নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আইএসএসএফ ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিং আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসরের খেলা শুরু হয়েছে। গতকাল সকালে টঙ্গীস্থ শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়াম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো: জাহিদ আহসান রাসেল, এম.পি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক সলিডারিটি স্পোর্টস ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হামাদ কালকাবা মালবোম, মহাসচিব মোহাম্মদ সালেহ আল গার্নাস, বিশ্ব আরচ্যারির মহাসচিব টম ডিলেন, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা, বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশনের সভাপতি লে. জেনারেল (অব.) মইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীবউদ্দিন আহমেদ চপল।
সলিডারিটি আরচ্যারির প্রথম ও দ্বিতীয় আসর ঢাকার মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে বসলেও এবারের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে। এবারের আসরে খেলছেন ২৬ দেশের প্রায় দেড় শতাধিক তীরন্দাজ। তাদেরই পদচারনায় কাল মুখরিত ছিল টঙ্গির স্টেডিয়ামটি। আগামী মঙ্গলবার ভাঙবে এই মিলন মেলা। সর্বাধিক দেশের অংশগ্রহণে বাংলাদেশে এটাই প্রথম কোনো আরচ্যারি প্রতিযোগিতা। ২০১৭ সালে এই প্রতিযোগিতার প্রথম আসরে ১৪ এবং গত বছর দ্বিতীয় আসরে ১৮টি দেশ অংশ নিয়েছিল।
প্রতিযোগিতায় রিকার্ভ ও কম্পাউন্ড বিভাগে পুরুষ ও মহিলা একক, দলীয় ও মিশ্র দলের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। দু’বিভাগে পাঁচটি করে দশটি ইভেন্টে ৩০টি স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। রিকার্ভ বিভাগ ৭০ মিটার ও কম্পাউন্ড বিভাগের খেলা ৫০ মিটারে হবে। চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধনী দিন কাল রিকার্ভ মহিলা ও কম্পাউন্ড পুরুষ কোয়ালিফিকেশন রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয়।
আইএসএসএফ ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি আরচ্যারিতে মূলত বিশ্বের মুসলমান দেশগুলোই অংশ নিয়ে থাকে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে এবং খেলাটি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ভারত, জার্মানী, নেপাল, থাইল্যান্ড ও চাইনিজ তাইপের মতো অমুসলিম প্রধান দেশকেও। সেই হিসেবে এবার প্রথম এমন আসরে খেলতে এসেছেন জার্মানীর তিন আরচ্যার। দশটি ইভেন্টের মধ্যে এই তিনজন খেলবেন কম্পাউন্ডের তিনটি ইভেন্টে। এগুলো হেলা- কম্পাউন্ড ব্যক্তিগত পুরুষ ও নারী এবং মিশ্র দলগতে। জার্মানী দলের নারী আরচ্যার ক্রিস্টিনা বার্গার বিশ্ব আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপের কম্পাউন্ড বিভাগে ব্যগিত ও মিশ্র দলগতে রুপা জিতেছিলেন। তাই আসরের বড় তারকা তিনিই। মিশ্র দলগতে রুপা জেতা ওই দলের সতীর্থ ট্রাইসেলও বাংলাদেশে এসেছেন ক্রিস্টিনার সঙ্গে। কিন্তু অবাক হলেও সত্যি যে, বিশ্ব আরচ্যারিতে রুপা জিতলেও এখানে তেমন সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নেই তাদের! ক্রিস্টিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের কোচ ফ্রেডরিক মার্টিন আমাদের দেশের নাগরিক। তিনিই আমাদেরকে এই টুর্নামেন্টের কথা বলেছিলেন। জার্মানিতে এখনো আরচ্যারির মৌসুম শুরু হয়নি। তাই এখানে নিজেদের প্রস্তুত করতে এসেছি। ইরাক, চাইনিজ তাইপে, ভারত ও বাংলাদেশের আরচ্যাররাও যথেষ্ট ভালো। পদকের ব্যাপারে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না।’
টঙ্গীর আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামের প্রশংসা করলেন আরেক জার্মান আরচ্যার লাউভি। তিনি বলেন, ‘এই স্টেডিয়ামটি বেশ সুন্দর। আরচ্যারি খেলার জন্য বেশ আদর্শ এটি।’ তবে ট্রাইসেল বাংলাদেশের আবহাওয়া নিয়ে কিছুটা চিন্তিত। তার কথায়,‘জার্মানিতে এখন ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। আর এখানে অনেক গরম। এই সময়ে জার্মানীতে আমরা ইনডোরেই খেলে থাকি। আউটডোরে নয়। তারপরও বাংলাদেশে সময়ের সঙ্গে আমরা মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করব।’
বাংলাদেশের অন্যতম আরচ্যার রোমান সানা কিছু দিন জার্মানিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাই সেখানকার আরচ্যারদের খুব কাছ থেকে চেনা তার। এবারের আসর বেশ প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ হবে বলেই মনে করছেন রোমান। তিনি বলেন, ‘ভারত, চাইনিজ তাইপে থেকে রিকার্ভ বিভাগে বেশ ভালো খেলোয়াড় এসেছে। কম্পাউন্ডে ইরাক, জার্মানি তো সেরাই। ভালো মানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে পদকের লড়াই আমাদের জন্য অনেক শিক্ষণীয়।’
বাংলাদেশের জার্মান কোচ ফ্রেডরিক মার্টিন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রত্যাশাই করছেন, ‘গত দু’আসরের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। এবারো আমাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আমার আরচ্যারদের সেই প্রতিভা ও সামর্থ্য রয়েছে। আমরা যথেষ্ট অনুশীলনও করেছি। তাই আশা করছি আমরাই সেরা হবো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।