পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরুণ চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে স্ত্রী ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুসহ তার পরিবারের ছয় সদস্যকে আসামি করে মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ডা. আকাশের মা বাদী হয়ে নগরীর চান্দগাঁও থানায় এ মামলা দায়ের করেন। তার আগেই বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর নন্দনকানন এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে মিতুকে আটক করে পুলিশ।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মিতুকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মামলায় তার বাবা-মা ও ভাইসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এদিকে নগর পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আত্মহত্যার আগে ডা. আকাশ ফেইসবুকে স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়া বা বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের যেসব অভিযোগ করে গেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গতকাল সকালে দামপাড়া পুলিশ লাইনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আকাশের স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) মিজানুর রহমান বলেন, আত্মহত্যার ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে ওই দম্পতির মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিতু কিছু কিছু বিষয় আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। আবার কিছু বিষয় এড়িয়ে গেছেন। আমরা ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে খতিয়ে দেখব।
তিনি বলেন, বছর তিনেক আগে প্রেম করে বিয়ে করেন আকাশ ও মিতু। বিয়ের পরপরই মিতু অমেরিকা চলে যান। তখন থেকেই বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ নিয়ে দুজনের মধ্যে বিরোধ চলছিল। গত ১৩ জানুয়ারি মিতু দেশে আসার পর তা আরও বেড়ে যায়। বুধবার রাতে এ নিয়ে তাদের হাতাহাতিও হয়। সেদিন রাতেই মিতুর বাবা এসে আকাশদের বাসা থেকে মেয়েকে নিয়ে যান। ভোরের দিকে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেন আকাশ।
পুলিশ কর্মকর্তা মিজান বলেন, মিতুর ব্যাপারে আকাশ কিছু পোস্ট দিয়েছেন, আর তার পরিবারের কাছ থেকে আমরা যেসব তথ্য পেয়েছি, সেগুলো যাচাই করার জন্য আমরা মিতুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আকাশ তার পোস্টে মিতুর যেসব বন্ধুর নাম বলে গেছেন, তাদের বিষয়েও পুলিশ তদন্ত করবে বলে জানান তিনি।
৩২ বছর বয়সী আকাশ চট্টগ্রাম মেডিকেলের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসায় ইনজেকশনের মাধ্যমে নিজের শরীরে বিষ প্রয়োগ করে তিনি আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার আগে ফেইসবুকে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক পুরুষের সাথে পরকীয়া এবং তার সাথে প্রতারণার অভিযোগ করে যান। এর প্রমাণ হিসেবে মিতুর সঙ্গে তার বন্ধুদের বেশ কিছু ছবিও তিনি ফেইসবুকে তুলে দিয়ে যান।
ডা. আকাশ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বাংলাবাজার বরকল এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর টিউশানি করে নিজের পড়ার খরচ চালিয়েছেন মেধাবী ছাত্র আকাশ। নগরীর চকবাজারে ত্রি-ডক্টরস নামে তার একটি কোচিং সেন্টার আছে। তাদের বাসা নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ২ নম্বর সড়কের ২০ নম্বর বাড়িতে। তার স্ত্রী মিতুও চিকিৎসক। তিনি কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আমেরিকায় যান।
ডা. মিতু কারাগারে
এদিকে ডা. আকাশের মায়ের মামলায় গ্রেফতার ডা. মিতুকে বিকেলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়। মহানগর হাকিম আদালতে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয় বলে জানান নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী মো. শাহাবুদ্দিন। আকাশের মা জোবেদা খানম বাদী হয়ে দন্ডবিধির ৩০৬ ধারায় মামলা করেন। মামলায় মিতু ছাড়া আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- মিতুর বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, মা মোছাম্মৎ শামীমা শেলী ও বোন সানজিলা হক চৌধুরী, মিতুর কথিত দুই বন্ধু ডা. মাহবুবুল আলম এবং আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনায় বসবাসরত ভারতীয় নাগরিক প্যাটেল। মামলার এজাহারে বলা হয়-আসামিরা মানসিক যন্ত্রণা ও উত্তেজনা সৃষ্টির মাধ্যমে আকাশকে আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মৃত্যুমুখে পতিত করে। এজাহারে বলা হয়- আকাশের সঙ্গে বিয়ের আগে মিতুর সম্পর্ক ছিল ডা. মাহবুবুল আলমের সঙ্গে। বিয়ের পর আমেরিকায় গিয়ে সম্পর্কে জড়ান প্যাটেলের সঙ্গে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।