Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফাল্গুনী বৃষ্টিসিক্ত সারাদেশ ঢাকায় মুষলধারে বর্ষণ

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

মাঝ-ফাল্গুনের বৃষ্টিতে সারাদেশ সিক্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ রাজধানীসহ ঢাকা ও এর আশপাশ এলাকায় মুষলধারে বর্ষণ হয়। মাঝারি ধরনের বর্ষণ হয়েছে খটখটে বিশুষ্ক রুক্ষ রংপুর বিভাগেও। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, ‘অসময়ের’ এই ফাল্গুনী বৃষ্টিপাত হবে সাময়িক। বর্ষাকালের মতো একটানা ভারী কিংবা মাঝারি বর্ষণ হবেনা। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, শীতের পর সমগ্র দেশে নদী-নালা খাল-বিল বেশিরভাগই শুকিয়ে গেছে। খরার দশা বিরাজ করছে অনেক জেলায়। এ অবস্থায় ফাল্গুনের বৃষ্টিপাতে বোরো ফসল, শাকসবজি আবাদ ও মাছ চাষের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনবে। শুকনো মওসুমে এই বৃষ্টির পানির সুবাদে মাটির তলায় পানির রিজার্ভ হবে রিচার্জ। এর ফলে জমিতে সেচ বাবদ কৃষকের কোটি কোটি টাকা খরচ সাশ্রয় হবে। পানির এই প্রাকৃতিক পুনর্ভরণ প্রক্রিয়া বা রিচার্জ কৃষি-খামার, ফল-ফসল ও পরিবেশ-প্রতিবেশের জন্য খুবই প্রয়োজন। তবে এ সময়ে শিলাবৃষ্টি যদি ব্যাপকহারে হয় তাহলে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল, সবজির জন্য উল্টো ফল হতে পারে।
গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ফরিদপুরে ৫৪ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় ৩৩, সীতাকুন্ডে ৪, কুমিল্লায় ৮, নোয়াখালীতে ৪, সিলেটে ১৬, রাজশাহীতে ১৬, ঈশ্বরদীতে ৩৬, বগুড়ায় ১৩, রংপুরে ১৩, খুলনায় ১৫, বরিশালে ৫ মিলিমিটারসহ দেশের অধিকাংশ জেলা-উপজেলায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বর্ষণ হয়েছে। গত সোমবার থেকে দুই দিনে রংপুর বিভাগে বৃষ্টিপাত না হলেও গতকাল সমগ্র বিভাগে প্রত্যাশিত বর্ষণ হয়েছে। গতকাল সকাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় সর্বোচ্চ ৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশের সাথে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বজ্রমেঘের ঘনঘটা যোগ হওয়ার ফলেই সারাদেশে বৃষ্টিপাতের আহহ তৈরি হয়েছে গত সোমবার ভোরবেলা থেকেই। আজ বৃহস্পতিবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হ্ওায়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে দেশের কিছু কিছু জায়গায় মাঝারী ধরনের ভারী বর্ষণসহ বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার ক্রমে উন্নতি হতে পারে। রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে। এর পরের ৫ দিনে রাত ও দিনের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে পারে।
বন্দরে ৩ নম্বর সঙ্কেত
বজ্রমেঘের ঘনঘটা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বাংলাদেশের উপকূল সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া সতর্কবার্তায় আবহাওয়াবিদ মোঃ আবদুর রহমান খান জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত চলতি মৌসুমে গতকালই প্রথম সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখানো হলো। সাগর উত্তাল থাকায় মাছ শিকার অনেকাংশে কমে গেছে।
অভ্যন্তরীণ নৌ-বন্দরে ২ নম্বর সঙ্কেত
আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরসমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, পাবনা, বরিশাল, কুমিল্লা, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দরসমূহকে ২ নম্বর নৌ হুশিয়ারী সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বৃষ্টি

৫ অক্টোবর, ২০২২
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ