পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ক্রমেই দূরত্ব বাড়ছে তাদের ১৪ দল ও মহাজোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে মন্ত্রিসভায় শরিকদের কাউকেই না রাখা, পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না পাওয়া ও সংসদের বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের পরামর্শে ক্ষুব্ধ শরিকরা। জোট থাকা আর না থাকা বর্তমানে সমান কথা বলে মনে করেন শরিক দলের অনেক নেতা এবং ভবিষ্যতে এ জোট থাকবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকে।
জোটের অংশীদার হয়েও ইতোমধ্যে নির্বাচন সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাসদ (আম্বিয়া)। আজ শুক্রবার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের (ইনু) জাতীয় কমিটির বৈঠকেও জোটের ভূমিকা ও নির্বাচনের বিষয়ে দলের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। এ মাসের মধ্যে অন্য দলগুলো- ওয়ার্কার্স পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাসদ, তরিকত ফেডারেশন, ন্যাপ, গণআজাদী লীগ দলীয় বৈঠকে জোটে দলের ভূমিকা, একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করবে।
সূত্র জানায়, জোট করার ফলে শরিকরা যে ধরণের সুযোগ সুবিধা পাবার কথা ছিল তা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ শরিকরা। তারা আশা করেছিল একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তাদের অনেকগুলো আসনে মনোনয়ন দেবে। এছাড়া মন্ত্রিসভাতেও তাদের অংশগ্রহণ বাড়বে। কিন্তু তা হয়নি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ শরিকরা।
এদিকে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা, মন্ত্রীত্ব পাওয়ার পরেই দল গোছিয়ে শক্তিশালী হতে পারেনি শরিকদের কেউই। অনেকের অফিসও নেই; ঠিক নেই কেন্দ্রীয় কমিটির। ক্ষমতার অংশীদার হয়ে সচিবালয়ে দৌড়াদৌড়ি করে কয়েক নেতা সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। কিন্তু দলের কোন খোঁজ খবর রাখেননি তাই দলের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ আর কোন্দল বিরাজ করেছে। দলের রাজনীতি নষ্ট হয়েছে, হারিয়েছে গ্রহণযোগ্যতা। সচিবালয়ে অনেক নেতাকেই তদবিরবাজ, এমনকি দালাল বলেও তিরস্কার শুনতে হয়েছে অনেককে। এর মধ্যেই জাসদ ভেঙে দুইটি হয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টিও ভাঙনের দারপ্রান্তে। অন্য দলগুলোও অস্তিত্ব সংকটে।
এমনাবস্থায় জোটে শরিকদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে দলগুলো। পাশাপাশি দলের রাজনীতি পুনরুদ্ধার করতে চায় শরিকরা। জোট ভেঙ্গে গেলে কি করণীয় তা নিয়েও আলোচনা চলছে দলগুলোতে।এ নিয়ে আজ শুক্রবার সকাল ১১ টায় জাসদ জাতীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভায় নির্বাচনোত্তর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, আগামী উপজেলা নির্বাচন ও সাংগঠনিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হবে।
জাসদের সাধারণ সম্পক শিরীন আখতার ইনকিলাবকে বলেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে দলের অবস্থান, নির্বাচনোত্তর রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী দিনের পরিকল্পনা, উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা হবে সভায়।
নির্বাচনের বিষয়ে বাংলাদেশ জাসদের (আম্বিয়া) অবস্থানের ব্যাপারে তিনি বলেন, জোটের বিষয়ে এমন কোন মন্তব্য করা ঠিক নয় যেখানে সম্পর্ক নষ্ট হয়। তবে সত্য কথা বলা থেকে বিরত থাকাও পছন্দনীয় নয় বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাসদের কেন্দ্রীয় একজন নেতা ইনকিলাবকে বলেন, ১৪ দলীয় জোটের উদ্যোক্তা হচ্ছে জাসদ। ২০০৪ সালে জোট গঠনের আগেই জাসদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের একটি চুক্তি হয়েছিল। যাতে একই সঙ্গে আন্দোলন, নির্বাচন ও সরকার গঠনের কথা বলা ছিল। এ বিষয়টি থেকে বর্তমানে আওয়ামী লীগ পিছু ফিরছে। জাতীয় কমিটির আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে এটি। এছাড়া গত নির্বাচনে ভোট নিয়ে নানা প্রশ্নের বিষয়ে দলের অবস্থান ব্যক্ত করা হবে। দুই জাসদ অর্থাৎ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (ইনু) ও বাংলাদেশ জাসদ (আম্বিয়া) এক হবার বিষয়ে আলোচনা হবে।
এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভর্তিসহ নানা অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (আম্বিয়া)। একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি জানায়, এজন্য প্রশাসনে অতি উৎসাহী একটি অংশ দায়ী। ১ ও ২ ফেব্রæয়ারি বাংলাদেশ জাসদের জাতীয় কমিটির সাধারণ সভায় একাদশ সংসদ নির্বাচনকে এভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
আরো বলা হয়, দেশের সব রাজনৈতিক দল ও জনগণ উদ্দীপনা ও আশা নিয়ে অংশগ্রহণ করলেও নির্বাচনের পরে বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হয়েছে গোটা জাতি। এর মূল কারণ প্রশাসনের এক শ্রেণীর অতি উৎসাহী অংশ ভোটের আগের রাতেই ভুয়া ভোটের মাধ্যমে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখাসহ নানা অনিয়ম সংঘটিত করেছে।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটের জয় এই নির্বাচনে ‘নিশ্চিত’ ছিল উল্লেখ করে বলা হয়, জনগণের ভোটের মাধ্যমে ১৪ দল তথা মহাজোটের নিশ্চিত বিজয় জেনেও যে মহল বিশেষ এ অপকর্ম করেছে, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থেই তাদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। কেননা, এ কলঙ্কিত ঘটনার মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। এ কলঙ্কের দাগ মুছতে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে অন্যান্য শরিক দলের নেতারাও নির্বাচন নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেছেন। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, নির্বাচনে কলঙ্কের কালি লাগলে তা সবার গায়েই লেগেছে।
গণতন্ত্রী পার্টির সূত্র জানায়, আগামী মাসে দলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আগামী দিনের দলের কর্ম-পরিকল্পনা। দলের অনেকে জোট থেকে বের হবার পক্ষে বলছেন বলে জানান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রেসিডিয়াম মেম্বার ইনকিলাবকে বলেন, দলের কয়েক নেতা জোটের কারণে লাভবান হয়েছেন কিন্তু দলের রাজনীতি নষ্ট করে দিয়েছেন। কোন কাজে সচিবালয়ে গেলে অনেকেই টিটকারি করেন। তদবিরবাজ, দালাল বলেও অনেক যাচ্ছে তাই মন্তব্য শুনতে হয় অনেককেই। তাই দলের ভবিষ্যত কি হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।