মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বনাঞ্চলে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ে হুমকিতে পড়েছে লাখো ভারতীয় আদিবাসী। আদিবাসী ও বনবাসীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের দেয়া বুধবারের রায়টি ‘একটি অকল্পনীয় বিপর্যয়’ এবং ‘বন সংরক্ষণের নামে নেয়া বৃহত্তম উচ্ছেদ অভিযান’। ২০০৬ সালের বন অধিকার আইন বাতিলের দাবিতে বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। ওই আইনটির ফলে পূর্বপুরুষদের বসবাস করা বনসহ বিভিন্ন সংরক্ষিত এলাকায় বসবাসের সুযোগ পায় বনবাসী আদিবাসী। বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণকারী সংগঠনগুলোর অভিযোগ ১৭টি রাজ্যে বসবাস করা ‘অধিবাসী’রা অবৈধভাবে সংরক্ষিত এলাকায় অনুপ্রবেশ করেছে, ফলে বন্যপ্রাণী ও বনাঞ্চল সংরক্ষণ প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে। সংগঠনগুলোর দাবি, আইনের আওতায় ওই মানুষগুলো যদি তাদের বসবাসের অধিকার প্রমাণ করতে পারে, তাহলে সেখানে বাস করতে পারবে, আর না পারলে রাজ্য সরকার কর্তৃক তাদের উচ্ছেদ করতে হবে। ১৭টি রাজ্য সরকারকে দেয়া নির্দেশনায় সুপ্রিম কোর্ট বলছেন, বিশেষ কমিটির কাছে উত্থাপিত ১১ লাখ দাবি ভুয়া প্রমাণ হওয়ায় প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, যাদেরকে উচ্ছেদ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরিবারের হিসাব আমলে নিলে ১০ লাখ দাবির পেছনে অন্তত ৫০ থেকে ৭০ লাখ মানুষ থাকতে পারে, যাদেরকে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে উচ্ছেদ করা হতে পারে। সার্ভাইভাল ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক স্টিফেন কোরি বলেন, ‘আদালতের এ রায়টি ভারতের লাখ লাখ আদিবাসীর জন্য মৃত্যুদণ্ড হিসেবে হাজির হয়েছে। এর ফলে ব্যাপক হারে দুর্ভোগ, দারিদ্র্য, জরা, মৃত্যু ও মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে। এতে বন সংরক্ষণের কিছুই হবে না, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম থেকেই করে আসছে আদিবাসীরা। ভারতের সবচেয়ে দরিদ্র, বঞ্চিত ও প্রান্তিক এ জনগোষ্ঠী নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বলছে, ভূমির মালিকানা প্রমাণের জন্য মূল্যায়ন কমিটির কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা বুঝতেই সক্ষম নয় এ জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ সদস্য। অন্যদিকে এ দাবি প্রত্যাখ্যান করছে বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। তারা বলছে, ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠায় আবেদন করা ১২ লাখ দাবিই গৃহীত হয়েছে। এক্ষেত্রে কীভাবে নিজেদের অধিকার দাবি করতে হয়, সে বিষয়ে তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃত সচেতনতা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণকারী গ্রুপগুলো বলছে, প্রাণীদের আবাস্থলে মানুষের অনুপ্রবেশের ফলে ব্যাপক হারে বনভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে যেখানে বন্যপ্রাণীদের জন্য সংরক্ষিত এলাকায় পাহাড়ি জনগণ অবৈধভাবে আবাস গেড়েছে। কনজারভেশন অ্যাকশন ট্রাস্টের প্রধান ডেবি গোয়েনকা বলেন, আদালতের রায়ের বিপক্ষে মত দেয়া মানবাধিকার কর্মী ও সংগঠনগুলোর অবস্থান দেখে মনে হচ্ছে, তারা ধারণা করছে ভারতে কোনো বনাঞ্চলের প্রয়োজন নেই। তিনি আরো প্রশ্ন রাখেন, বনাঞ্চল ছাড়া কোনো দেশ কি টিকে থাকতে পারে? কেউ যদি মনে করে বনাঞ্চল ছাড়া, পানি ছাড়া ভারত টিকে থাকতে পারবে, তাহলে এমনটাই হোক। বিতর্কের অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে পাঠানো এক চিঠিতে কমিউনিস্ট পার্টির নেতা বৃন্দা কারাত বলেন, ‘ঐতিহ্যগতভাবে বনাঞ্চলে বসবাস করা জনগোষ্ঠীর জন্য এটি ভয়ানক অন্যায্য রায়। যদি তাদের সুরক্ষায় অবিলম্বে কোনো অধ্যাদেশ জারি করা না হয়, তাহলে এটি কার্যত যুদ্ধ ঘোষণার মতো হবে।’ দ্য গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।