পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বঙ্গোপসাগরে বিদেশি ট্রলারে মাছ চুরি ও লোপাট থামছেই না। প্রতিবেশী দেশ ভারত, মিয়ানমার ছাড়াও শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী মাছ শিকারি ট্রলার-নৌযানগুলো বিভিন্ন জাতের মাছ ধরে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
বিদেশি এসব ট্রলার খুবই ক্ষিপ্র গতিসম্পন্ন হওয়ায় হঠাৎ করে এসেই ইলিশসহ হরেক জাতের মাছ চুরি করে দ্রুতই আবার নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। আবার অনেক ট্রলার নৌযান দেশীয় জেলেদের ছদ্মবেশে সমুদ্রসীমায় ঢুকে মাছ ধরে নিচ্ছে। অন্যদিকে দেশীয় জেলেরা সমুদ্রে গিয়ে বেশ কয়েকদিন ট্রলার নৌযান নিয়ে ঘোরাঘুরি করেও আশানুরূপ পরিমানে মাছ না পেয়ে ফিরছেন হতাশ হয়ে। তারা বঙ্গোপসাগরে মূল্যবান মৎস্য সম্পদ সুরক্ষায় কোস্টগার্ড ও নেভীর নিয়মিত জোরদার টহলের তাগিদ দিয়েছেন। তাছাড়া গত ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত ‘সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন ও অবৈধ মৎস্য আহরণ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় ভারত ও মিয়ানমারের যে কোনো ট্রলার অবৈধ অনুপ্রবেশ করলে সঙ্গে সঙ্গে তা আটক করার জন্য বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী ও কোস্টগার্ডের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু। তিনি বলেন, বিদেশি ট্রলারগুলোর অবৈধ অনুপ্রবেশ ও মাছ শিকার আমাদের দেশের আমাদের সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের জন্য একটি বড় সমস্যা। এ সমস্যা এখনই মোকাবেলা করতে হবে। কোনো ভাবেই যাতে বিদেশি ট্রলার দেশের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।
এদিকে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি (মাঘ-ফাল্গুন) বর্তমান সময়টা মাছ শিকারের জন্য বঙ্গোপসাগরের ‘শান্ত’ মৌসুম। এখন কোনো ধরনের নিম্নচাপ ও সতর্ক সঙ্কেত নেই। মাছ শিকারের এই উপযুক্ত সময়েই বঙ্গোপসাগরে বিদেশি ট্রলারের উৎপাত বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, বেপরোয়া মাছ শিকারের কারণে সমুদ্রে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন পরিবেশ ও মজুদের ভারসাম্য বিপন্ন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের নিজস্ব পানিসীমায় অনুপ্রবেশকারী বিদেশি ট্রলার-নৌযানে নির্বিচারে মাছ শিকার ও লোপাট দমনের জন্য কোস্টগার্ড এবং নৌ-বাহিনীর টহল তৎপরতা আছে। তবে তা নিয়মিত এবং আরও জোরালো করার দাবি জানিয়েছেন মৎস্যজীবীরা।
এ মৌসুমে দেশের সমুদ্রসীমায় ইলিশ, চিংড়ি, রূপচান্দা, কালাচান্দা, লাক্ষা, কোরাল, সুরমা, পোয়া, সুন্দরী, মাইট্টা, লটিয়া, ছুরি, বাইলাসহ অনেকগুলো প্রজাতির সুস্বাদু ও অর্থকরী মাছ ধরা পড়ে জেলেদের জালে। সাগরে মৎস্যসমৃদ্ধ বিভিন্ন এলাকায় বিদেশি অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ট্রলার-নৌযানগুলো এসব মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। দ্রæত গতিসম্পন্ন ইঞ্জন ব্যবহার এবং দেশীয় জেলেদের মতো করে এসে মাছ ধরার কারণে অনেক সময়েই অনুপ্রবেশকারী অবৈধ ট্র্রলার নৌযানগুলো সমুদ্রে সহজে শনাক্তও করা সম্ভব হয় না। এরফলে প্রতিনিয়ত সমুদ্রসীমা থেকে চুরি হচ্ছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন জাতের মাছ। আর তা সমুদ্র পথে সরাসরি ভারত ও মিয়ানমারে পাচার করছে মাছ চোরাকারবারীরা। এর বিনিময়ে আসছে ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ সর্বনাশা হরেক রকমের মাদকদ্রব্য।
নির্বিচারে মাছ চুরির কারণে বঙ্গোপসাগরে মাছের স্বাভাবিক মজুদ ক্রমেই ফুরিয়ে আসছে। বংশ বিস্তার এবং বিচরণের পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। সাগরে মাছের বিচরণ ক্ষেত্রগুলোতে এখন আগের মতো মাছ ধরা পড়ে না। এক সপ্তাহের ট্রিপে গিয়েও দেশীয় জেলেরা অনেক সময় অল্পস্বল্প মাছ নিয়ে ফিরে আসে। বাজারে আগের মতো সামুদ্রিক মাছের পর্যাপ্ত জোগান নেই।
উপকূলের মৎস্যজীবীরা জানান, টেকনাফ সেন্টমার্টিন দ্বীপ-শাহপরীর দ্বীপসহ কক্সবাজার উপকূল থেকে শুরু করে চট্টগ্রামের বহির্নোঙ্গর, আনোয়ারা, বাঁশখালী, স›দ্বীপ চ্যানেল, হাতিয়া, রামগতি, নিঝুমদ্বীপ, ভোলা, চরফ্যাশন, বরগুনা, পাথরঘাটা, চরকুকরি মুকরি, রাঙ্গাবালি, সুন্দরবন, দুবলার চরাঞ্চল, রায়মঙ্গল এলাকা মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ। এসব এলাকার কাছাকাছি ও গভীর সমুদ্রে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বিদেশি ট্রলার-নৌযানগুলো সুযোগ বুঝে মাছ চুরি করে নিয়ে যায়। এভাবে চোরা ট্রলার নৌযানে মাছ চুরি ও পাচার কঠোর হাতে বন্ধ না হলে বঙ্গোপসাগরে মাছের প্রজনন, বিচরণ ও উৎপাদনশীলতা তলানিতে চলে যাবে। তখন ভরা মৌসুমেও জেলেদের শূণ্য হাতে সমুদ্র থেকে ফিরে আসতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।