বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মাছের সরবরাহ প্রচুর তবে দাম চড়া। আবার গরু, খাসি ও মুরগির দামও কিছুটা বেশি। তবে সরবরাহ বেশি থাকায় নাগালে সবজির দাম। কমেছে পিঁয়াজ, রসুন ও আদার দামও। ডিমের দাম প্রতিডজন ১০০ টাকায় ঘুরপাক খাচ্ছে। চালের দাম এখনও ঊর্ধ্বমুখী। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
বাজারভেদে সব পণ্যেরই দামে তারতম্য রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, এখন উৎসবের সময়। বিয়ে-শাদি, পিকনিকসহ চলছে নানা সামাজিক অনুষ্ঠান। এই কারণে মাছ-গোশতের দাম বাড়তি। বাড়তি ডিমের দামও। বাজারে ফার্মের মুরগি ১৩০-১৩৫ টাকা, সোনালিকা ২৫০-২৬০ টাকা এবং দেশী মুরগি ৩৮০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাড়ছাড়া গরুর গোশত ৬০০-৬৫০ টাকা, হাড়সহ ৪৫০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁস প্রতিজোড়া ৬০০-৭০০ টাকা, আর টার্কি মুরগি কেজি ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন ৯৫-১০০ টাকা এবং দেশি মুরগির ডিম ১৫০ টাকায়, আর হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০টাকায়।
বাজারে মাছের সরবরাহ প্রচুর। সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি পুকুর, দীঘির মাছের সরবরাহও পর্যাপ্ত। তবে দাম অনেকটা সাধারণের নাগালের বাইরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বড় মাছের দাম বেশি। তবে ছোট মাছের সরবরাহও কম। আকার ভেদে রুই মাছ ২৫০-২৮০ টাকা, লইট্টা ১৬০ টাকা, শিং ৪০০-৫০০ টাকা, দেশি মাগুর ৬০০-৭৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০-১৮০ টাকা, বড় চিংড়ি ৬০০-৯৫০ টাকা, মাঝারি সাইজের চিংড়ি ৫০০-৬০০ টাকা, কাতল মাছ ৩৫০-৪০০ টাকা, ইলিশ আকারভেদে ৭০০-১,০০০ টাকা, টেংরা ৩৫০-৪০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রুপচাঁদা সর্বনিম্ন ৭০০-১,০০০ টাকা, পোয়া মাছ ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সবজির সরবরাহ প্রচুর। শীত কমে যাওয়ায় শীতের সবজির মজাও কমে গেছে। এই কারণে ফুলকপি, বাঁধা কপি, টমেটোসহ অনেক সবজির দামও কমেছে। এরমধ্যেই আসতে শুরু করেছে গ্রীষ্মকালীন সবজিও। ফুলকপি ১৫-২০ টাকা, বাঁধাকপি ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুলা ১০-১২ টাকা, শিম ২০-২৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০-২৫ টাকা, আলু ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেগুন ২৫ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ ২০-২৫ টাকা, গাজর ১৫-২০ টাকা, শিমের বিচি প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ঝিঙ্গে ৬০-৭০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৬০-৬৫ টাকা, কচুর ছড়া ৫০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ কেজি ৩০-৪০ টাকা, শসা ২০-২৫ টাকায়, ধনে পাতার কেজি ২৫-৩০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ, রসুনের দাম আরও এক দফা কমেছে। পেঁয়াজ ২০-২২ টাকা, রসুন ৬০-৭০ টাকা, আদা ৭০০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের দাম আগের মতো ঊর্ধ্বমুখী।
বেড়েছে তেল ও গোশতের দাম
রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে সয়াবিন (ভোজ্য) তেল, মুরগি ও গরুর গোশতের দাম বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি সয়াবিন তেলের দাম ৫ টাকা, মুরগির গোশতের দাম ১০ টাকা এবং গরুর গোশতের দাম বাজারভেদে কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। এখনও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ। তবে বাজারগুলোতে দাম কমেছে সব ধরনের চাল ও পেঁয়াজের। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে শীতের সবজির পাশাপাশি আগাম পাওয়া যাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন সবজি আগাম সবজির দাম বেশি হলেও স্থিতিশীল রয়েছে অন্যান্য সবজির দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে ডাল, ডিম, চিনি, আটা, গুঁড়া দুধসহ সব ধরনের মুদি পণ্যের দাম।
রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল ৮৮ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৮২ টাকা। আর ৫ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫০ টাকা। এ বিষয়ে মহিন জেনারেল স্টোরের মালিক জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় খোলা ও প্যাকেটজাত তেলের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে এলাচ ও দারুচিনির দাম। এলাচের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০০ টাকা। দারুচিনি কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়। লেয়ার মুরগি (ছোট) বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা থেকে ২০৫ টাকা পিস আর মাঝারি সাইজের পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। বড় সাইজের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির দামের বিষয়ে শান্তিনগর বাজারের ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, প্রায় এক মাস ধরে মুরগির দাম বাড়ছে। যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, সে হারে ফার্ম থেকে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণেই হয়তো বয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। এ ব্যবসায়ী বলেন, প্রথমে দাম বেড়েছে পাকিস্তানি কক মুরগির। তবে বেশ কিছুদিন ধরেই পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। আর ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছে প্রায় এক মাস ধরে। বেশ কিছুদিন ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩৫ টাকায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্ত গত সপ্তাহে এক লাফে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহে রামপুরা, খিলগাঁও ও মালিবাগ অঞ্চলের বেশ কিছু ব্যবসায়ী গরুর মাংস ৪৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করলেও এখন কোনো ব্যবসায়ী ৫০০ টাকার নিচে গরুর মাংস বিক্রি করছেন না।
গরুর গোশতের দামের বিষয়ে হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী রফিকুল বলেন, আমরা নিজেরা গরু জবাই করি না। মাংস কিনে এনে বিক্রি করি। গত সপ্তাহে গরুর গোশত বিক্রি করেছি ৪৮০ টাকায়। কিন্তু এখন আমাদেরই ৪৮০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। যে কারণে ৫০০ টাকার নিচে গরুর গোশত বিক্রি করার উপায় নেই। গরুর গোশতের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে রামপুরার ব্যবসায়ী আতিক বলেন, বাজারে এখন সব ধরনের মুরগির দাম চড়া। এর কিছুটা প্রভাব পড়েছে গরুর গোশতের দামে। এ ছাড়া এখন গরু কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে, যে কারণে মাংসের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে খাসি ও মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। খাসির মাংস আগের মতই ৬৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে নাজিরশাইল চাল গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল কেজি প্রতি ৬০ টাকায়, বর্তমানে ৫৮ টাকা। মিনিকেট চাল ৫৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা গত সপ্তাহে ছিল ৪২ টাকা বর্তমানে ৪০ টাকা, বিআর ২৮ প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সবজির সরবরাহ ভালো থাকায় বেশিরভাগ সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আগাম সবজির মধ্যে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা। এছাড়া শীতের সবজি লাউ মানভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিম ১৫ থেকে ২০ টাকা, বেগুন ২০ থেকে ৩০ টাকা, ফুলকপি ১০ থেকে ১৫ টাকা পিস, বাঁধাকপি ১৫ থেকে ২৫ টাকা পিস, শালগম ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি এবং মূলা ১০ থেকে ২০ টাকা, পাকা টমেটোর কেজি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, নতুন আলুর ১৫ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।