নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো চলে যাওয়ার পর থেকে কি এল ক্ল্যাসিকো একপেশে হয়ে গেল? পরিসংখ্যানপ্রিয় যারা তারা কিন্তু একথা বলতেই পারেন। চলতি মৌনুমে চার ক্ল্যাসিকোয় তিনটিতেই জিতেছে বার্সেলোনা, অন্যটি ড্র। গোলের ব্যবধান ১০-২! তিন দিনের ব্যবধানে চিরপ্রতিদ্বন্ধীদের দুইবার হারালো কাতালান দলটি। যার সর্বশেষ সংযোজন পরশু লা লিগায় ইভান রাকিটিসের একমাত্র গোলে ঘরের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদের হার (১-০)। এল ক্ল্যাসিকোয় এটি ছিল বার্সেলোনার ৯৬তম জয়, ৯৫টি জয় রিয়ালের। ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর এই লড়াইয়ে গত ৮৭ বছরের মধ্যে এই প্রথম এগিয়ে গেল বার্সেলোনা।
রোনালদো চলে যাওয়ায় যারা লিওনেল মেসির কারণে বার্সার পাল্লা ভারি হওয়ার কথা ভাবছেন তাদের বলে রাখা দরকার, গত অক্টোবরে লিগের প্রথম লেগে ন্যু ক্যাম্পে এসে রিয়াল যে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত হলো সেই ম্যাচে কিন্তু দলে ছিলেন না মেসি। ঘরের মাঠে কোপা দেল রের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ১-১ ড্র ম্যাচেও চোটের কারণে প্রথমার্ধে বেঞ্চে ছিলেন বার্সা দলপতি। দ্বিতীয় লেগে বার্নাব্যুতে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ মেসি উপর থেকে চোখ সরায়নি। দল তুলনামূলক খারাপ খেলেও সেই সুযোগটা কাজে লাগান দেম্বেলে-সুয়ারেজ, তুলে নেন ৩-০ গোলের জয়। এবার লিগের দ্বিতীয় লেগেও মেসিকে বোতলবন্দী করে রাখেন রামোস-ভারানেরা। আর্জেন্টাইন তারকার উপর অনেকটা বিরুপও ছিলেন তারা। একের পর এক আঘাতে দ্বিতীয়ার্ধে অস্বস্তি নিয়ে খেলতে দেখা যায় মেসিকে। অহেতুক মুখে আঘাত করায় রামোসের সঙ্গে বাকযুদ্ধও হয় মেসির, রেফারি এসে সামাল দেন পরিস্থিতি। দ্বিতীয়ার্ধে বাধ্য হয়ে রেফারি হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন রামোসকে। সবগুলো ম্যাচে আক্রমণে নেতৃত্ব দিলেও কোন ম্যাচেই গোলের দেখা পাননি ক্ল্যাসিকো ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
ম্যাচগুলোর দিকে ভালোভাবে খেয়াল দিলে দেখা যাবে, বেশি গোলের সুযোগ তৈরী করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। বিশেষ করে বার্নাব্যুতে শেষ দুই ম্যাচে। কিন্তু দলে যে কোন রোনালদো নেই! তাই সুযোগগুলোও কেউ কাজে লাগাতে পারেননি। বার্সার ডি বক্সে একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া করে লস ব্ল্যাঙ্কোসদের হতাশা বাড়িয়েছেন ব্রাজিলিয়ান ১৮ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস জুনিয়র। পরশু ম্যাচও তার ব্যতিক্রম ছিল না। ম্যাচ শেষে এদিন ঠিক এই হতাশাই বের হয়েছে রিয়াল দলপতি সার্জিও রামোসের মুখ থেকে, ‘আজ (শনিবার) আমরা আমাদের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলাম না। আর ফুটবল গোলেরই খেলা।’ ‘আমাদের গোলের সুযোগ ছিল। কিন্তু যদি আপনি গোল করতে না পারেন, ফলাফল আপনার বিপক্ষে যাবে।’
বার্সার ক্ষেত্রে বলা যায় ঠিক উল্টোটা। গোছালো আক্রমণে যে সুযোগগুলো তারা তৈরী করেছে সেগুলোই কাজে লাগিয়েছেন সুয়ারেজ-দেম্বেলে-রাকিটিচরা। এই সত্যিটাও স্বীকার করেন রামোস, ‘তারা আমাদের চেয়ে আরও কার্যকর ছিল। আর গোলই ফুটবলে ফলাফল নির্ধারণ করে দেয়।’
এই হারে লিগে পয়েন্ট তালিকায় সবার উপরে থাকা বার্সেলোনার চেয়ে ১২ পয়েন্ট পিছিয়ে পড়লো রিয়াল। এক ম্যাচ কম খেলা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের চেয়ে ১০ পয়েন্টে এগিয়ে বার্সা। তার মানে একদিকে বার্সার ট্রেবল জয় আরো উজ্জ্বল হলো, অন্যদিকে কোপা দেল রের পর লিগ শিরোপাও অনেকটা ধুসর হয়ে গেল রিয়ালের। তাদের একমাত্র ভরসা এখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত দুইটায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ফিরতি পর্বে আয়াক্সের বিপক্ষে খেলবে তারা। যে ম্যাচে আবার অধিনায়ক রামোসকে পাবে না রিয়াল। ইচ্ছাকৃত হলুদ কার্ড দেখায় দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। এসব বাস্তবতাও মেনে নিচ্ছেন তিনি, ‘অবশ্যই এটি তাদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আর আমাদের জন্য দুঃখের বিষয়। কিন্তু এখনও আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব। আমাদের সামনে একটা নতুন ফাইনাল আছে (আয়াক্সের বিপক্ষে)। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগা দুই জায়গাতেই আমরা আমাদের সবকিছু দিয়ে লড়ব।’
বার্সা কোচও ভালভার্দেও রিয়ালকে লিগ শিরোপার দৌড়ে রাখছেন, ‘রিয়ালের শিরোপা সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে তা আমরা কখনোই বিবেচনা করব না। যেহেতু অনেকটা সময় বাকি রয়েছে, আর তারা টানা অনেক পয়েন্ট অর্জন করতে পারে।’ অ্যাটলেটিকোর কথাও ভুলছেন না তিনি, ‘তারপর আছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। আর তাদেরকে হিসাবের বাইরে রাখাটা হাস্যকর। আর আপনি যদি হারতে শুরু করেন, তবে রিয়াল মাদ্রিদও শিরোপার দৌড়ে এখনও আছে।’ গত বছরের তুলনা টেনে আনেন ভালভার্দে, ‘গত বছর লা লিগায় আমরা এর চেয়েও বড় ব্যবধানে এগিয়ে ছিলাম। আর রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল। তাই তারা দেখিয়েছে যে তারা সবসময়ই শিরোপা জিততে পারে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।