Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গেইলের ম্যাচ ছিনিয়ে নিলো ইংল্যান্ড

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

দলে ফিরেই তুললেন ঝড়, ছুটলো ছক্কার বৃষ্টি। তাণ্ডব চালিয়ে সেঞ্চুরি হাঁকালেন ক্রিস গেইল, বাকিরাও হাঁটল সেই পথে। তাতে এক ইনিংসে ২৩ ছক্কার বিশ্বরেকর্ড গড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গেইলও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছক্কা মারায় ছাড়িয়ে গেলেন শহিদ আফ্রিদিকে। বার্বাডোজে দল পেল ৩৬০ রানের পাহাড়। অথচ সেই পাহাড়কেও তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন জেসন রয় আর জো রুট। তাদের জোড়া সেঞ্চুরিতে দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছে ইংলিশরা।

ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে আগে ব্যাট করে গেইলের এক ডজন ছক্কায় করা সেঞ্চুরিতে উইন্ডিজ করে ৩৬০ রান। রুট-রয়ের সেঞ্চুরিতে ৮ বল আগেই ওই রান পেরিয়ে যায় ইংল্যান্ড। পাঁচ ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে যায় ১-০ তে। এ নিয়ে নয় ম্যাচে তিনশ বা তার বেশি রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতল ইংল্যান্ড। ২০১৫ সালে নটিংহ্যামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাড়ে তিনশ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয় ছিল তাদের আগের রেকর্ড। ওয়ানডেতে এর চেয়ে বড় লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের কীর্তি আছে কেবল দুটি। সেই সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফল হওয়া সবশেষ ১৮ ওয়ানডেতে ১৭তম জয় পেল ইংল্যান্ড। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ২০১৪ সালের পর কোনো ওয়ানডেতে হারেনি তারা।
বাংলাদেশের বিপক্ষে গত জুলাইয়ে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে আফ্রিদির (৪৭৬) পাশে বসেছিলেন গেইল। গতকাল ছাপিয়ে গেলেন সেটিকে। তার ব্যাটেই দলীয় সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডের টালিতেই শিখরে উঠে ক্যারিবিয়ারনরা। দিনের শুরুটা বেশ মন্থর করে গেইল। ক্রিজে গিয়ে ধুঁকছিলেন তিনি, ২৪ বল খেলে ৯ রানে উঠিয়েছিলেন ক্যাচও। রয় সেই ক্যাচ ছাড়ার পরও খোলস থেকে বেরুতে দেরি হয় তার। আরেক ওপেনার জন কাম্পবেল ২৮ বলে ৩০ করে ফেরার পর শেই হোপ এসেও চনমনে খেলতে থাকেন। জড়তা ভাঙতে বেশ সময় লেগে যায় গেইলের কিন্তু তাল পাওয়ার পর দ্রুতই গুছিয়ে ফেলেন রান বলের ব্যবধান।
দ্বিতীয় উইকেটে গেইলের সঙ্গে ১৩১ রানের জুটিতে ৬৫ করে ফেরেন হোপ। প্রথম ৪৯ বলে ২০ রান করা গেইল ঠিকই ১০০ বলে পৌঁছান সেঞ্চুরিতে। সেঞ্চুরির পরও দেখেশুনে রান বাড়িয়ে দলকে নিয়েছেন চূড়ায়। আফ্রিদির ক্যারিয়ার থেমেছে ৫০৮ ইনিংসে। ৫১৪ ইনিংসে গেইল তাকে ছাড়িয়ে এখন নিজেকে নিয়ে যান ৪৮৮ ছক্কায়। ওয়ানডেতে অবশ্যই আফ্রিদিই এখনো সবার উপরে। তিনি ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ছক্কা মেরেছেন ৩৫১টি। গেইলের ২৮৭টি। টেস্টে আফ্রিদি মেরেছেন ৫২ আর টি-টোয়েন্টিতে মেরেছেন ৭৩টি। গেইলের টেস্টে আছে ৯৮ ছক্কা আর টি-টোয়েন্টিতে ১০৩টি।
ক্রিজে গিয়ে ছক্কা হাঁকান হেটমায়ার, ব্রাভো, ব্র্যাথওয়েট, নার্সরা সবাই। তাতে উইন্ডিজ পেয়ে যায় রানের পাহাড়। ওয়ানডেতে এক ইনিংসে ২৩ ছক্কার রেকর্ড। ভেঙে যায় ২০১৪ সালে এই উইন্ডিজের বিপক্ষেই নিউজিল্যান্ডের গরা ২১ ছক্কার রেকর্ড।
তবে এত বিশাল রানও যে নিরাপদ নয়! ব্রিজটাউনের উইকেটে নেমে তাণ্ডব চালিয়ে সেটা দেখান রয় আর রুট। শুরু থেকে বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া রয় ৩০ বলে স্পর্শ করেন পঞ্চাশ। বিস্ফোরক ওপেনার সেঞ্চুরিতে পৌঁছান ৬৫ বলে। শেষ পর্যন্ত ৮৫ বলে ১৫ চার ও তিন ছক্কায় ফিরেন ১২৩ রানের দাপুটে এক ইনিংস খেলে। টেস্ট অধিনায়কের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় ৫১ বলে ৩ ছক্কা ও ৪ চারে ৬৫ রান করে ফেরেন মর্গ্যান।
দলকে সমতায় নিয়ে ফিরেন ক্যারিবিয়ানে স্বাগতিকদের বিপক্ষে তৃতীয় সেঞ্চুরি পাওয়া রুট। ৯৭ বলে খেলা তার ১০২ রানের ইনিংস গড়া ৯টি চারে। ক্যারিয়ারের চতুর্দশ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পথে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছান এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। চার হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেন জস বাটলার। ২০ রানে অপরাজিত থাকেন স্টোকস।
আগামী শুক্রবার একই ভেন্যুতে হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ৫০ ওভারে ৩৬০/৮ (গেইল ১৩৫, ক্যাম্পবেল ৩০, হোপ ৬৪, হেটমায়ার ২০, পুরান ০, ব্রাভো ৪০, হোল্ডার ১৬, ব্র্যাথওয়েট ৩, নার্স ২৫*, বিশু ৯*; ওকস ২/৫৯, উড ০/৪৯, মইন ০/৮৫, প্লানকেট ০/৫৪, স্টোকস ৩/৩৭, রশিদ ৩/৭৪)।
ইংল্যান্ড : ৪৮.৪ ওভারে ৩৬৪/৪ (রয় ১২৩, বেয়ারস্টো ৩৪, রুট ১০২, মর্গ্যান ৬৫, স্টোকস ২০*, বাটলার ৪*; বিশু ১/৭৮, টমাস ১/৭২, হোল্ডার ২/৬৩, ব্র্যাথওয়েট ০/৬৬, নার্স ০/৬৯, ক্যাম্পবেল ০/১৩)।
ফল : ৬ উইকেটে জয়ী ইংল্যান্ড।
ম্যাচ সেরা : জেসন রয় (ইংল্যান্ড)।
সিরিজ : ৫ ম্যাচে ১-০তে এগিয়ে ইংল্যান্ড।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গেইলের ম্যাচ ছিনিয়ে নিলো ইংল্যান্ড
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ