Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ওল্ড ট্রাফোর্ডে আহত বাঘের থাবা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ঘরের মাঠে এমন ফল একেবারেই আশা করেননি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সমর্থকরা। আশা ছিল ভালো কিছুর। আশার প্রদীপটা জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন কোচ ওলে গানার সুলশার নিজে। সেই সলতে উজ্জ্বলতর হয় প্রতিপক্ষ শিবির চোটে বিপর্যস্ত হওয়ায়। কিন্তু ইউনাইটেডেরই সাবেক সেনা অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার সেই সুযোগ দিলে তো। তারই উপর্যুপরি আঘাতে সেই লাল শিবিরের আশার সলতে গেল নিভে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে পিএসজির এই থাবা ছিল আহত ব্যগ্রের ন্যায়।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ ষোলর প্রথম লেগে ঘরের মাঠে পিএসজির কাছে ২-০ গোলে হেরে গেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। প্রথম ফরাসি দল হিসেবে ওল্ড ট্রাফোর্ডে গড়ে জয়ের অনন্য কীর্তি। ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবে আপৎকালীন দায়ীত্ব পালন করতে এসে ১২তম ম্যাচে এসে পরাজয়ের তিক্ততা অনুভব করলেন সুলশার। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় তার যাত্রাটাও শুরু হলো পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে। সুলশারের আঘাতটা আরো গদগদে করে দিয়েছে ম্যাচের একেবারেই শেষ সময়ে দলের সবচেয়ে বড় তারকা পল পড়বার লাল কার্ড। তার মানে, ৬ মার্চ দ্বিতীয় লেগের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলতে পারবেন না বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি মিডফিল্ডার। টানা দুই মৌসুম শেষ ষোল থেকে বিদায় নেয়া লিগ ওয়ানের দলের সামনে তাই এবার শেষ আটের হাতছানি। আরো একটা পরিসংখ্যানে হয়ত খুশিই হবেন পিএসজি কোচ টমাস টুখেল; পূর্বের ৩৪ দলের কেউই নক আউট পর্বে ঘরের মাঠে দুই বা ততোধিক গোলে পিছিয়ে পড়ার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

স্বাগতিকদের প্রথম আঘাত আসে ম্যাচের প্রথমার্ধের শেষ সময়ে। চার মিনিটের ব্যবধানে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন আক্রমণভাগের দুই তারকা মার্কাস রাশফোর্ড ও জেসে লিঙ্গার্ড। এর আগে ইউরোপিয়ান ফুটবলে দুই দলের প্রথম লড়াইয়ের প্রথমার্ধ ছিল হতাশাজনক। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ভাগে সাত মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় পিএসজি। আর তাতে পার্শনায়কের ভূমিকায় ছিলেন ডি মারিয়া।

৫৩তম মিনিটে আর্জেন্টাইন উইঙ্গারের কর্ণারেই কাছ থেকে বাঁ পায়ের টোকায় দলকে এগিয়ে নেন ফরাসি ডিফেন্ডার কিম্পেম্বে। দ্বিতীয় গোলটি করান কিলিয়ান এমবাপেকে দিয়ে। বাঁ দিক থেকে ডি মারিয়ার ক্রস ডি বক্সে পেয়ে প্লেসিং শটে বল জালে পাঠান ফরাসি বিশ্বকাপজয়ী স্ট্রাইকার। চোটের কারণে এই ম্যাচে ছিলেন না পিএসজির আক্রমণভাগের প্রধাণ দুই ফলা নেইমার ও এডিনসন কাভানি। রক্ষণে ছিলেন না হাভিয়ের মুনিয়েরও। পগবা লাল কার্ড পান ম্যাচের ৮৯ মিনিটে, দানি আলভেসকে ফাউল করে।

সুলশার অবশ্য হারের কারণ হিসেবে লিঙ্গার্ড ও রাশফোর্ডের চোটকে কারণ হিসেবে দেখছেন না, ‘আপনি এটাকে (হারের) কারণ বলতে পারেন না। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের আরো মানসম্মত খোলোয়াড় ছিল। লিঙ্গার্ড ও রাশফোর্ডই অবশ্য আমাদের আশা দেখাচ্ছে এবং আশা করছি তাদের চোটটা মারাত্মক না। তারা মাংসপেশীর সমস্যায় পড়েছে; আমাদের কয়েকটা দিন এজন্য অপেক্ষা করতে হবে।’ তবে দ্বিতীয় লেগে কাজটা যে কঠিন তা মানছেন সুলশার, ‘সেখানে আমাদের পাহাড় টপকাতে হবে। আপনি ভেঙ্গে পড়তে পারেন না এবং বলবেন না আশা শেষ। আমরা সেখানে যাব, নিজেদের খেলা খেলব এবং আজকের চেয়ে উন্নতি করব।’
অন্য দিকে জয় পেয়ে উচ্ছ¡সিত পিএসজি কোচ টুখেল, ‘আমরাই জয়ের দাবিদার, এবং ওল্ড ট্রাফোর্ডে সেটাই করে দেখিয়েছি। আমি আমার দলকে অভিবাদন জানাই।’ তবে উচ্ছাসে গা ভাসিয়ে দিচ্ছেন না তিনি, ‘এটা কেবল প্রথম পর্ব এবং আমাদের এখনো পার্ক দেস প্রিন্সেসে খেলতে হবে।’
রাতের অন্য ম্যাচে ঘরের মাঠে নিকোলো জানিওলোর জোড়া গোলে পোর্তোকে ২-১ গোলে হারায় গত মৌসুমের সেমিফাইনালিস্ট রোমা। ম্যাচের তিনটি গোলই আসে ৭০ থেকে ৭৯ মিনিটের মধ্যে। গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াস দুর্দান্ত কিছু সেভ না দিলে আরো বড় পরাজয়ের মাল্য পরতে হত পোর্তোকে। ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর সফরকারীদের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন আদ্রিয়ান লোপেজ।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচ হিসেবে ১২তম ম্যাচে এসে পরাজয়ের স্বাদ পেলেন ওলে গানার সুলশার। সব প্রতিযোগিতা মিল জয় ১০, ড্র ১ ও পরাজয় ১টি

প্রথম ফরাসি দল হিসেবে ওল্ড ট্রাফোর্ডে স্বাগতিকদের হারালো পিএসজি। আগের ১৪ ম্যাচে ৪টি ছিল ড্র, ১০টিতে হার

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বে পূর্বের ৩৪ দলের কেউই ঘরের মাঠে দুই বা ততোধিক গোলে পিছিয়ে পড়ার পর কোন দলই ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি

ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ঘরের মাঠে এই প্রথম একের অধিক গোলে হারল ম্যান ইউ

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজি

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ