পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কাগতিয়া আলীয়া দরবার শরীফের পীর সাহেব আল্লামা ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী বলেছেন, আধ্যাত্মিকতার সোনালি পথের প্রান্তরে মিলে সিরাতুল মোস্তাকিমের সন্ধান। যে পথে রয়েছে নিয়ামতের অতল সমুদ্র। নূরে মুহাম্মদীর (সা.) আলোতে চলে এ পথের পথিকেরা। ফলশ্রুতিতে থাকে না পথ হারানোর ভয়। হৃদয়ে অনুভব করে প্রিয় রাসূলের সুরভি প্রেমময়। তিনি গতকাল শনিবার রাজধানী গুলিস্থানের কাজী বশির মিলনায়তনের সম্মুখস্থ ময়দানে ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলনে উপস্থিত লাখো মুসলমানের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, পৃথিবীব্যাপী অশান্তি-অস্থিরতার মূলে রয়েছে স্রষ্টাকে ভুলে সৃষ্টিতে মত্ত হয়ে যাওয়া। কাগতিয়ার মরহুম পীর সাহেব এই পথহারা-দিশেহারা মানবের আত্মায় নূরে মুহাম্মদীর বিচ্ছুরণে স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির ব্যবধান দূর করে সৃষ্টি করেন রূহানিয়াত। এভাবে মানবের অশান্ত আত্মা হয় শান্ত, অস্থির হৃদয় হয় স্থির। গাউছিয়্যতের এই দর্শন সারা পৃথিবীতে পৌঁছে গেলে পৃথিবীটা হবে শান্তির আরাধ্য নিকেতন, সর্বত্র উড়বে দ্বীন ইসলামের বিজয় কেতন। পবিত্র জশ্নে জলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদ্যাপন ও কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতার স্মরণে তরিক্বতের এ সম্মেলনের আয়োজন করে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ।
প্রধান অতিথি কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতার বর্ণাঢ্য জীবন, কর্ম ও অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, এ মহামণীষী ইসলামের খেদমতে, সুন্নাতে মোস্তফার প্রচারে, ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসারসহ সকল ক্ষেত্রেই রেখেছেন সমান অবদান। যিনি মুসলিম মিল্লাতের কল্যাণে কাগতিয়া আলীয়া দরবার শরীফ তরিক্বতের প্রবর্তন করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য আল্লামা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, এফবিসিসিআই পরিচালক খন্দকার রুহুল আমিন সিআইপি, মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ, কানাডা শাখার সচিব আলহাজ মীর মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এস. এম কফিল উদ্দিন, দি রাজধানী গ্রুপের চেয়ারম্যান এস. এম. শাহজাহান।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. আবুল মনসুর বলেন, চতুর্দিকে যখন বিভ্রান্তির বেড়াজালে মানুষ বিভ্রান্ত ঠিক এরকম সময়ে নূহ নবীর কিশতি হয়ে দিশেহারা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়ে যাচ্ছে কাগতিয়া দরবার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মোহাম্মদ আহসানউল্লাহ বলেন, কাগতিয়া দরবার যেন বেহেশতি ফুলের সুঘ্রানে সুশোভিত, তাই নবীপ্রেমিকদের আনাগোনায় এ দরবার মুখরিত। এ দরবারের ঐতিহ্য আদর্শকে যথাযথভাবে ধারণ করতে পারলে আলোকিত মানুষে পরিণত হয়। তাই বিশ্বকে আলোকিত করার জন্য কাগতিয়ার দর্শনই সত্যিকারের দর্শন।
প্রিন্সিপাল শাব্বীর আহমেদ মোমতাজী বলেন, নৈতিকতার চরম অবক্ষয়ের যুগে তাকওয়াবান মানুষ সৃষ্টিতে কাগতিয়ার মরহুম মুর্শেদ যে অবদান রেখেছেন তা বিশ্বের বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য ভূমিকা পালন করছে।
খন্দকার রুহুল আমিন সিআইপি বলেন, বর্তমানের কঠিন যুগে যুবকদের সত্যিকারের পথে পরিচালনা করা না গেলে দেশের কাঙ্খিত মুক্তি সম্ভব নয়। আর যুবকদের সিরাতুল মোস্তাকীম এর পথে পরিচালনার জন্য কাগতিয়া দরবারের পথই মুক্তির পথ। ব্যারিস্টার এস.এম.কফিল উদ্দিন বলেন, দুর্নীতি নিরসনের জন্য ইসলামের অনুসরণের কোন বিকল্প নেই। আর ইসলামের প্রকৃত অনুশীলনের সত্যিকারের তালিম দিয়ে যাচ্ছেন কাগতিয়া দরবার।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ ইব্রাহীম হানফি, আল্লামা মুফতি আনোয়ারুল আলম সিদ্দিকী, আল্লামা মোহাম্মদ আশেকুর রহমান, আল্লামা এমদাদুল হক মুনিরী, আল্লামা মোহাম্মদ সেকান্দর আলী ও আল্লামা মুহাম্মদ ফোরকান। শেষে প্রধান দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।