Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঝিনাইদহে গাছে উল্টো ঝুলিয়ে যুবক নির্যাতন

দুই আ’লীগ নেতা গ্রেফতার

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫২ পিএম

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে টেলিভিশন চুরির অপবাদ দিয়ে রানা (২৭) নামে এক যুবককে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শাহীনুর রহমান তুহিন নামে স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতাসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার মধ্যরাতে তাদের নিজ নিজ গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে তাহেরহুদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও শ্রীপুর গ্রামের শামছুল ইসলাম বাদলের ছেলে শাহীনুর রহমান তুহিন ও ধুলিয়া গ্রামের আতিয়ার কাজীর ছেলে বাবুল কাজীকে শনিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রামবাসী জানায়, গত ২৭ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) হরিণাকুন্ডু উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়নের শ্রীপুর বাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয় থেকে একটি টেলিভিশন চুরি হয়। পরদিন সকালে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর রহমান তুহিন নিজ গ্রামের ছেলে রানাকে চোর সন্দেহে মাঠ থেকে ধরে আনে। পরে শ্রীপুর বাজারের একটি কাঁঠাল গাছে হাত পা বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে বেদম মারধর করেন।
নির্যাতনের ভিডিওটি এক সপ্তাহ পর গতকাল শুক্রবার কে বা কারা ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে তা ভাইরাল হয়ে যায়। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ। শুক্রবার রাতেই হরিণাকুন্ডুতে ছুটে যান ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। তারা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার করতে নির্দেশ প্রদান করেন।
শুক্রবার গভীর রাতে গ্রেফতার হন দুই আ’লীগ নেতা তুহিন ও বাবুল কাজী। তাহেরহুদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনজের আলী জানান, গত ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে মাঠে কাজ করছিল রানা। এ সময় শাহিনুর রহমান তুহিন টেলিভিশন চুরির অভিযোগে রানাকে ধরে নিয়ে আসে। এরপর গ্রামের একটি গাছে ঝুলিয়ে অমানবিকভাবে পিটিয়ে নির্যাতন করে। নির্যাতনের পর পরিবারের সদস্যরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে কুষ্টিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। রানার পিতা ওমর আলী জানান, আমার ছেলে কোন চুরির সাথে জড়িত না। তাকে অন্যায় ভাবে মারা হয়েছে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার আ’লীগ নেতা শাহীনুর রহমান তুহিন বলেন, ভোটের ৫ দিন আগে নির্বাচনী অফিস থেকে রানাই টিভি চুরি করে। আমি তাকে সামান্য মেরেছিলাম। তাকে আমি চিকিৎসাও করিয়েছিলাম। কিন্তু দলীয় কোন্দল থাকায় আওয়ামীলীগের একটি পক্ষ বিষয়টা ভিন্নভাবে তুলে ধরে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে।
হরিণাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান শনিবার দুপুরে গণমাধ্যমকে জানান, চুরির অপবাদ দিয়ে এভাবে নির্যাতন করা অন্যায় ও অমানবিক। তিনি বলেন পুলিশ সুপারের নির্দেশে এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ৪ জনের নামে মামলা হয়েছে, যার নং ০৩। প্রধান অভিযুক্ত তুহিনসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হরিণাকুন্ডু থানার এসআই গোলাম সারোয়ার জানান, এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছি। আশা করা যায় সব আসামী গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।



 

Show all comments
  • Abdullah All Mamun ৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১০:৩৮ পিএম says : 0
    দলীয় কোন্দল-টুন্দল বুঝি না । ওরা যা করেছে পুরাটাই অমানবিক এবং পাশবিক নির্যাতন । অতএবঃ এর উপযুক্ত শাস্তি তথা রিমান্ডে নেওয়া হোক ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্যাতন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ