পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ের ২১৫ একর জমি এখনও বেদখল রয়ে গেছে। প্রভাবশালী দখলদারেরা এসব জমিতে কোথাও বহুতল মার্কেট, কোথাও বাজার, আবার কোথাও বসতঘর করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে। গত ১০ বছরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিশেষ করে সরকারি দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যাপকহারে জমি দখল করা হয়েছে।
বছরের পর বছর চলে গেলেও কয়েক হাজার কোটি টাকার এসব জমি উদ্ধার করতে পারছে না রেলওয়ে। মাঝে মধ্যে দখলদার উচ্ছেদে অভিযান চালানো হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সে জমি আবার দখলদারদের কব্জায় চলে যাচ্ছে। ফলে হাইস্পিড ট্রেন চালুসহ রেলওয়েকে ঘিরে যে উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ঢাকার বুড়িগঙ্গা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের ধারক কর্ণফুলী নদী রক্ষায় অবৈধ দখল উচ্ছেদে চলছে সাঁড়াশি অভিযান। একের পর এক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে জমি দখলমুক্ত করা হচ্ছে। তবে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি রক্ষায় এখনও পর্যন্ত বিশেষ কোন অভিযান চোখে পড়েনি। বিগত ১০ বছরে রেলের উন্নয়নে বিপুল অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে। কিন্তু নিজস্ব সম্পত্তি রক্ষা করতে পারছে না রেলওয়ে। অথচ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা থেকেই শত শত কোটি টাকা আয় করতে পারত রেলওয়ে। কিন্তু অপার এ সম্ভাবনার প্রতি যথাযথ নজর দেয়া হচ্ছে না। জমি দখল অব্যাহত থাকলে একসময় রেলওয়ে তাদের নিজস্ব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতেও হিমশিম খাবে।
রেল সূত্র জানায়, রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগে মোট জমির পরিমাণ ৭ হাজার ৭০১ একর। এরমধ্যে রেলওয়ে ব্যবহার করছে ৪ হাজার ৩৯৬ একর। বেদখল রয়ে গেছে ২১৫ দশমিক ১৮ একর। সংশ্লিষ্টদের মতে বেদখল সম্পত্তির মূল্য কমপক্ষে ৩ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দখলে রয়েছে ৮৭ দশমিক ৫ একর। ১০০ একর দখল করেছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোড, কদমতলী, পাহাড়তলী, টাইগার পাস, খুলশী, আমবাগান, আকবর শাহ, ফয়’স লেকসহ বিভিন্ন এলাকায় রেলওয়ের মূল্যবান জমি দখলে নিয়ে বহুতল ভবন, মার্কেট এবং বসতবাড়ি তৈরি করা হয়েছে।
রেলের জমিতে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের অফিস। দখল থেকে রক্ষা পায়নি রেললাইনের আশপাশের খালি জায়গা, পাহাড়, টিলাও। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের বিভিন্ন সংগঠনের নামেও রেলের অনেক জমি দখল করা হয়েছে। এসব অবৈধ দখলমুক্ত করতে মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ফের এসব জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। তবে রেলওয়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশেও জমি দখলের অভিযোগ আছে। বিশেষ করে রেলের শ্রমিক নেতাদের কারণে অনেক জায়গাই দখলমুক্ত করা যায় না। অবৈধ দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন কর্মকর্তারা।
পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ইশরাত রেজা গতকাল রোববার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, রেলের বিপুল পরিমাণ জমি বেদখল হয়ে গেছে। বেদখল ভূ-সম্পত্তি রক্ষায় রেলওয়ে প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করছে। পূর্বাঞ্চলে এ পর্যন্ত ৪১৯ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। আগামী দিনেও উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বিশেষ কোন অভিযানের সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি জানান, পূর্বাঞ্চলের দুই বিভাগে বেদখল হয় ৫৪২ একর জমি। এরমধ্যে বিভিন্ন সময়ে ৪শ’ একর জমি উদ্ধার হয়েছে। সীমিত লোকবল নিয়েও আমরা কাজ করছি।
রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের অনেক জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম বিভাগে বেদখল ২১৫ একর জমি উদ্ধারে অভিযান চলছে। গতকালও কুমিল্লার নাঙ্গলকোট স্টেশন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, রেলের জমি দখল করে বড় বড় ভবন তৈরি করা হয়েছে। কোথাও মার্কেট তৈরি করেছে দখলদাররা। কেউ সামান্য জমি লিজ নিয়ে আশপাশের এলাকা দখলে নিয়ে নিয়েছে। কিছু এলাকায় মামলার কারণে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না।
নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোড ও টোল রোড এলাকায় গেল বছর বড় ধরনের দুইটি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ২ হাজার ৪৩৪ জন দখলদার উচ্ছেদ করে ৭ একর ভূমি দখলমুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, উচ্ছেদের পর অনেক সম্পত্তি আবার বেদখল হয়ে যাচ্ছে। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনায় অথরাইজেশন অফিসারসহ লোকবল সঙ্কটের কথাও জানান তিনি।
রেলওয়ের ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী অবৈধ দখলমুক্ত করতে অভিযান পরিচালনা করে রেলের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ। এরপর ওই সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকে প্রকৌশল বিভাগ। ভূ-সম্পত্তি পাহারার দায়িত্বে থাকে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী আরএনবি। জানা যায়, এসব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে একদিকে অবৈধ দখল বাড়ে অন্যদিকে উচ্ছেদকৃত জমিও পুনরায় দখল হয়ে যায়। এ বিষয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা (সিআই) সত্যজিৎ দাশ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর লোকবল সঙ্কট রয়েছে। তবে এরপরও আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি। ইতোমধ্যে যেসব ভূমি দখলমুক্ত করা হয়েছে সেখানে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আরও কিছু এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানেরও প্রস্তুতি চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।