মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পুলওয়ামার হামলার পরে পদক্ষেপ নিতে ভারতের সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু এ বার কোন পথে এগোনো হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সরকারের ভেতরেই। পূর্ণ স্বাধীনতা বলতে কী বোঝানো হয়েছে সে বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নেই শীর্ষ সেনাবাহিনীর। এদিকে গতকাল রোববার জম্মু-কাশ্মীরের পাঁচ স্বাধীনতাকামী নেতার নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত জিনিসের উপর আবগারি শুল্ক বাড়িয়েছে ভারত।
ভারত সরকার এই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করছে। পাকিস্তানকে কীভাবে জবাব দেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে দেশ জুড়ে। সেই সাথে রয়েছে জনমতের চাপ আর রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা। এজন্য প্রশ্ন উঠেছে যে, সেনাবাহিনীর কাঁধে প্রত্যাঘাতের দায়িত্ব তুলে দিয়ে আসলে দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে না তো বিজেপি সরকার? কারণ লোকসভা ভোটের আগে পুলওয়ামার বদলা নেওয়ার প্রশ্নে ক্রমশ চাপ বাড়ছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে। কিন্তু হাতে বিকল্প কম। কারণ, পুলওয়ামা হামলার আগেই সীমান্তে একপ্রস্ত সেনা মোতায়েন করে ফেলেছে ইসলামাবাদ। ফলে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করলে ভারতীয় সেনার বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয় পন্থা হল, নিয়ন্ত্রিত বিমান হামলা। কিন্তু তাতেও পাকিস্তানের দিক থেকে প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। তৃতীয় বিকল্প হল গোলন্দাজ বাহিনীর হামলা। সে ক্ষেত্রেও এপারে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যায়। তাই লোকসভা ভোটের আগে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় শেষ পর্যন্ত সরকার বড় ধাঁচের অভিযান থেকে পিছিয়ে আসতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। এ দিকে প্রত্যাঘাতের দাবি প্রায় সর্বস্তরে। করলে ভোটের বাক্সে ফায়দা যে হবে তা ভালই জানে শাসক শিবির। তাই কোন পথে আক্রমণ করলে ভারতেরই লাভ হবে তা ঠিক করতে এখন রণকৌশল তৈরিতে ব্যস্ত নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। বিকল্প হিসেবে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের কিছুটা এলাকা নিজেদের দখলে নেওয়ার প্রস্তাব নিয়েও ভাবনাচিন্তা রয়েছে সরকারের অন্দরমহলে।
রোববার এক প্রশ্নের জবাবে বিমানবাহিনী প্রধান বি এস ধানোয়া বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতৃত্ব যে কাজ দেবেন তা করতে আমরা সব সময়েই তৈরি।’ সরকারের একাংশের দাবি, লক্ষ্য স্থির করার দায়িত্ব যে রাজনৈতিক নেতৃত্বেরই তা আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়েছেন ধানোয়া।
গতকাল রোববার দিল্লিতে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গৌবা, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ প্রধান অনিল ধাসমানা, আই বি-র অতিরিক্ত পরিচালক অরবিন্দ কুমার। ওই বৈঠকের পরে রাজনাথের সঙ্গে দেখা করেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র প্রধান ওয়াই সি মোদি। কাশ্মীরে তদন্ত চালিয়ে এনআইএ কী প্রমাণ পেয়েছেন তা রাজনাথকে জানান তিনি।
পূর্ণ স্বাধীনতা বলতে ঠিক কী তা নিয়েও সংশয় রয়েছে আমলাদের মধ্যেও। আধাসেনার এক কর্তার কথায়, ‘এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। এ নিয়ে লিখিত নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত পদক্ষেপ করা কতটা উচিত তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।’
এদিকে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পুলওয়ামা হামলার দু’দিন আগেই শ্রীনগরে গিয়ে স্বাধীনতাকামী নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। গতকাল রোববার সন্ধ্যা থেকেই পাঁচ স্বাধীনতাকামী নেতার জন্য বরাদ্দ নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়। তাদের জন্য বরাদ্দ গাড়িও নিয়ে নেওয়া হবে। এই স্বাধীনতাকামী নেতাদের আর কে কে কী ধরনের নিরাপত্তা এবং অন্যান্য সুবিধা পান, তা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। ফলে তালিকায় আরও অনেকেই যুক্ত হতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। নিরাপত্তা তুলে নেওয়া পাঁচ স্বাধীনতাকামী নেতাদের মধ্যে অন্যতম, মিরওয়াইজ উমর ফারুক। এছাড়াও তালিকায় রয়েছেন আবদুল গনি ভাট, বিলাল লোন, হাসিম কুরেশি এবং সাবির শাহ। কিন্তু তালিকাটা যে এখানেই শেষ নয়, তার ইঙ্গিত মিলেছে ওই নির্দেশিকাতেই। বলা হয়েছে, আরও কোনও স্বাধীনতাকামী নেতা এই ধরনের নিরাপত্তা পান কিনা, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। তবে তালিকায় এখন পর্যন্ত অবশ্য পাকিস্তানপন্থী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির নাম নেই।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গি হানায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৯। সূত্র: নিউজ নেশন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।