নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টম মুডি, মাহেলা জয়াবর্ধনে, ল্যান্স ক্লুজনার, ওয়াকার ইউনুস- অনেক নামকরা বিদেশী কোচরা এবার দায়িত্বে ছিলেন বিপিএলের বিভিন্ন দলের। তবে তাদের সবাইকে ছাপিয়ে শেষ লড়াইয়ে উঠেছেন দুই দেশি কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আর খালেদ মাহমুদ সুজন। আজ সন্ধ্যায় বিপিএলের ৬ষ্ঠ আসরের ফাইনালে নামবে ঢাকা ডায়নামাইটস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই দুই দলকে নিজেদের ট্যাকটিক্স দিয়ে যারা টেনে এনেছেন সেই সালাউদ্দিন আর মাহমুদও তাই ফাইনালের আগে এসেছেন আলোচনায়। সাকিব আল হাসান-তামিম ইকবাল কিংবা আন্দ্রে রাসেল-শহীদ আফ্রিদীর দ্বৈরথের পাশে তাই দুই ট্যাকটিশিয়ানের লড়াইয়ের ঝাঁজও উঠছে বিপিএলের ফাইনালে।
বিপিএলে ঢাকা ও কুমিল্লা ছাড়া বাকি পাঁচ দলের কোচই ছিলেন বিদেশী। গত মৌসুমে রংপুর রাইডার্সের শিরোপা জয়ী কোচ টম মুডি দায়িত্বে ছিলেন এবারও। আইপিএল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সফল কোচ তিনি, ক্রিকেট বিশ্ব জুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগগুলোয় তার চাহিদা প্রবল। খুলনা টাইটানসের কোচ ছিলেন মাহেলা জয়াবর্ধনে, সিলেট সিক্সার্সের ওয়াকার ইউনিস। কোচ হিসেবে পরিচিতি ও সাফল্য আছে এই দুজনেরও।
চিটাগং ভাইকিংসের দায়িত্বে ছিলেন সাইমন হেলমট। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তিনি পরিচিত হাই পারফরম্যান্স প্রোগ্রামের প্রধান কোচ হিসেবে। তবে টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতেও তিনি নিয়মিত মুখ। বিগ ব্যাশে মেলবোর্ন রেনেগেডসের কোচ ছিলেন, আইপিএলে সহকারী কোচ, দেখা যায় পিএসএলেও। দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেট ও জিম্বাবুয়ে জাতীয় দলে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতার পর এবার রাজশাহী কিংসের দায়িত্বে ছিলেন সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার ল্যান্স ক্লুজনার।
টুর্নামেন্টের পথচলায় ক্রমে ঝরে গেছেন তারা সবাই। শেষের লড়াইয়ে টিকে রয়েছেন দেশের দুই কোচ। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে বরাবরই নামিদামি কোচ হিসেবে খ্যাত দুজনই। ক্লাব পর্যায়েও আছে তাদের সুনাম। এবার বিপিএলের সেরা হবার মঞ্চে লড়াই নামার আগে ভিক্টোরিয়ান্স কোচ সালাউদ্দিন এই ব্যাটেলে বরং দেখছেন দেশি কোচদের লাভ, ‘দেশি কোচদের জন্য অনেক লাভ হবে আমি আশা করি। আমার মনে হচ্ছিল দিনকে দিন... প্রথমবার যেভাবে শুরু হয়েছিল আস্তে আস্তে কিন্তু দেশি কোচরা হারিয়ে যাচ্ছিল। সহকারী কোচ যারা ছিল তাদেরও কাজের পরিধি কমে যাচ্ছিল। আমার মনে হয় যেহেতু আমরা দুজন ফাইনালিস্ট। ফ্র্যাঞ্চাইজি হয়ত পরবর্তীতে চিন্তা করবে আমাদের দেশি কোচদের আরেকটু সুযোগ দেয়া উচিত। আমরা ভাল করলে আমাদের দেশি কোচদের অনেক লাভ। আমি সবসময় চাই আমাদের কোচরা যেন ভাল জায়গায় কাজ করে এবং শিখতে পারে। অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজিতে সহকারী কোচও নাই দেশি, যদি দেশি কোচ থাকতো তাহলে তাদের কাছ থেকে কিছু শিখতে পারত। পরবর্তীতে হয়ত চিন্তা করবে সুযোগ দিলে দেশি কোচরাও ভাল করতে পারে।’
দেশি কোচদের লাভক্ষতির বাইরেও নিজেদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের তাড়নাও হয়ত এই ম্যাচ। এবার বিপিএলে দুই দেখাতেই সালাউদ্দিনের কুমিল্লা রোমাঞ্চকর ম্যাচে হারায় মাহমুদের ঢাকাকে। প্রথম লড়াইয়ে ৭ রানে জেতার পর কুমিল্লা শ্বাসরোদ্ধকর লড়াইয়ে পরেরটি জেতে মাত্র ১ রানে। ফাইনালও জিতে গেলে একটা জায়গায় খালেদ মাহমুদকে ৩-০ ব্যবধানে হারানো হয়ে যাবে সালাউদ্দিনের। তবে বিনয়ী সালাউদ্দিন এক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ কোচকেই রাখলেন এগিয়ে, ‘এখানে এভাবে দেখার কোনো সুযোগ নাই। কারণ সুজন ভাই অনেক বড় মাপের কোচ। তার অনেক কোয়ালিটি আছে। সে অনেক কিছু দেখতে পারে আমি হয়ত সে তুলনায়... আমি নিজেকে কখনো তুলনা করি না এই জায়গাটায়। আমার মনে হয় এই জিনিসটা না বললেই আমার জন্য ভাল।’
বিপিএল সাফল্যের পর পুরোনো প্রশ্নটিও নতুন করে উঠে আসছে আবার, দেশের কোচদের জাতীয় পর্যায়ে কতটা মূল্যায়ন করছে বিসিবি? অন্তত সহকারী কোচ হিসেবে দেশের কোচদের রাখলে ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তোলা যায়, এই দাবি উঠছে অনেক দিন থেকেই। সালাউদ্দিনের আশা, এদিকে নজর দেবে বিসিবি, ‘জাতীয় দলের ব্যাপারটা একটু আলাদা। এখানে চাপ অনেক বেশি থাকে। তারপরও আস্তে আস্তে হয়ত এই চাপও আমাদের স্থানীয় কোচরা নিতে পারবে। আমি আশা করব যে, বয়সভিত্তিক দলগুলিতে, বিশেষ করে অনূর্ধ্ব-১৭, ১৯ বা ‘এ’ দলে আমাদের স্থানীয় কোচদের সুযোগ দেয়া উচিত। আমরা সবসময় শুনে থাকি, আমরা পারব না, স্থানীয় কোচরা পারবে না। এটি আসলে ভুল ধারণা। আপনি যখন সুযোগ দেবেন, তখন হয়ত তারা ভালো কিছু করে দেখাতে পারবে।’
দুই দলের সামনে যেমন ‘দ্বিতীয়’ (গ্লাডিয়েটর্স আর ডায়নামাইটস মিলে চতুর্থ) শিরোপার হাতছানি, তেমনি দুই কোচও অপেক্ষায় দ্বিতীয়বার ট্রফির ছোঁয়া পাওয়ার। ২০১৫ বিপিএলে সালাউদ্দিনের কোচিংয়ে শিরোপা জিতেছিল কুমিল্লা, ২০১৬ আসরে মাহমুদের কোচিংয়ে জিতেছিল ঢাকা। ২০১২ ২০১৩ বিপিএলে ঢাকা ফ্র্যাঞ্চাইজি চ্যাম্পিয়ন হলেও মালিকানা বদলে ডায়নামাইটস নাম নেওয়ার পর ঢাকার শিরোপা ওই একটিই। আজ তৃতীয় শিরোপায় কে হাত রাখে সেটিই দেখার!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।