Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুস্তাফিজের হাফ সেঞ্চুরি

প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : আইপিএলের চলমান আসরে বিস্ময় বোলিংয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পেয়েছিলেন যে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে (৪-১-৯-২), সেই কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে ফিরতি ম্যাচে পেয়েই ফিরেছেন ফর্মে মুস্তাফিজুর (৪-০-৩২-১)। ফিফটির দ্বারপ্রান্তে এসে পর পর ২ ম্যাচে হয়েছেন বঞ্চিত। পুনে সুপার জায়ান্টস, দিল্লী ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে টানা দু’ম্যাচ উইকেট শূন্য কাটানোর কষ্টটা লাঘব হয়েছে তার। ২ ম্যাচ উইকেট শূন্য থাকার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়ে টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন মুস্তাফিজুর।
তিন দিন আগে দিল্লী ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে নিজেকে চেনাতে পারেননি মুস্তাফিজুর সেভাবে। ৪-০-৩৯-০, এমন বোলিংয়ে ভক্তদের করেছিলেন হতাশ এই কাটার মাস্টার। মোহালীতে ব্যাটিং ফ্রেন্ডলী উইকেটে সেই মুস্তাফিজই ফিরে পেয়েছেন ছন্দ। দ্বিতীয় ডেলিভারীতেই কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের ওপেনার মুরালী বিজয়কে করেছেন হতভম্ব। শ্লোয়ার ডেলিভারীতে ফ্লিক করতে যেয়ে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন পাঞ্জাব ওপেনার! এই উইকেটে টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ হয়েছে ২০ বছর বয়সী ছেলেটির। গত বছরের ২৪ এপ্রিল শুরু তার টি-২০ ক্যারিয়ার। পাকিস্তান টপ অর্ডার মোহাম্মদ হাফিজকে দিয়ে শুরু তার শিকার, মুরালী বিজয়কে শিকারের মধ্য দিয়ে মাইলস্টোনে রেখেছেন পা। এক বছর ২১ দিনের মধ্যেই সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে উইকেট শিকারের হাফ সেঞ্চুরি করেছেন পূর্ণ সাতক্ষীরার ছেলেটি।
মোহালীর আই এস ব্রিন্দা স্টেডিয়ামে এদিন প্রথম স্পেলটি ছিল এক কথায় অসাধারণ (১-০-৪-১)। দলের হয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু দিয়েছেন তিনিই। ওই এক ওভারের স্পেলে তিন তিনটি ডট। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের রানের গতি কমিয়ে দিতে ১৫তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেল শুরু, ওই ওভারটিতেও প্রশংসিত হয়েছে মুস্তাফিজুরের বোলিং (৬ রান খরচা)। তবে ১৭তম ওভারে খরচাটা হয়েছে একটু বেশি (১৪ রান), হাশিম আমলা ওই ওভারে তিন তিনটি বাউন্ডারি মেরেছেন। যার মধ্যে ২টিতে অভিযুক্ত করা যাবে না মুস্তাফিজুরকে। প্রথমটিকে প্যাডেল শটে ফাইন লেগ দিয়ে, শেষ বলটি ইয়র্কার ডেলিভারী দিয়েও হাশিম আমলার প্রতি আক্রমন, এবং সেই একই পজিশনে বাউন্ডারি! ১৯তম ওভারে সানরাইজার্স অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন, খরচা তার ওই ওভারে ৮ রান। সানরাইজার্সের ওভারপ্রতি খরচা যেখানে ৮.৯৫, সেখানে মুস্তাফিজুরের খরচা ৮.০০। ডট বলের সংখ্যায় ভুবনেশ্বরের (১০টি ডট) পর মুস্তাফিজুর (৯টি ডট)।
আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে ১৩ ম্যাচে ২২ উইকেট, সেখানে টুয়েন্টি টুয়েন্টিতে বিপিএলে ১০ ম্যাচে ১৪ এবং আইপিএলে ১২ ম্যাচে ১৪ উইকেট! টুয়েন্টি ২০ ক্রিকেটে ৩৫ ম্যাচে ৫০ উইকেটÑ একেই বলে ধারাবাহিকতা। বছরটি দারুণ কাটছে এই বাঁ হাতি কাটার মাস্টারের। সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে এ বছর সর্বাধিক উইকেট শিকারে ক্যারিবিয়ান আন্দ্রে রাসেল (৩৪ ম্যাচে ৪৯ উইকেট) এবং ভারতের বুমরাহ’র (৩৭ ম্যাচে ৪৪ উইকেট) পেছনে মুস্তাফিজুর (২০ ম্যাচে ৩০ উইকেট)। এ বছরে পেছনে ফেলেছেন সাকিবকে (৩১ ম্যাচে ২৭ উইকেট)। বছরে সফল বোলারদের মধ্যে উইকেটের এভারেজ এবং ওভারপ্রতি খরচায় সবচেয়ে কম মুস্তাফিজুরই। আন্দ্রে রাসেলের উইকেট পিছু খরচা ১৯.৫৩, বুমরাহ’র ২১.৬৮Ñ সেখানে মুস্তাফিজুরের ১৬.৫০! ও ভারপ্রতি রান খরচায়ও সেরাদের মধ্যে সবচেয়ে মিতব্যয়ী মুস্তাফিজুর। ওভারপ্রতি ৮.০১ রান খরচা আন্দ্রে রাসেলের, বুমরাহ’র ৬.৯৬, মুস্তাফিজুরের সেখানে ৬.৪৪!
আইপিএল সর্বাধিক উইকেট শিকারের লড়াইয়ে এখনো আছেন মুস্তাফিজুর (১২ ম্যাচে ১৪ উইকেট)। তার উপরে এখনো আছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ম্যাকক্লিনগান (১২ ম্যাচে ১৭ উইকেট), সানরাইজার্স হায়দারাবাদের ভুবনেশ্বর কুমার (১২ ম্যাচে ১৬ উইকেট), কোলকাতা নাইট রাইডার্সের আন্দ্রে রাসেল (১১ ম্যাচে ১৫ উইকেট)। তবে আইপিএলের চলমান আসরে অন্তত: ১০ উইকেট শিকার করেছেন যারা, ওভারপ্রতি রান খরচায় মুস্তাফিজুর সেই তালিকায় সবচেয়ে মিতব্যয়ী (৬.৬৬ রান)।
মোহালীতে মুস্তাফিজুরের মাইলফলক স্পর্শ করার দিনে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের ওপেনার হাশিম আমলা ছড়িয়েছেন আলো। তবে হতভাগ্য আমলা। নার্ভাস নাইনটিজে পড়েছেন কাঁটা। টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এ বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কেপটাউনে ৯৭ রানে থেমেছিলেন তিনি। বল হাতে না থাকায় সেঞ্চুরি না পাওয়ার কস্টটা পেতে হয়নি ওই ম্যাচে তাকে। তবে গতকাল টুয়েন্টি-২০ ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছেন হেলায় হেলায়। হাতে ছিল তিন বল, ঝুঁকিটা নিতে যেয়ে ভুবনেশ্বরের বলে লং অফে ক্যাচ দিয়েছেন সেঞ্চুরির ঠিক ৪ রান আগে (৫৬ বলে ৯৬)! কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের ১৭৯/৪’র জবাব দিতে এসে আইপিএলের চলমান আসরে ৬ষ্ঠ ফিফটি উদযাপন করেছেন সানরাইজার্স অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার (৪১ বলে ৫২)। তার এই ইনিংসেই ২ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে জিতে এককভাবে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে উঠে এলো সানরাইজার্স হায়দারাবাদ (১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট)। সেই সাথে প্লে অফও নিশ্চিত হলো মুস্তাফিজের দলের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুস্তাফিজের হাফ সেঞ্চুরি
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ