মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের দুই দিনের পাকিস্তান সফরের সময় সউদী আরবের কাছ থেকে ইসলামাবাদ অন্তত ২০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক প্যাকেজ পাবে বলে খালিজ টাইমস জানতে পেরেছে।
ইসলামাবাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, রোববার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে সউদী প্রিন্সের বৈঠকের সময় অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি ও ব্যবসায়িক ভিসা সহজ করার বিষয়টি উত্থাপিত হবে।
পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচারবিষয়ক মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মাঝারি থেকে দীর্ঘ মেয়াদে বিকশিত করার লক্ষ্যে অন্তত আটটি সমঝোতা স্মারকে সই করবে দুই দেশ। তিনি শুক্রবার খালিজ টাইমসকে বলেন, ব্যবসা ও বিনিয়োগের জন্য পাকিস্তান দরজা খুলে দিচ্ছে। সম্প্রতি দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ডস গভর্নমেন্ট সামিটে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই বার্তা দিয়েছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সউদী আরবে মতবিনিময়ে দেখা যাচ্ছে, আমরা ঠিক পথেই রয়েছি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত মাসে জানায়, সউদী আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত বিনিয়োগ ও ঋণ হিসেবে পাকিস্তানকে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার দিতে চায়। এছাড়া বিলম্বে দাম পরিশোধের সুযোগ দিয়ে ৬ বিলিয়ন ডলারের তেলও দিতে রাজি। উভয় দেশ পাকিস্তানের দায় পরিশোধ সঙ্কট ও রুপিকে সমর্থন দিতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ৩ বিলিয়ন ডলার জমা করবে।
চৌধুরী বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সউদী আরব স্থানীয় প্রয়োজন মেটানো ও আঞ্চলিক বাজারে উদ্বৃত্ত অংশটুকু বিক্রি করার জন্য পাকিস্তানে মেগা শোধনাগার নির্মাণ করবে।
গত মাসে সউদী জ্বালানিমন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ গোয়াদার বন্দর এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি ৫ বছরে ১০ বিলিয়ন ডলারে নির্মিতব্য প্রস্তাবিত তেল শোধনাগার ও পেট্রোক্যামিক্যাল কমপ্লেক্সের স্থানটি পরিদর্শন করেন।
তিনি বলেন, ক্রাউন প্রিন্সের সফরকালে পাকিস্তান বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মূল্যের বিনিয়োগ চুক্তিতে সই করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের বিনিয়োগ বোর্ড জানিয়েছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সউদী বিনিয়োগ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। তবে এর বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হয়নি। সিনিয়র কর্মকর্তাদের হিসাব অনুযায়ী, সউদী আরব বিদ্যুৎ খাতে ৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর সৌর ও বায়ু প্রকল্পসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করবে আরো ২ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া খনিজ ও খনি প্রকল্পেও বিনিয়োগ করা হবে।
এলএনজি-চালিত বিদ্যুৎ প্লান্টেও সউদী আরব ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করুক, এমনটা চায় পাকিস্তান। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সউদী মন্ত্রী ও ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিপক্ষের সাথে আলোচনা করবেন দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে।
ইএফজি-হারমেস পাকিস্তানের সাবেক সিইও মোজাম্মিল আসলাম বলেন, সউদী বিনিয়োগের ফলে পাকিস্তানের বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পেট্রোক্যামিক্যাল, অবকাঠামো ও খনি শিল্প উপকৃত হবে।
তিনি বলেন, স্বল্প মেয়াদে প্রায় ৫-৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে। আর মধ্য মধ্যম মেয়াদে করা হবে ২-৩ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করা হবে ১০-১২ বিলিয়ন ডলার। তিনি বলেন, এর ফলে পাকিস্তান আবার বিনিয়োগকারীদের নজরে চলে আসবে। অন্যরাও তখন পাকিস্তানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে। তিনি বলেন, বর্তমান দায় পরিশোধ সঙ্কটের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হওয়া সহজ নয়। তবে এটি পাকিস্তানকে আকর্ষনীয় বিনিয়োগ কেন্দ্রে পরিণত করবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সউদী বিনিয়োগ পাকিস্তানের খুঁড়িয়ে চলতে থাকা অর্থনীতির জন্য নতুন জীবন এনে দেবে। সম্প্রতি এসঅ্যান্ড পিএগ্লাবাল রেটিং এজেন্সি পাকিস্তানকে বি থেকে মাইনাস বি’তে নামিয়ে এনেছিল। তারা বলেন, উপসাগরীয় দেশগুলো ও চীনাদের সময়োচিত সহযোগিতা বিদেশী বিনিয়োগ চাঙ্গা করতে সহায়তা করেছে। উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ সময়কালের একই সময়ের তুলনায় ২০১৮-১৯ সালের প্রথমার্ধে বিদেশী বিনিয়োগ ১৯.২ শতাংশ কমে ১.৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে গিয়েছিল। সূত্র : এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।