Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে স্বামী পরিত্যক্তা মহিলাকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন

লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৭:৫৪ পিএম

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ চন্ডিপুর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ মিন্টুর নির্দেশে রানী বেগম (৩৩) নামের এক স্বামী পরিত্যক্তা মহিলাকে শিকলে বেঁধে বেদম মারধর ও নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত মহিলা। 

নির্যাতনের শিকার মহিলা রানী বেগম উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের ঠাকুর বাড়ীর মোহাম্মদ উল্যার মেয়ে।
ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৯টায় উপজেলার চন্ডিপুর ইউপির ফতেহপুর গ্রামের ঠাকুর বাড়িতে।
স্থানীয়রা আজ বুধবার সকালে চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতার হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে নির্যাতিতা রানী বেগমকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছেন।
হসপিটালে নির্যাতনের শিকার রানী বেগম জানান, একই বাড়ির ইয়াহিয়া মাষ্টারের ছেলে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মিন্টুর নির্দেশে একই বাড়ির শিরীন আক্তার এবং তার মেয়ে সুমি আক্তারসহ ৭/৮ জনের নেতৃত্বে বাড়ির সুপারি বাগানে গাছের সাথে শিকল দিয়ে বেঁধে বেদম মারধর করে।
এসময় রানী বেগমের আর্তচিৎকারে পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে রানী বেগম মারধরের হাত থেকে রক্ষা পায়।
তিনি আরো জানান, স্থানীয় এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করলেও চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ভূঁইয়া ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মিন্টুর লোকজনের ভয়ে কেউ হাসপাতালে নিয়ে আসতে চায়নি।
বুধবার সকালে রানী বেগমকে মুমুর্ষ অবস্থায় রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিশ্চুক ঠাকুর বাড়ির এক বৃদ্ধা জানান, মূলত রানী বেগম স্বামী পরিত্যাক্তা। বর্তমানে রানীর কাছে ৫লক্ষ টাকা আছে। ওই টাকাগুলো ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ার জন্য রানীর উপর বিভিন্ন সময় নির্যাতন চালিয়ে আসছিলো। বাড়ির শিরীন আক্তার এবং তার মেয়ে সুমি আক্তারকে দিয়ে ওয়ার্ড সভাপতি মিন্টু ও চেয়ারম্যান এসব ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ ব্যপারে শিরিন আক্তারের মেয়ে সুমি আক্তার জানান, রানী নামের ওই মহিলা বাড়ির সবাইকে সবসময় গালাগাল করতো। এ বিষয়ে কামাল চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি রানী বেগমকে গাছের সাথে বেঁেধ রাখার জন্য বলেছেন। এ কারনেই আমরা বাড়ির সকলে মিলে বেঁেধ রেখেছি।
দক্ষিন চন্ডিপুর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ মিন্টু বলেন, সভাপতি হিসেবে বাড়ি ও এলাকার সুবিধা-অসুবিধা দেখার দায়িত্ব আমার রয়েছে। রানী নামের ওই মহিলা পাগল। দিনরাত শুধু মানুষকে গালাগাল করে। ঠাকুর বাড়ির সম্মানের কথা চিন্তা করে একটু শাষন করা হয়েছে। এতে দোষের কিছু হয়নি।
এ ব্যাপারে চন্ডিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে বেঁধে রেখে এভাবে মারধরের কথা আমি জানিনা। তবে এ ব্যপারে কেউ কখনো অভিযোগ করেনি। আমি ঐ বাড়ীতে গিয়ে সত্যতা জেনে নিবো।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ তোতা মিয়া জানান, বিষয়টি আমি জানি না। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্যাতন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ