পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদীগুলো এখন অস্তিত্ব সঙ্কটে। স্বাধীনতার পর দেশে নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার বর্গকিলোমিটার। ৪৮ বছরে নদী খেকোদের দখলের কবলে পড়ে নদীপথের দৈর্ঘ্য কমে তিন হাজার ৮০০ বর্গকিলোমিটারে নেমে এসেছে। দেড় হাজার নদী থেকে কমে দেশে এখন নদীর সংখ্যা ৩শ’তে ঠেকেছে।
দেশের বেশীর ভাগ নদ-নদী অবৈধভাবে দখল-দূষণ করে বিভিন্ন ধরনে স্থাপনা নির্মাণ করে পরিবেশ ধ্বংসের মুখে ফেলেছে নদীখেকোরা। এর জন্য দায়ী প্রভাবশালী নদীখোকোরা। খরস্রোতা মেঘনা নদী দখল নিয়ে ৬ পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ প্রথম পর্ব।
খর স্রোতা বহমান মেঘনা নদী দখল করেছে মেঘনা গ্রুপ। সোনারগাঁও উপজেলার বিভিন্ন অংশে নদী দখল করে নিয়েছে তারা। অভিযোগ রয়েছে, নদী দখলের পাশাপাশি ভুয়া দলিলে সাধারণ মানুষের জমিও দখল করেছে মেঘনা গ্রুপ। উপজেলার মেঘনা তীরবর্তী বিভিন্ন পয়েন্ট চর রমজান সোনাউল্লাহ, আষাড়িয়ার চর, চর লাউয়াদী, পূর্ব দামোদরদী, নরসুলদী ও নয়াপাড়া মৌজায় মেঘনা নদী দখল করে মেঘনা গ্রুপ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। মেঘনা নদীর কোনো কোনো অংশে পাঁচশ ফুট আবার কোনো অংশে সাতশ’ ফুট নদী দখল করেছে মেঘনা গ্রুপ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মেঘনা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে নদী, ঘরবাড়ি আর খাস জমি সবই সমান তালে দখল করে নিচ্ছে মেঘনা গ্রুপ। উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের আনন্দবাজার সংলগ্ন পূর্ব দামোদরদী, নরসুলদী ও নয়াপাড়া মৌজার মেঘনা নদীর প্রায় ৫০ একর জমি দখল করে নিয়েছে মেঘনা গ্রুপ। নদীগর্ভের প্রায় ৭০০ ফুট দখলে নিয়ে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করেছে মেঘনা গ্রুপ। মেঘনা গ্রুপের দখলের কারণে নদীর গতিপথ অনেকটা বদলে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আনন্দ বাজারে মেঘনা গ্রুপের বর্জ্যরে কারণে মেঘনা নদীর পানি প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে। যার জন্য ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে নদীর পানি। ফলে বসনদরদী, দামোদরদী, খামারগাঁও, মামলুতপুর, টেঙ্গারচর, খংসারদী, দামোদরদী ও মোবারকপুর এলাকার লোকজন রান্নাবান্না ও গৃহস্থালি কাজে পানির সঙ্কটে পড়েছেন। নদীর পানি দূষিত হওয়ায় সোনারগাঁও এলাকায় মাছের প্রজনন অনেকটা কমে যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গায়ের জোরে মানুষের বসতবাড়ি ও খাসজমি এবং সরকারি খালও দখল করছে মেঘনা গ্রুপ। বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের নরসুলদী, পূর্ব দামোদরদী, টেঙ্গারচর ও নয়াপাড়া মৌজায় অবস্থিত স্থানীয় জনগণের প্রায় ২০০ বিঘা জমি অবৈধ ও ভুয়া দলিলের মাধ্যমে দখল করে নিয়েছে মেঘনা গ্রুপ।
এদিকে, সোনারগাঁয়ের মেঘনা লঞ্চ ঘাট, ঝাউচর, প্রতাপের চর ও কাদিরগঞ্জ এলাকায় মেঘনা বিশাল পরিমান নদী দখল করেছে এবং বর্তমানেও নদী দখল করে যাচ্ছে। উপজেলার গঙ্গানগর এলাকায় পাওয়ার প্লান্ট এলাকায়ও বিশাল পরিমান নদী দখল করেছে মেঘনা গ্রুপ। আষাড়িয়ার চর এলাকায় মেঘনা নদী ও মেনী খালী নদীর প্রায় ৩০ একর নদী ও নদী তীরবর্তী জমি বালু দিয়ে ভরাট করে দখলে নিয়েছে মেঘনা গ্রুপ।
জানা গেছে, নদী ও সরকারি খাস সম্পত্তি দখলের প্রতিবাদে বছর খানেক আগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি, কয়েকবছর আগে মেঘনা নদীর সাতশ’ ফুট দখল ও নদী তীরবর্তী জমি বেআইনিভাবে ভরাট ও ভূমি উন্নয়ন কাজ করার অভিযোগে মেঘনা গ্রুপকে জরিমানাও করেছিলো পরিবেশ অধিদফতর। সে সময় পরিবেশ নষ্টের অভিযোগে ৩০ লাখ টাকা জরিমানার পাশাপাশি নদী থেকে অবৈধভাবে ভরাট করা বালি অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়ে। পরিবেশ অধিদফতরের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযানটি পরিচালনা করে। কিন্তু অভিযানের পরও নদী দখল ও ভরাট কাজ অব্যাহত রাখে মেঘনা গ্রুপ। অথচ এর বিপরীতে স্থানীয় ভূমি অফিস নোটিশ দিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বি.এম. রুহুল আমিন রিমন বলেন, নদী দখলের খবর পেয়েছি। তাদেরকে চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরি আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে উচ্ছেদ অভিযানে যাবো।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, কাউকে নদী দখল করতে দেওয়া হবে না। দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।