Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

পাকিস্তান থেকে অন্য দেশে হামলা চালাতে দেয়া হবে না

মোদির মতো ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধেই অনশন করেছেন গান্ধী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি ধর্মান্ধ আখ্যা দিয়েছেন ইমরান খান। ’৪৭-এর দেশভাগের আগের ভারতীয় উপমহাদেশের সাম্প্রদায়িক সংঘাতের পরিস্থিতি স্মরণ করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মোদির মতো মানুষের উন্মাদনার কারণেই এখানকার মুসলমানরা পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবি তুলতে বাধ্য হয়েছে। ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রনায়ক মহাত্মা গান্ধীকে স্মরণ করে তিনি বলেছেন, মোদির মতো ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই অনশন করেছেন তিনি। ইমরান দাবি করেছেন, লোকসভা নির্বাচন জিততে ঘৃণা আর যুদ্ধের রাজনীতিকে হাতিয়ার করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী।
কোনো দেশে সন্ত্রাসী হামলা করতে পাকিস্তানের ভূমি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। ইমরান খান বলেন, আমরা আমাদের দেশে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে তৎপরতা চালাতে দেব না।
ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অঞ্চলকে সন্ত্রাসের এলাকায় পরিণত করছে বলে অভিযোগ করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। থার মরুভূমির পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত অংশে এক জনসভায় শুক্রবার তিনি বলেন, ওই মরু অঞ্চলের অর্ধেক বাসিন্দাই যে হিন্দু ধর্মাবলম্বী, সে ব্যাপারে তিনি অবগত। মোদি সরকার ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হলেও তার সরকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
উল্লেখ্য ডিভাইড অ্যান্ড রুল নামের বিভাজনের রাজনীতিকে ভর করে অখন্ড ভারতে প্রায় ২০০ বছরের উপনিবেশ কায়েম রাখতে সমর্থ হয়েছিল ব্রিটিশরা। দুই পক্ষের ধর্মোন্মত্ত মানুষই ছিল তাদের শাসনের ভিত্তি। ইমরান বলেন, মোদির মতো মানসিকতার মানুষদের জন্যই উপমহাদেশের মুসলমানেরা আলাদা দেশের জন্য লড়াই করতে বাধ্য হয়েছে। তার মতো ধর্মান্ধদের সহিংসতার কারণে মহাত্মা গান্ধীকেও অনশন করতে হয়েছে। উন্মত্ততার অবসান ঘটিয়ে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে না দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
ইমরান দাবি করেন, কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলি জিন্নাহর অনুপ্রেরণায় পকিস্তানের সব বর্ণ ও ধর্মের মানুষদের সুরক্ষায় তার সরকার কাজ করছে। তিনি বলেন, দেশের সব ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তার সরকার। কাউকে সাম্প্রদায়িক স¤প্রীতি নষ্ট করতে দেওয়া হবে না।
ইমরান দাবি করেন, ক্ষমতায় আসার পরই এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। তবে আসন্ন নির্বাচনে জিততে মোদি ঘৃণা আর যুদ্ধের রাজনীতি জড়িয়ে পড়েছেন বলেও মন্তব্য করেন ইমরান। তিনি বলেন, পুলওয়ামায় হামলার পর অপরাধীদের শনাক্তে পাকিস্তানের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়ার পরিবর্তে কাশ্মিরের বাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ করে ফেলেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, ‘ভারতে কোনও ধরণের দুর্ভাগ্যজনক পদক্ষেপ নিলে সশস্ত্র বাহিনী এবং পাকিস্তানের জনগণ যথাযথ জবাব দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুত রয়েছে’। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা দুর্বল নন তবে এখন ভারতের বিরুদ্ধে নয় দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনোযোগ দিতে চান তিনি।
এদিকে কোনো দেশে সন্ত্রাসী হামলা করতে পাকিস্তানের ভূমি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। ইমরান খান বলেন, আমরা আমাদের দেশে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে তৎপরতা চালাতে দেব না। ইরানের সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী- আইআরজিসি’র জওয়ানদের বহনকারী একটি বাসে শক্তিশালী গাড়িবোমা হামলায় ২৭ জওয়ান নিহত ও ১৩ জন আহত হন। পরবর্তীতে তদন্তে দেখা যায়, পাকিস্তানে নাগরিক হাফিজ মোহাম্মাদ আলী বিস্ফোরক ভর্তি গাড়িটি চালাচ্ছিল। হামলায় ওই সন্ত্রাসীও নিহত হয়।
ইরানে ওই হামলার একদিন পর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ভারতীয় আধা সামরিক বাহিনী সিআরপিএফ জওয়ানদের বহনকারী একটি বাসে ঠিক একই কায়দায় চালানো এক গাড়িবোমা হামলায় ৪৪ সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হন।
ওই দুই হামলার জের ধরে প্রতিবেশী দু’টি দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের অবনতি হয়। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। সূত্র : ডন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ