Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ওসমানীনগরে যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা

মো. আবুল কালাম আজাদ, বালাগঞ্জ (সিলেট) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম


সিলেটের ওসমানীনগরে হাটে বাজারে যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান গড়ে উঠেছে। দোকানগুলোতে অন্যান্য মালামালের সাথে এলোমেলোভাবে রাখা হয়েছে গ্যাস সিলিন্ডার। অবাধে চলছে ফায়ার লাইসেন্সবিহীন এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের খুচরা ব্যবসা। এ ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা নেই অনেক ব্যবসায়ীদের। যার ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। প্রশাসনের কোন ধরনের তদারকি না থাকায় লাইসেসবিহীন গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা বাড়ছে। ওসমানীনগরে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসার কোন নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রায় বাজারে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা চলছে। সরকারি অনুমোদন, লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই চলছে ব্যবসা। ট্রাকযোগে সিলিন্ডার পৌঁছে দোকানে। ট্রাক থেকে ছুড়ে ফেলে গ্যাস সিলিন্ডার নামানো হয়। এতে যে কোন সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
উপজেলার ব্যবসায়িক প্রাণ কেন্দ্র গোয়ালা বাজারসহ ৮টি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি বাজারেই বর্তমানে গ্যাস সিলিন্ডার কম-বেশি বিক্রি করা হচ্ছে। ১০টির কম সিলিন্ডার দোকানে থাকলে লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে না এমন আইনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে অধিকাংশ এলপি গ্যাস ব্যবসায়ী লাইসেন্স না নিয়ে অবৈধভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ৮টি সিলিন্ডার মজুদ করতে হলেও অধিকতর নিরাপত্তার জন্য অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক হলেও তা মানছেন না খুচরা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীরা। মাঝে মধ্যে অন্যান্য ব্যবসার ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চোখে পড়লেও গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যাপারে কোন অভিযান চোখে পড়েনি বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
উপজেলার গোয়ালাবাজার, তাজপুর, শেরপুর, দয়ামীর, কুরুয়া, কদমতলা, মাদার বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার দোকানে দেখা যায় অবৈধ গ্যাস ব্যবসার চিত্র। সংশ্লিষ্টদের তদারকির অভাবে ঝুুঁকিপূর্ণ ব্যবসা জেনেও তারা সরকার অনুমোদিত লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই ব্যবসা করছে। দোকানের ভিতরে বেশি পরিমাণ মজুদ রেখে বিক্রয়ের নয়া কৌশল হিসেবে দোকানের সামনে ফুটপাথের ধারে সিলিন্ডার রেখে বিক্রি করছে দেদারছে। রাস্তা দিয়ে চলাচলরত জনসাধারণেরও মারাত্মক ঝুঁকি পোহাতে হয়।
জানা যায়, বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪ এর দ্য এলপি গ্যাস রুলস ২০০৪ এর ৬৯ ধারার ২ বিধিতে লাইসেন্স ব্যতীত কোন ক্ষেত্রে এলপিজি গ্যাস মজুদ করা যাবে তা উল্লেখ আছে। একই বিধিতে ৭১নং ধারায় বলা আছে, আগুন নিভানোর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি রাখতে হবে। আইন অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর দুই বছর এবং অনধিক ৫ বছরের জেল এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে এবং অর্থ অনাদায়ী থাকলে অতিরিক্ত আরো ছয় মাস পর্যন্ত কারাদÐের বিধান রয়েছে। সেই মোতাবেক ৮টি গ্যাসভর্তি সিলিন্ডার মজুদের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই। আইনের এই ফাক ফোকরটিই কাজে লাগাচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
সিলেট বিভাগ এলপি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন এসোসিয়েশনের প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল হামিদ বলেন, ওসমানীনগরে ব্যাঙের ছাতার মত গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা গড়ে উঠেছে। অবৈধভাবে যারা ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ওসমানীনগরের তাজপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার রাজা মিয়া বলেন, এভাবে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা খুবই ঝুঁকিপূর্ন। ওসমানীনগরের হাট বাজারে ব্যবসায়ীদের কতটি লাইসেন্স আছে তা জানা নেই। ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. অনিছুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্যাস সিলিন্ডার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ