পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা সদরে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় পাখি ‘ইমু’। ব্যক্তিগত কিংবা বাণিজ্যিক চিন্তা থেকে নয় সামগ্রিকভাবে বাণিজ্যিকিকরণ তথা বেকারদের নয়া কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে এই প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় ২০০ ইমু পাখি এখন এ অঞ্চলের একটি মডেল। এখানকার প্রতিটি ঘরে ঘরে ইমু পাখিকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা চলছে।
খুলনা মহানগর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে বটিয়াঘাটার সদরে কিসমত ফুলতলা এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে ইমু পাখির খামার। আর পরীক্ষামূলকভাবে খামারটি করেছেন বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম খান। রাস্তার পাশে বালু দিয়ে ভরাট করা ১ বিঘা খোলা জায়গায় করা খামার যেন মরু উদ্যান। খামারের একপাশে ২০ বর্গফুটের একটি পুকুরও রয়েছে। খামারের চারপাশে নেটের বেড়া। খোলা জায়গায় খামার গড়ে ওঠায় প্রতিদিন ভিড় করছে বহু দর্শনার্থী। খামারের পূর্ব পাশেই প্রায় ৫০ গজ দূরে কাজিবাছা নদী। খামারকে ঘিরেই আশপাশ এলাকা এখন দৃষ্টিনন্দন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইমু পাখি ওড়তে পারে না এবং খুবই নিরীহ প্রকৃতির। মুরগির ন্যায় এরা দলবদ্ধ হয়ে মাঠে চরে বেড়ায়। সেই সাথে ঘাস, পাতা, নুড়ি পাথর খেয়ে থাকে। অতিরিক্ত ঠান্ডা ও গরমে সহজেই অভিযোজিত হতে পারে। বাংলাদেশের তাপমাত্রায় ইমু পাখির কোনো সমস্যা হয় না।
ইমু পাখি সাধারণত ১ থেকে দেড় বছর বয়সে শারীরিক পূর্ণতা লাভ করে। ২৫ বছর পর্যন্ত প্রজনন ক্ষমতা থাকে। ২০-২৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে। ইমু পাখি ৫-৬ ফিট উঁচু হয়। প্রতিটির ওজন ৪০-৬০ কেজি হয়ে থাকে। একটি স্ত্রী ইমু পাখি দেড় থেকে ২ বছর বয়সে প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে। সাধারণত অক্টোবর থেকে মার্চ এই ৬ মাস ডিম দেয়।
ডিম সবুজ বর্ণের এবং আকারে মুরগির ডিম থেকে ১০-১২ গুণ বড় হয়। প্রজননকালে এরা ৩ থেকে ৫ দিন অন্তর অন্তর ডিম পাড়ে। জন্ম নেওয়ার পর ছানা হালকা বাদামির ওপর রেক রেক দাগ থাকে। ৪ মাস বয়সের পর গায়ের রঙ পরিবর্তন হয়ে গাঢ় বাদামি রঙ ধারণ করে। এক বছর বয়সের পর রঙ বাদামির ওপর কিছু নিলাভ সবুজ পালক থাকে। দেড় বছর পর গায়ের রঙ বাদামি বর্ণের হয়ে যায়। মো. আশরাফুল আলম খান জানান, প্রতি জোড়া ইমু ১৬ হাজার টাকা দরে ক্রয় করেন। প্রথমে ২০০টি ইমু পাখির বাচ্চা এবং ১২টি উট পাখির বাচ্চা কেনেন। তখন প্রতিটি ইমুর ওজন ছিল ৬০০-৭০০ গ্রাম। বর্তমানে প্রতিটির ওজন ৪০-৫০ কেজি।
আবহাওয়ায় খাপ খাওয়াতে না পেরে ১০টি উট পাখি মারা গেছে। কিন্তু ইমু পাখি জীবিত রয়েছে ১৯০টি। ইমুর মাংস বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। কারণ এর মাংস ৯৮ ভাগ পর্যন্ত চর্বিমুক্ত। চামড়ার নিচে থাকা চর্বির আস্তরণ দিয়ে মূল্যবান ওষুধ তৈরি হয়। তিনি আশা করেন, খুব শিগগিরই দেশে ইমুর খামার জনপ্রিয়তা পাবে এবং গ্রাম-গঞ্জের ঘরে ঘরে খামার হবে। বেকার নারী-পুরুষরা স্বাবলম্বী হবে।
খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ম. জাভেদ ইকবাল জানান, দাপ্তরিক কাজে দাকোপ যাওয়ার পথে ইমু পাখির খামার চোখে পড়ছিল। উড়তে অক্ষম ইমুকে এভাবে পালন করা যায় আগে জানা ছিল না। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বঙ্কিম কুমার হালদার জানান, ইমু পাখির মাংস বেশ সুস্বাদু। এর মাংস কোলেস্টেরল ফ্রি। ইমুর মৃত্যুহার টার্কি ও ব্রয়লারের চেয়ে অনেক কম। বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে ইমুর খামার বেশ সম্ভাবনাময়। খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. সুশান্ত কুমার রায় জানান, ইমু সম্ভাবনাময় পাখি এবং এর মাংস সুস্বাদু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।