পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
জাপানের বিনিয়োগকারীদের জন্য নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে হচ্ছে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল। এজন্য ‘নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন’ নামের একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে ২ হাজার ৫৮২ কোটি ১৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।
এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৪৫৪ কোটি ৩৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার (জাইকা) ঋণ থেকে ২ হাজার ১২৭ কোটি ৮২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা খরচ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য ভূমি ও অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। সেই সঙ্গে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানি ও স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, প্রস্তাব পাওয়ার পর প্রকল্পটি নিয়ে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেওয়া বিভিন্ন সুপারিশ প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। আগামী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সম্প্রতি সব নির্ণায়ক পূরণ করে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে দেশে দ্রুত শিল্পায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। এ সব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পরিকল্পিত শিল্পায়নের মাধ্যমে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য স্থানীয় এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বাংলাদেশ সরকার খোলা দ্বার নীতি নিয়েছে। এই নীতির আলোকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া দেশের সুষম উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে সরকার বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২০১৫ সাল হতে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫ বছরে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের পরিকল্পনা নিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালের জুনে মোট ৭৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয়া হয়েছে যার মধ্যে ৫৬টি সরকারিভাবে এবং অবশিষ্ট ২৩টি বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলায় জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অন-সাইট উন্নয়ন করা হলে ভবিষ্যতে জাপানি ও স্থানীয় বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে রফতানি আয় বৃদ্ধি এবং বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এর মধ্যে ১৫ দশমিক ৮২৫ বিলিয়ন ইয়েনের ফরেন ডিস্ট্রিক ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন প্রজেক্ট শীর্ষক একটি ঋণচুক্তি সই হয়। এ চুক্তির আওতায় প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নায়ারণগঞ্জের আড়াইহাজারে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য নির্ধারিত এলাকার অন-সাইট অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সরাসরি জাপানি ও স্থানীয় বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য জাপানি অর্থনৈতিক জোন (জেইজেড) স্থাপন করা হবে। প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এর মাধ্যমে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি হতে ২০১৯ সালের ৩০ জুন বাস্তবায়নাধীন অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল (জেইজেড) স্থাপনের জন্য ৯৯১ দশমিক ৪৮ একর ভূমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম গুলো হচ্ছে, ভূমি উন্নয়ন, এক্সেস রোড নির্মাণ, সংরক্ষণ খাল ও সংরক্ষণ পুকুর নির্মাণ এবং পাম্প স্টেশন স্থাপন, গ্যাস পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও গ্যাস সরবরাহ, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন, পাওয়ার স্টেশন ও সাব-স্টেশন, ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন এবং ২১ জন আন্তর্জাতিক ও ২২ জন স্থানীয় পরামর্শক নিয়োগ করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে একনেকের জন্য তৈরি সারসংক্ষেপে উল্লেখ করে বলেছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশে জাপানীজ বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।