Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও ট্রমা সেন্টার তিন লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় মাত্র ৩ ডাক্তার

প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

তালুকদার মো. কামাল, আমতলী (বরগুনা) থেকে
বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও ট্রমা সেন্টারটি নিজেই অসুস্থ ও নানা সমস্যায় জর্জরিত। ৩ লক্ষাধিক মানুষের জন্য রয়েছেন মাত্র ৩ জন ডাক্তার। উপকূলীয় অঞ্চলের অসহায়, হতদরিদ্র ও জেলে পরিবাররা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এক তথ্যে জানা গেছে, আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ২১ জন এমবিবিএস ডাক্তারের পদ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ১৮টি পদই শূন্য রয়েছে এবং জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন ডাক্তার গত ১ জুন ২০০৮ হতে এবং প্যাথঃ ডাক্তার গত ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ হতে আজ পর্যন্ত অনুপস্থিত রয়েছেন। হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আ. সালাম জানান, এই ২ জন ডাক্তার বেঁচে আছেন না মারা গেছেন তা আমরা কেউ জানি না। বর্তমানে ৩ জন ডাক্তার দিয়ে ২ লক্ষাধিক মানুষের নামমাত্র চিকিৎসাসেবা চলছে। নার্সিং সুপারভাইজারের পদটি তাও শূন্য, সিনিয়র স্টাফ নার্স এর ১৪টি পদের ৬টিই শূন্য। ফার্মাসিস্টের ২টি পদের ১টি শূন্য, মেডিক্যাল টেকঃ ল্যাবের ৩টি পদের ২টিই শূন্য, ফিজিওথেরাপি ১টি পদের ১টিই শূন্য, অফিস সহকারী কামঃটাইপিস্টের ৩টি পদের ২টিই শূন্য, একাউন্ট্যান্টের ১টি পদের ১টিই শূন্য, জুনিয়র মেকানিকের ১টি পদের ১টিই শূন্য, কমপাউন্ডারের ১টি পদের ১টিই শূন্য, কারডিওগ্রাফারের ১টি পদের ১টিই শূন্য, পিয়নের ৪টি পদের ১ জন প্রেষণে সিএস অফিসে, সুইপারের ৫টি পদের ২ জনই প্রেষণে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে। সর্বমোট গুরুত্বপূর্ণ পদের ৪১টি পদই শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ। ইনজেকশন বা তুলার কোন সাপাই নেই দীর্ঘদিন যাবৎ। এমপি, ভিজাল, সিআরপি, এইসসিভি, কোলেস্টারল, এইচডিএল, এলপিএল, টিজি, বিলিরুবিন, ইউরিয়া, ক্রিটিনিয়া, গুকোজ, এসজিপিটি, এসজিওটি ও ক্যালসিয়াম রি-এজেন্ট টেস্ট করার জন্য ক্লোরিমিটার মেশিন বা অ্যানালাইজার মেশিন না থাকায় এসব রোগীদের ভোগান্তি হচ্ছে এবং রি-এজেন্টগুলো সংরক্ষণের জন্য একান্ত প্রয়োজন প্যাথলজিক্যাল ফ্রিজ। আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন না থাকায় রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালে গাইনী বিশেষজ্ঞ মহিলা ডাক্তার না থাকায় মহিলাদের অনেক জটিল রোগের চিকিৎসা হচ্ছে না। ডেন্টাল সার্জন, কান, গলা, নাক, অর্থপেডিক্স, হার্ট, চক্ষু ডাক্তার ও যন্ত্রপাতি না থাকায় এসব রোগীর অনেকেই অর্থের অভাবে বাইরে থেকে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে উপকূলীয় অঞ্চলে হতদরিদ্র ও জেলে পরিবাররা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালটি পটুয়াখালী ও বরগুনা দুই জেলার মধ্যস্থানে অবস্থিত। কলাপাড়া, বরগুনা ও পটুয়াখালীর অসংখ্য রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। বিশেষ করে কুয়াকাটা-ঢাকা ও বরগুনা-ঢাকা ও আমতলী-ঢাকা মহাসড়কের যানবাহন দুর্ঘটনায় আহত রোগী প্রতিদিন এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলেও ডাক্তার, যন্ত্রপাতি ও ওষুধের অভাবে চিকিৎসা থেকে রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে। রোগী সোহেল তালুকদার জানান, কক্ষ মধ্যে ফ্যান ও লাইট নষ্ট। সিভিল সার্জন আ. মন্নান জানান, এ ব্যাপারে আমি ভালো জানি না উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ভালো জানেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোহম্মদ আবদুল মতিন বলেন, আমরা প্রতি মাসে লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাচ্ছি। এখন আর সমস্যা হয় না কারণ এখন বিশ্রাম করতে পারি না রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে। অন্যান্য ডাক্তাররাও এভাবে দিনরাত রোগীদের সেবা দিয়ে আসছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ