Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে মেয়র আরিফের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, ঠিকাদারের আত্মাহুতির হুমকি

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৪:২৫ পিএম

সিলেটের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে আত্মাহুতির হুমকি দিয়ে শুয়ে আছেন এক ব্যক্তি। নাম তার সঞ্জয় রায়। সিলেট সিটি করপোরেশনের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সম্পাতপা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী তিনি। তার আত্মাহুতির জন্য দায়ী করেছেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে।

আত্মাহুতির কারণ হিসেবে আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি করে তাঁর দেড় কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগ এনেছেন এই ব্যবসায়ী। একই অভিযোগে জেলা প্রশাসক ও দুর্নীতি দমন কমিশনে স্মারকলিপি দিয়েছেন সঞ্জয়। মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ‘প্রদীপ্ত সিলেটবাসী’ এর ব্যানারে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে শরীরে কাফনের কাপড় মুড়িয়ে প্রতীকি আত্মাহুতি দেন সঞ্জয় রায়।

ঘটনা ২০১৪ সালের। সিলেট সিটি করপোরেশনের নগর ভবন নির্মাণের কাজ পায় মাহবুব ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড নামের ঢাকার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ষোল কোটি আট লক্ষ টাকা মূল্যের এই কাজের কার্যাদেশও পায় মাহবুব ব্রার্দাস। ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্স কাজটি নিজে না করে সঞ্জয় রায়ের সম্পাতপা এন্টারপ্রাইজের সাথে চুক্তি করে।

সঞ্জয় রায় জানান, যথাসময়ে কাজ শুরুর পর নগর ভবন থেকে বিভিন্ন সময় মাহবুব ব্রাদার্স প্রাঃ লিঃ এর নামে বিল ইস্যু করা হত এবং মাহাবুব ব্রাদার্স থেকে তিনি নিয়মিত চেক গ্রহণ করে নিজের মনোনীত একাউন্টে লেনদেন করতেন। মোট কাজের আনুমানিক ৫ শতাংশ কাজ বাকি থাকাবস্থায় সঞ্জয় রায়ের লিভার সিরোসিস রোগ ধরা পড়লে তিনি ভারতে চিকিৎসা নিতে চলে যান। সেসময় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মূল ঠিকাদার মাহবুব ব্রাদার্সকে জিম্মি করে দুই কোটি ছেষট্টি লক্ষ টাকার চুড়ান্ত বিল আত্মসাৎ করেন।

সঞ্জয় রায় আরো বলেন, এক পর্যায়ে ২ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর কাজের বিপরীতে সিটি করপোরেশনে রক্ষিত জামানতের এক কোটি আটান্ন লক্ষ টাকাও মেয়র আরিফুল হক আত্মসাৎ করেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেন রাজধানীর হোটেল ক্যাপিটালের পরিচালক তোফায়েল খান। তার ব্যাংক একাউন্টেই এই টাকার লেনদেন হয়। কিছুদিন পর সঞ্জয় এ ঘটনা জানতে পেরে আরিফুল হকের কাছে গিয়ে টাকা দাবি করলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন আরিফ। এসময় মেয়র তাকে নিজ বাসায় আটকে রেখে তার কাছ থেকে একটি চেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এই চেকে ইচ্ছেমতো টাকার অংক বসিয়ে তাকে মামলার আসামি করার হুমকিও দেন মেয়র।

সঞ্জয় রায় বলেন, আমি প্রাণের ভয়ে এতোদিন এসব কাউকে বলিনি। পরে পরিবার পরিজনের পরামর্শে আমি আইনের আশ্রয়ের জন্য পুলিশ স্টেশন, জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি এবং দুদকে জানানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। প্রাপ্য টাকা শীঘ্রই ফেরত না পেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে প্রকাশ্যে আত্মাহুতি দেবার ঘোষণা দেন সঞ্জয়। এসময় তিনি আরিফুল হকের সকল দুর্নীতির তদন্তও দাবি করেন।

তবে সঞ্জয়ের এমন অভিযোগের ব্যাপারে জানতে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও মেয়র আরিফুল হককে পাওয়া যায়নি। এছাড়া নগর ভবন নির্মাণ কাজের মূল ঠিকাদার মাহবুব ব্রাদার্সের পরিচালক শেখ মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যক্তিগত মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেয়র আরিফ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ