পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিনি পার্লামেন্ট হিসেবেই পরিচিত ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। প্রতিষ্ঠার পর ডাকসুর নেতারা জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারাই ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ কিংবা ৯০’র গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। অথচ গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ এই মিনি পার্লামেন্টের নির্বাচন। ৯০’র পরবর্তী সময়ে ৫ বার নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েও শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অবশেষে ২৮ বছর পর হাইকোর্টের নির্দেশনার কারণে আগামী ১১ মার্চ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। গতকাল (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ডাকসু নির্বাচনের ভোটার, ভোট কেন্দ্র, নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়ন ও গঠনতন্ত্র সংশোধনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।
দীর্ঘ বিরতির পর এই নির্বাচনকে আনন্দের ও প্রত্যাশার বলে মনে করেন ডাকসুকে নেতৃত্ব দেয়া সাবেক নেতা এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ডাকসুর সাবেক ভিসি প্রফেসর মাহফুজা খানম বলেন, ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে এই খবর অত্যন্ত আনন্দের। দীর্ঘদিন পর প্রত্যাশিত এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন হচ্ছে। এর আগেও কয়েকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হয়নি, যেটা আমাদের আশাহত করেছে। তিনি বলেন, গত ২৮ বছরে দেশ ডাকসুর ৫৬ জন নেতাকে হারিয়েছে। অর্থাৎ গত ২৮ বছরে যদি নির্বাচন হতো, তবে প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি মিলে মোট ৫৬ জন যোগ্য নেতা দেশে তৈরি হওয়ার সুযোগ পেতো।
সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত: ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রস্তাবনার আলোকে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়ন ও গঠনতন্ত্র সংশোধনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ি প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে যেসব শিক্ষার্থী স্নাতক, স্নাতকোত্তরসহ এম.ফিল এ অধ্যয়নরত কেবলমাত্র তারাই আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবেন। এবারের ডাকসু নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থীতার বয়স সীমা রাখা হয়েছে ৩০ বছর। মিটিং শেষে এতথ্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. এনামুজ্জামান।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেটে ডাকসু নির্বাচনে সান্ধ্যকালীনসহ অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা ভোটার হতে পারবেন না, ভোটকেন্দ্র হলেই স্থাপন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া ডাকসুতে নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে বলেও সাংবাদিকদের জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। এসময় নির্বাচনে প্রচারণার বিষয়ে এনামুজ্জামান বলেন, মাইকের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো যাবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমোদিত ব্যক্তিরাই ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। নির্বাচনে নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনে হলগুলোতে বর্তমান সিসিটিভি ক্যামেরার বাইরেও আরো বাড়তি সিসিটিভি বসানো হবে। নির্বাচন নিয়ে যে কোন গঠনমূলক সমালোচনা করা যাবে।
ক্যাম্পাসে নির্বাচনী হাওয়া: এদিকে অবশেষে প্রত্যাশিত সেই নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সরগরম হয়ে ওঠেছে। চায়ের টেবিল থেকে সর্বত্রই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ডাকসু নির্বাচন। যদি নির্বাচনের পরিবেশ, নির্বাচনে সব ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণের সুযোগ, সুষ্ঠু ভোট, ভোট প্রদানের বিষয় নিয়ে অনেকের মধ্যে রয়েছে সংশয়ও। শিক্ষার্থীদের আলোচনাতেও তাই থাকছে নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন কারা? জাতীয় নির্বাচনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কেমন হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে পারবে কিনা? সব ছাত্র সংগঠনের প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ, প্রচার-প্রচারণায় সমান সুযোগ পাবে কিনা? ইত্যাদি বিষয়েই আলোচনা চলছে।
যদিও শিক্ষার্থীরা তাদের আলোচনাতেই বলছেন, এসব অনিশ্চয়তা দূর করার মূল দায়িত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগ্রহ থাকলে শুধু হবে না, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে এটি সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের। এ লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন ও বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। কিন্তু এসব আলোচনায় সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যেসব প্রস্তাব এসেছে, তা গ্রহণ করার সদিচ্ছা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মধ্যে এখনো দেখা যাচ্ছে না। যেমন হলগুলোয় ছাত্রলীগের একচ্ছত্র অবস্থান এবং দাপটের কারণে ছাত্রলীগ ও জাসদ ছাত্রলীগ বাদে বাকি সব সংগঠন একাডেমিক ভবনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের যুক্তি, হলে সহাবস্থানের কোনো পরিবেশ নেই, এখানে নির্ভাবনায় ভোট দেওয়ার সাহস পাবেন না আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা, ভোট দিতে আগ্রহী হবেন না অনাবাসিক ছাত্রছাত্রীরা।
সরকার দল সমর্থিক শিক্ষক, ছাত্রলীগ ও জাসদ ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য দল মতের শিক্ষক ও ছাত্র নেতারা বলছেন, নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত না করা হলে অন্য ছাত্রসংগঠনগুলো নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সুযোগ পাবে না। একাডেমিক ভবনগুলোতে ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা না করলে, ভোটকেন্দ্রে সব ধরনের মতামতের শিক্ষকদের দায়িত্ব না দিলে এবং ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত না করা হলে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ভোটদানে ভীতি ও অনীহা দূর হবে না। এসব লক্ষ্যে এখনো কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। বরং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে শিক্ষকদের নিয়ে যে তিনটি কমিটি গঠন করেছে, দু’একজন বাদে তার সব সদস্য সরকারি দলের সমর্থক প্যানেলে নির্বাচন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কথায় ছাত্রলীগ বাদে অন্য কারও মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী সাদা দলের শিক্ষকরা বলছেন, ডাকসু নির্বাচন কেমন হবে বা আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ কাটছে না অনেকের। অল্প কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিভিন্ন গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ডাকসু নির্বাচন এভাবে অনুষ্ঠানের কোনো চিন্তা কারও মধ্যে থাকলে তা ডাকসুর প্রতিনিধিত্বশীল চরিত্রকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করবে।
ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রস্তুতি: ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সব ছাত্র সংগঠনই আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এককভাবেই নির্বাচনে প্যানেল দেবে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। প্রগতিশীল বাম ছাত্র সংগঠনগুলোও পৃথক প্যানেলে নির্বাচনে যাবে। অন্যদিকে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও ডাকসু নির্বাচনে তাদের ছাত্র সংগঠনের প্যানেল দেয়ার বিষয়ে স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এজন্য দলের প্রচার সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত না হলে তারা ভিন্ন চিন্তাও করতে পারে। এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে গড়ে উঠা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদও নির্বাচনে প্যানেল দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নেই উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার বলেন, প্রশাসন ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি। কর্মসূচি পালনতো দূরের কথা আমাদের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে আসতেও পারেনা। তারা বিভিন্ন সময় ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এসেও হামলার স্বীকার হয়েছে।
প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক সালমান সিদ্দিকি বলেন, প্রশাসন যে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি সেটার বড় প্রমাণ হলো হলগুলো এখনও প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি। হলের সিট বণ্টন থেকে শুরু করে সবকিছু ছাত্রলীগ করে। হলে ভোট কেন্দ্রের বিরোধীতা করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি বলেন, হলগুলোতে সিট দেয়া থেকে শুরু করে সব কিছু করে ছাত্রলীগ। হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করলে শিক্ষার্থীদের ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের মনে শঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা প্রগতিশীল ছাত্রজোটের পক্ষ থেকে হলের বাইরে কেন্দ্র স্থাপন করার দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন যদি শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া মেনে নিয়ে হলের বাইরে ভোট কেন্দ্র স্থাপন না করে আমাদের বুঝতে হবে একটি পাতানো নির্বাচনের দিকে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। এবং সে ধরণের নির্বাচনের অংশ আমরা হবো না।
ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, গণরুমগুলো যদি প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারে তাহলে তাদেরকে ব্যবহার করা হবে এটা শতভাগ নিশ্চিত। এক্ষেত্রে আমরা নির্বাচনের আগে গেস্টরুম সংস্কৃতি বন্ধ করে গণরুম প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের অধিকার বঞ্চিত করে সরকারি ছাত্র সংগঠনের ছত্র ছায়ায় বহিরাগতদের একটি অংশ সবসময় থাকে। এর আগে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন যৌক্তিক আন্দোলনে আমরা বহিরাগতদের ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনা দেখেছি। তাই নির্বাচনে এদেরকে ব্যবহার করে একটি প্রভাব খাটানোর শঙ্কা থাকে।
কমিটিতে সরকারদলীয়দের প্রাধান্য: ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে গঠনতন্ত্র সংশোধন, আচরণ বিধি প্রণয়নের জন্য গঠন করা হয় আলাদা দুটি কমিটি। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের প্রফেসর ড. এস এম মাহফুজুর রহমানকে চীফ রিটার্রিং অফিসার করে ১৫ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। এসব কমিটির অধিকাংশ শিক্ষকই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের রাজনীতির সাথে জড়িত। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, উপদেষ্টা কমিটি থেকে শুরু করে সব কমিটিতেই নীল দলের শিক্ষকদের প্রাধ্যান্য। ১৫ জন উপদেষ্টার মধ্যে সাদা দল থেকে রাখা হয় মাত্র দুজন। এসব আচরণ নির্বাচনের শুরুতেই বৈষম্যের ইঙ্গিত দেয়। কর্তৃপক্ষ সব দলের আস্থা অর্জন করতে পারেনি উল্লেখ করে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ছাত্রদলের আল মেহেদী তালুকদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকান্ড দেখে আমাদের শঙ্কা হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের মত ডাকসু নির্বাচনেও কারচুপির আশ্রয় গ্রহণ করা হবে। নির্বাচন কেন্দ্রীক যতগুলো কমিটি করা হয়েছে সবগুলোতে নীল দলের শিক্ষকদের প্রাধান্য। তবুও আমরা আশা করব শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া মেনে নিয়ে প্রশাসন একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে।
ডাকসু নির্বাচন যেন ৩০ ডিসেম্বরের পুনরাবৃত্তি না হয় মন্তব্য করে দুইবারের নির্বাচিত সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ডাকসু নির্বাচন যেন প্রহসনের না হয়, সেটাই প্রত্যাশা করছি। ৩০ ডিসেম্বরের মতো ভোটের পুনরাবৃত্তি চাই না। সব ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মতামতের ভিত্তিতে ডাকসুতে একটি কার্যকর ও প্রতিনিধিত্বশীন নির্বাচন দেখতে চাই। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে এটা শুভ সংবাদ। কিন্তু নির্বাচনে যেসব ছাত্রছাত্রী বা বিভিন্ন মতের সংগঠনগুলো অংশ নেবেন তাদের মধ্যে উদ্বেগের সঞ্চার হয়েছে, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে কি না প্রশ্নে। এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নেই। বিভিন্ন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হলেও থাকতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কিংবা মধুর কেন্টিনেও যেতে পারছেন না তারা। সভা-সমাবেশও করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, হলগুলোতে দখলদারিত্ব চলছে। প্রচুর পরিমাণে বহিরাগত রয়েছে। সেখানে শুধু সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করছে। আর কারও প্রতিনিধিত্ব নেই। এ জন্য সবাই মিলে দাবি তুলেছে, হলে যাতে ভোট না হয়। ভোট যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে হয়। এ সম্পর্কেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সবকিছু মিলে ডাকসু নির্বাচন সত্যি সত্যি কি অর্থবহ হবে এমন পরিবেশ দৃশ্যমান হচ্ছে না।
অন্যরা নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও ডাকসুর সাবেক ভিসি ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর নির্বাচনের দিন ঠিক হয়েছে। আমি সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে এসে দেখলাম নির্বাচনের পরিবেশও তৈরি হয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে। আর যারা ভিপি হবে তারা পরবর্তীতে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কারণ যারা ছাত্র সংসদের নেতা হয় তারা দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপ‚র্ণ ভ‚মিকা পালন করে। এজন্য শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হওয়া উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সহাবস্থান রয়েছে দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, নির্বাচন নিয়ে যতগুলো কাজ আছে আমরা ধারাবাহিকভাবে সেগুলো করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহাবস্থান আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যখন যারা আমাদের কাছে সহযোগিতা চাচ্ছে আমরা তাদের সহযোগিতা করছি।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।