে পারফিউমের কারখানা ছিল সেখান থেকে আসছে সুগন্ধ। নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার বিম ও কলাম কিছুটা বেঁকে গেছে। পুলিশ সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা ভবনটির সামনে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে ওয়াহেদ ম্যানশনের নিচে পুড়ে যাওয়া পরিত্যক্ত দোকানগুলো থেকে ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ মালামাল সরিয়ে ফেলছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী হামিদুর রহমান ও মো. কাওসার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঘটনার পর এলাকাবাসীর প্রথম চাওয়া ছিল যারা এই ৭১ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী তাদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা। এরপর তাদের কেমিক্যালের লাইসেন্স দিয়ে যারা সহযোগিতা করেছে তাদেরও গ্রেফতার করা। তবে অন্যদের তো দূরের কথা এজাহারে নামধারী প্রধান দুই আসামিকে গতকাল পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি পুলিশ।
মামলা সম্পর্কে চকবাজার থানার চকবাজার থানার ওসি শামীম-অর-রশিদ তালুকদার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমরা আসামিদের এতদিনেও গ্রেফতার করতে পারিনি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মামলার তেমন কোন অগ্রগতি নেই। তদন্ত চলছে।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এতে দন্ডবিধি ৩০৪ (ক), ৪৩৬, ৪২৭ এবং ৩৪ ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। দন্ডবিধি ৩০৪ (ক) ধারায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’ শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ধারায় আসামির সর্বোচ্চ সাজা ৫ বছর। দন্ডবিধি ৪৩৬ ধারা ‘বিস্ফোরক দ্রব্য ও আগুনের মাধ্যমে সম্পদ বিনষ্ট’ করার কারণে দেয়া হয়েছে। এ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদন্ড। সম্পদ বিনষ্টের মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতি হওয়ায় দন্ড বধি ৪২৭ যোগ করা হয়েছে। এই ধারায় আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছরের কারাদন্ড। একই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কয়েকজন একত্রিত হয়ে অপরাধমূলক কাজ করার জন্য মামলায় দন্ডবিধির ৩৪ ধারাটি যুক্ত করা হয়েছে। এ ধারায় ভবনের মালিক, কেমিক্যাল ব্যবসায়ীসহ অগ্নিকান্ডের জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট সবাই দোষী। এ ঘটনার দুদিন পর দুই মালিকসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
মামলার বাদী মো. আসিফ। তার বাবা জুম্মন এই অগ্নিকান্ডে নিহন হয়েছেন। তিনিবলেন, আমরা শুধু নামেই মামলার বাদী, মামলার কোনো বিষয় নিয়ে পুলিশ আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেনি। কিছু জানতেও চায়নি। আমরাও স্বেচ্ছায় গিয়ে কিছু বলিনি। বাবাসহ এতো এতো প্রাণ চলে গেল, আমরা চাই এ অগ্নিকান্ডে যারা সরাসরি দোষী এবং যাদের অবহেলায় এ ঘটনা ঘটেছে তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, পুরান ঢাকার বংশাল, চকবাজার ও লালবাগ এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের লাইসেন্স নিয়ে ১ হাজার ৮৯৬ ব্যক্তি কেমিক্যালের ব্যবসা করেন। গত ১৯ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টার ৬৪ নম্বর হাজি ওয়াহেদ ম্যানশনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৭১ জন নিহত হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি সংস্থার প্রাথমিক তদন্তে আগুনের কারণ হিসেবে কেমিক্যালকেই দায়ী করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।