ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা বেশ দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে ক্রিকেটে সঙ্গে। তার সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের একমাত্র নারী উদ্দোক্তা। বাংলাদেশ ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিপিএল) প্রায় শুরু থেকেই তিনি রয়েছেন দলীয় মালিকানায়। প্রথম দিকে সিলেটের ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে সাফল্য মেলেনি। তৃতীয় আসর থেকে দল বদলে নেন কুমিল্লার মালিকানা। আর তাতেই বাজিমাৎ! চার বারের মধ্যে দুইবারই চ্যাম্পিয়ন!

এতক্ষণে বুঝে যাওয়ার কথা কার কথা বলা হচ্ছে। ঠিকই ধরেছেন, তিনি হলেন লোটাস কামাল গ্রুপের সফল পরিচালক এবং বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের চেয়ারম্যান নাফিসা কামাল। বাবা আ হ ম মোস্তফা কামাল অনেকদিন ধরেই রয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে। দেশের বর্তমান অর্থমন্ত্রী মোস্তফা কামাল ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও আইসিসির চেয়ারম্যানের পদে। বাংলাদেশের স্বার্থে আঘাত হানায় আইসিসি প্রেসিডেন্টের মত পদ থেকে পদত্যাগ করেন কামাল। দৃচেতা নাফিসা কামালও হাটছেন বাবার সে পথেই।

নাফিসা কামাল কতটা দৃড়চেতা তা জানতে একটু পেছনে ফিরলেই বোঝা যাবে। ২০১৫ সালেই প্রথম শিরোপা জেতে তার দল কুমিল্লা। পরের আসরে মেলেনি আশানুরূপ ফল। ২০১৭ আসরে হন বিতর্কের শিকার। প্লে-অফ রাউন্ডে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচের নির্ধারিত দিন বৃষ্টিতে বাতিল হলে রানরেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে ফাইনালে ওঠার কথা ছিলো কুমিল্লার। কিন্তু বাইলজ পরিবর্তন করে পুনরায় ম্যাচ খেলা হয় পরদিন। তাতে ভাগ্য সহায় হয়নি কুমিল্লার। এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্তে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়ার পর দলের চেয়ারম্যান নাফিসা কামাল মনঃকষ্ট পেয়েছিলেন খুব। প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন নিজের হতাশার কথা।

সেই কথা মনে রেখেই এবার শুরু থেকেই শিরোপা জয়ের জন্য মুখিয়ে ছিলেন নাফিসা। দলের খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের সেভাবেই সমর্থন দিয়েছেন টুর্নামেন্টজুড়ে। যার ফল তিনি পেয়েছেন শুক্রবারের ফাইনালে। তামিম ইকবালের রেকর্ডময় এক ইনিংসে ভর করে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১৭ রানে হারিয়ে দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তোলে নাফিসার ভিক্টোরিয়ান্স।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে পুরো ম্যাচটা মাঠে বসেই দেখেন নাফিসা। ম্যাচ শেষে যোগ দেন দলের উদযাপনেও। এরপর টিম বাস তো মাতিয়ে রাখেন বলতে গেলে একাই। এরই মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন নিজের অনুভূতির কথা। শিরোপা হাতে নিজের হাস্যোজ্জ্বল ছবি আপলোড করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে আবেগমাখা একটি ক্যাপশন দেন তিনি। যেখানে লেখা ছিল, ‘আলহামদুলিল্লাহ্! চারবারের মধ্যে দুইবার চ্যাম্পিয়ন। আল্লাহ্ সবকিছু দেখেন এবং সবকিছুর উত্তরটা তিনি সঠিক সময়ে সর্বোৎকৃষ্ট উপায়েই দেন। সত্যের জয় হয়। আলহামদুলিল্লাহ্। আমার দল করে দেখিয়েছে। আমার জন্য শিরোপা এনে দিয়েছে আমার দল। আমি আমার ভিক্টোরিয়ানদের ভালোবাসি।’