পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৃষ্টিতে কক্সবাজারের লবণ চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে থমকে গেছে কক্সবাজারে লবণ উৎপাদন কাজ। দেশের একমাত্র লবণ উৎপাদনকারী জেলা কক্সবাজারে লবণ উৎপাদন মৌসুমে এ বৃষ্টিতে কয়েক কোটি টাকার লবণ ভেসে গিয়ে চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।
৫ মার্চ সকাল থেকে আকাশে মেঘ জমতে শুরু করে। সাড়ে ১১টার দিকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। সারা দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে। টানা বৃষ্টির কারণে লবণ উৎপাদনকারী এলাকা মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া, টেকনাফ ও সদর উপজেলায় বৃষ্টির পানিতে মাঠেই লবণ ভেসে যায়। বিশেষ করে পলিথিন পদ্ধতিতে উৎপাদিত সাদা লবণ পানির সাথে মিশে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কৃষকরা।
চলতি বছর লবণ মৌসুম শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রতি কানিতে ৮০ থেকে ১০০ মন লবণ উৎপাদন করতে পেরেছে চাষিরা। মাঠে আবার লবণ উৎপাদনে কমপক্ষে এক সপ্তাহ সময় লাগবে। তবে বৃষ্টির ফলে আপাতত উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বলে জানান কয়েকজন কৃষক। চলতি সপ্তাহেই লবন উৎপাদন শুরু হতে পারে। এ কারণে দেশের বৃহত্তম লবণ শিল্প এলাকা সদরের ইসলামপুরে লবণ কারখানা মালিক ও শ্রমিকদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, এক দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ২ লাখ টনের বেশি লবণ। ফলে অর্ধশত কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি এক সপ্তাহ লবণ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন লবণ চাষি ও ব্যবসায়ীরা। লবণ চাষি কমিটির নেতা ও বিসিক কর্মকর্তারা বলছেন, সাময়িক এ ক্ষয়ক্ষতি লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় প্রভাব ফেলবে না।
জানা যায়, চলতি মৌসুমে কক্সবাজার জেলার হাজার হাজার লবণ শ্রমিক, চাষি ও ব্যবসায়ীরা আবহাওয়া অনূকূল থাকার স্বপ্ন নিয়ে আশাতীত ফলনের আশায় লবণ চাষাবাদ শুরু করে। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে বৃষ্টিতে লবণ চাষাবাদ প্রায় ৪/৫দিন পিছিয়ে যায়। গত সপ্তাহে ফের গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজমান থাকায় লবণ চাষাবাদ ব্যাহত হয়।
ঝড়ো হাওয়ার বৃষ্টিপাতে মানুষ ক্ষণিক স্বস্তি পেলেও জেলার লবণ চাষে ক্ষয়ক্ষতির বিরাট ধাক্কা বলে চাষাবাদে নিয়োজিত চাষিরা করেন। কক্সবাজার বিসিক লবণ শিল্প উন্নয়ন প্রকল্পের উপ-মহাব্যবস্থাপক দিলদার আহমদ জানান, এ বছর দেশে লবণের চাহিদা রয়েছে প্রায় ১৬ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ লাখ মেট্রিক টন।
তিনি আর ওজানান, গত ৪ মার্চ পর্যন্ত মৌসুমের ৩ মাসে জেলার প্রায় ৬০ হাজার একর জমিতে ৮ লাখ ৫ হাজার ২০০ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদিত হয়েছে। কিন্তু এখন বৃষ্টিতে এসব মাঠে লবণ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। আর বৃষ্টি বন্ধ হলে মাঠকে উৎপাদন উপযোগী করতে আরো ৭ দিন সময় লাগবে। এতে জেলার প্রায় ৬০ হাজার প্রান্তিক লবণ চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি জানান, সামনে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ সাময়িক ক্ষতিতে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় কোন ধরণের ব্যাঘাত ঘটবে না।
সদরের লবণ চাষি আমিন, সাইফুদ্দীন ও জসিম জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে দু’দফা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরও মৌসুম শুরুর আগে চাষ শুরু হওয়ায় দেশে লবণের কোন ঘাটতি হবে না। আর চলতি বছর লবণ মৌসুম শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রতি কানিতে ৮০ থেকে ১০০ মণ লবণ উৎপাদন করতে পেরেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও মাঠে আবার লবণ উৎপাদনে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে।
সদরের ইসলামপুর লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মাস্টার জানান, থেমে থেমে বৃষ্টির পর আবারও বৃষ্টি হলে মাঠ পর্যায়ে লবণ উৎপাদন বিলম্বিত হবে। এতে করে দেশের বৃহত্তম লবণ শিল্প এলাকা সদরের ইসলামপুরের উৎপাদনশীল কারখানাগুলো কাঁচামাল সঙ্কটে পড়তে পারে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে দেশব্যাপী পরিশোধিত লবণের প্রচুর চাহিদা রয়েছে এবং দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় কাঁচামালের সঙ্কট হলে চাহিদা পূরণ করতে অসম্ভব হয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।