Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

২ লাখ মানুষের সেবায় ২ চিকিৎসক!

দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

সাতক্ষীরা থেকে আবদুল ওয়াজেদ কচি | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

চিকিৎসক সঙ্কটে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়তে বসেছে স্বাস্থ্য সেবা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সঙ্কট সমাধানে আবেদন করেও কোনো সুফল মিলছে না। মাত্র দু’জন ডাক্তার দিয়েই চলছে উপজেলার দুই লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা। আর এতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সেবা না পেয়ে যাচ্ছেন নাম সর্বস্ব বেসরকারি ক্লিনিকে। আর সেখানেই সর্বস্বান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৮৫ সালের জুলাই মাসে সখিপুরে স্থাপিত হয় ৩১ শয্যা বিশিষ্ট দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ২০১১ সালে ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য ১৬টি চিকিৎসকের পদ রয়েছে। যেখানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র দু’জন। অন্য ১৪টি পদ রয়েছে শূন্য।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালে একটি বিষয়ে ডাক্তার দেখাতে এসে অন্য বিষয়ের বা জেনারেল মেডিকেল অফিসার দেখিয়ে সঙ্কয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন অনেক রোগী। আবার অনেক রোগী সঠিক চিকিৎসা না পাওয়াতে বেসরকারি নাম সর্বস্ব ক্লিনিকের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। সাথে সাথে সরকারি সেবার প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। ফলশ্রুতিতে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড ম্নান হয়ে যাচ্ছে। আবার হাসপাতালের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি সংরক্ষণ ও ব্যবহার অভাবে অকেজো হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে জনবল না থাকায় আল্টোসোনোগ্রাফি, এক্সেরে মেশিন ও অপরেশন বিভাগ দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে আছে। তবে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার প্রচেষ্টায় ইসিজি ও টেলিমেডিসিন বিভাগ চালু রয়েছে। সেখান থেকে দেশের অভিজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে সাধারণ রোগীদের। একই সাথে হাসপাতালে চালু রয়েছে নরমাল ডেলিভারির ব্যবস্থা।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রহিমা খাতুন বলেন, আমি এসেছি হাসপতালে ডাক্তার দেখাতে, কিন্তু এসে দেখি ডাক্তার আছে একজন। যে জন্য ডাক্তার দেখাতে এসেছি সেখানে ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে যাচ্ছি।
সেবা নিতে আসা আরেক রোগী ফরিজুল ইসলাম বলেন, আমরা গরীব মানুষ। তাই সাতক্ষীরায় বা বাইরে কোথাও গিয়ে চিকিৎসা নেয়া সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে যা সেবা পাচ্ছি তাই নিচ্ছি। সরকার যদি গ্রাম অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত ডাক্তার দেন তাহলে আমাদের মত অসহায় মানুষ ভালো সেবা পেত।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল লতিফ বলেন, হাসপাতলে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ থাকলেও চাহিদা অনুযায়ী লোকবল নেই। ডাক্তার সঙ্কট নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোন ফল আসছে না। বর্তমানে যারা এখন দায়িত্বে আছেন তারা প্রতিদিন ইনডোর ও আউটডোরে ১৫০-২০০ রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, শুধু দেবহাটা নয় জেলা জুড়ে চিকিৎসক সঙ্কক রয়েছে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসক সঙ্ককের বিষয় জানানো হয়েছে। নতুন চিকিৎসক যোগদান করলে সঙ্কক দূর হবে। তবে আমরা সীমিত জনবল দিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাস্থ্য


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ