পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে পুরোদমে চলছে বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতির কাজ। আগামী শুক্রবার শুরু হচ্ছে তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বিরা জানিয়েছেন আগামী বুধবারের মধ্যে মাঠের সকল প্রস্তুতি কাজ শেষ করবেন। এখন ময়দানে বিশাল এলাকা জুড়ে প্যান্ডেল, খুঁটি ও মাঠের ভিতরে রাস্তার মেরামত কাজ চলছে। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে দল বেধে খুটি, চট দিয়ে সামিয়ানা টানাচ্ছেন, বিদ্যুতের তার টানাচ্ছেন এবং বিদেশী মেহমানদের জন্য আলাদা মঞ্চসহ বয়ানমঞ্চ প্রস্তুত করছেন।
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠে স্বেচ্ছা শ্রমে কাজ করতে ঢাকা কেরানীগঞ্জ থেকে আসা মুসল্লি মো: সেলিম মিয়া বলেন, আমি একজন চাকুরিজীবী। ইজতেমা মাঠে কাজ করতে এসে আমি অনেক খুশি। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রাস্তায় এসে আমি অনেক কিছু শিখেছি। তাবলিগের উসিলায় আমি নিজেকে অনেক পরিবর্তন করতে পেরেছি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়, দ্বীনের রাস্তায় চলার মতো রাস্তা আল্লাহ আমাকে দেখিয়েছেন। আমি আল্লাহর দেখানো রাস্তায় এসেছি, কারণ এ কাজটিই চিরস্থায়ী আর দুনিয়ার কাজ হচ্ছে ক্ষণস্থায়ী।’
গাজীপুর থেকে আসা মো: জুনায়েত বলেন, ১৪০ জনের একটি জামাত মাঠে কাজ করার জন্য চান্দনা চৌরাস্তা থেকে এসেছি। তিনি তাবলিগের সাথে ছোটকাল থেকে জড়িত। ১৯৯৮ সাল থেকে বিশ্ব ইজতেমা মাঠ প্রস্তুত্তির কাজ করে আসছেন। বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দেওয়া মুসল্লিরা সুন্দরভাবে অবস্থান নিয়ে বয়ান শুনতে পারেন। ইজতেমা যাতে সফল এবং সুন্দরভাবে শেষ হয়।’ ‘এবার মাঠ প্রস্তুতির কাজ শুরু করতে একটু দেরি হলেও আমরা চেষ্টা করছি কাজ সময় মত শেষ করতে।’
বিশ্ব ইজতেমার বয়ান মঞ্চ তৈরি এবং সাফাই জামাতের জিম্মাদার ফকির আতাউর রহমান বলেন, ‘১০ জন সূরা সদস্যের তত্বাবধানে বিভিন্ন জামাতে বিভক্ত হয়ে মাঠ প্রস্তুতের কাজ চলছে। প্রায় ২০ হাজার তাবলিগ জামাতের সাথী স্বেচ্ছাশ্রমে মাঠ প্রস্তুতের কাজ করছেন। তিনি বলেন, আগামী বুধবারের মধ্যে মুসল্লীদের জন্য মাঠ প্রস্তুতের কাজ শেষ হবে। আমাদের ইজতেমার আখেরি মোনাজাত হবে শনিবার।’
নজীরবিহীন নিরাপত্তা থাকবে ইজতেমায়
আগামী ১৫ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমায় দেশ-বিদেশ থেকে আসা মুসল্লীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবার নজিরবিহীন ও নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে সরকার। প্রয়োজনে সেনবাহিনীর সদস্যরাও ময়দানে থাকবেন। বিশ্ব ইজতেমার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তাবলিগ জামাতের দুটি গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শ সভা শেষে এসব কথা বলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাবলিগ জামাতের দু’টি গ্রুপের মধ্যে সম্প্রতি রক্তক্ষয়ী যে সংঘর্ষ হয় সে ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা যেন না ঘটে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। সরকার ইজতেমার ব্যাপারে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু ইজতেমাটি যেন নির্বিঘ্নে ও সুষ্ঠুভাবে হয় সে লক্ষ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এছাড়াও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তর সম্মেলন টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছেন গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আলহাজ মো: জাহিদ আহসান রাসেল। ইতিমধ্যে তিনি ইজতেমা মাঠ পরিদর্শন করেছেন এবং সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেও ইতিমধ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, চার দিনব্যাপি এবারের বিশ্ব ইজতেমা ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ইজতেমার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা। ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ইজতেমার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন সা’দপন্থী ওয়াসিফুল ইসলামের অনুসারীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।