গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : আবাসিক এলাকা থেকে হোটেল, গেস্টহাউস ও রেস্তোরাঁ তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমান অবস্থানে থেকেই হোটেল, গেস্ট হাউসের জন্য সুনির্দিষ্ট একটি নীতিমালা করার দাবি জানান তারা। গতকাল শনিবার দুপুরে গুলশানের ইমানুয়েলস ব্যাঙ্কোয়েট হলে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ফেডারেশন অব হোটেল, গেস্ট হাউস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এতে হোটেল ব্যবসায়ীরা আবাসিক এলাকায় হোটেল, গেস্টহাউস ও রেস্তোরাঁ রাখার পক্ষে নিজেদের যুক্তি তুলে ধরে নীতিমালা করার দাবি জানান।
এ সময় তারা গুলশান, বনানী, বারিধারা, ধানমন্ডি ও উত্তরার আবাসিক এলাকা থেকে হোটেল রেস্টুরেন্ট, গেস্ট হাউজ উঠিয়ে দেয়ার সরকারি ঘোষণার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সেøাগানে বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন একটি কুচক্রী মহল গুলশান, বনানী বারিধারা, উত্তরা, ধানমন্ডি থেকে হোটেল রেস্টুরেন্ট উঠিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সরকারকে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহŸান জানান। অন্যথায় হাজার হাজার কোটি কোটি ব্যয়ে স্থাপিত হোটেল মালিকেরা পথে বসবেন। বেকার হবেন ১ লাখেরও বেশী মানুষ। ১০ লাখ পরিবার সার্বিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
‘পর্যটন শিল্পকে বাঁচান দেশ বাঁচবে, পর্যটন শিল্পকে বাঁচান অর্থনীতি বাঁচবে’ এই ¯েøাগান নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফ.ম.আলাউদ্দিন মাহমুদ বলেন, গুলশান, বনানী , বারিধারা, উত্তরা ও ধানমন্ডি বিভিন্ন দূতাবাস, গার্মেন্ট, বায়ার, বায়িং হাউজ কর্মকর্তা ও ওইসব এলাকার আবাসিক বাসিন্দাদের প্রয়োজনে স্বাধীনতার ১০ বছরের মাথায় শিল্পটি গড়ে উঠেছে। ক্রমান্বয়ে সময়ের চাহিদা মেটাতে প্রসারিত হয় হোটেল ও রেস্তোরা ব্যবসা। এসকল প্রতিষ্ঠানের সেবা বিদেশী ও দেশের করর্পোরেট লেবেলের অতিথিরা গ্রহণ করে থাকেন। অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে এটি একটি অনিবার্জ শিল্পে পরিনতো হয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি গ্রহণ করে ব্যবসাটি পরিচালনা করছেন। তারা নিয়মিত টাক্স, আয়কর প্রদান করছেন। বছরে তারা ৪০০ কোটি টাকারও বেশী ভ্যাট দিয়ে থাকেন। যা রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে সমৃদ্ধ করছে। বানিজ্যিক হারে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি বিল প্রদান করেন। এই শিল্পে বর্তমানে ১ লাখ শিক্ষিত যুবক ও যুবতী কর্মরত আছেন। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ্যভাবে ১০ লাখ লোকের পরিবার এর ওপর নির্ভরশীল। এই শিল্পে তাদের শুধু গুলশানে বিনিয়োগ আছে ২০০০ হাজার কোটি টাকারও ওপরে। এই টাকার প্রায় অর্ধেকের মতো ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া। সরকার যদি এই শিল্পটি বন্ধ করে দেয় তাহলে সার্বিক অর্থনীতির পাশাপাশি ওইসব এলাকার বাসিন্দা ও বিদেশী বায়ারেরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হবেন। হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগকারীরা পথে বসবেন। বেকার হবেন লাখ লাখ লোক।
সমিতির সভাপতি শাহ আলম বলেন, আবাসিক এলাকায় হোটেল ও গেস্ট হাউজ সরকারী সিদ্ধান্তে গড়ে উঠেছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ২০০৮ সালে ২৯ মে প্রকাশিত গেজেটে আবাসিক এলাকায় হোটেল থাকতে পারবে মর্মে উল্লেখ আছে। পৃথিবীর সবদেশেই আবাসিক এলাকায় হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে দিল্লিতেই আছে প্রায় ১২০০ প্রতিষ্ঠান। অথচ গত ৪ এপ্রিল মন্ত্রী পরিষদে নিয়মিত বৈঠকে পর ৬ মাসের মধ্যে আবাসিক এলাকা থেকে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে আমরা হতবাক হয়েছি, বিস্মিত ও বাকরুদ্ধ হয়েছি। বৈধভাবে গড়ে উঠা আমাদের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই শুধুমাত্র ট্রাফিক জ্যামের কারণ দেখিয়ে সরকারী এই আত্মঘাতি সিদ্ধান্তে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, পর্যটন শিল্পে আমাদের অবদানের কথা বিবেচনা করা হয়নি এবং এ বিষয়ে সম্পন্ন তথ্য উপাত্ত মন্ত্রী পরিষদের কাছে না থাকায় কোন একটি মহলের অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তড়িগড়ি করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যা সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নায়নের সঙ্গে খাপ খায় না। এটা মারাত্মক ভুল। এই সিদ্ধান্তের ফলে তৃণমুল পর্যায়ে সরকারের ধারাবাকিক উন্নায়ন ও ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য হবে। তাই ১ লাখ লোকের কর্মসংস্থান, ১০ লাখ পরিবারের বেঁচে থাকা, ঋণের টাকা পরিশোধ, বিদেশীদের আবাসিক সংকট, বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি, জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব ইত্যাদি কথা বিবেচনা কর ইতিমধ্যে সরকারের গৃহিত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মানবিক কারণে আমাদের চলমান ব্যবসায় পৃষ্টপোষকতার জন্য সরকারে প্রতি আহŸান জানাচ্ছি।
সরকার যদি সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে তাহলে তারা কি করবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সভাপতি বলেন, আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ, ঢাকার দুই মেয়রসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করা অব্যাহত রেখেছি। আমরা আশা করি সরকার আমাদের দাবির সঙ্গে একমত হবে। যদি সরকার তার সিদ্ধান্তে অটল থাকে তাহলে আমরা মালিক সমিতিতে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবো। সংবাদ সম্মেলনে এসময় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মালিক সমিতির সহ-সভাপতি তারেক শামস, মোশারফ হোসেন খোকা, শরীফুল আলম, মো: ফজুলুর রহমান রতন, আকতার হোসেন মঞ্জু, হাফিজুর রহমান, আশরাফ উদ দৌলা প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।