পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবার প্রতিনিধি নির্বাচন হয়। সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো ৩য় শ্রেণী কর্মচারীদের সংগঠন ‘কর্মচারী সমিতি’ ও ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারীদের সংগঠন ‘কর্মচারী ইউনিয়ন’র নির্বাচন। এছাড়া আগামী ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘শিক্ষক সমিতি’র নির্বাচন। অন্যদিকে অফিসার সমিতির নির্বাচনেরও কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের সমস্যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে দেন-দরবার এমনকি দাবি আদায়ে আন্দোলনও করতে দেখা যায়। সর্বশেষ শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ভাতা ১৫% কমানোর প্রতিবাদে আদালতে রিট করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শিক্ষক সমিতি’। এইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা প্রতিনিধি নির্বাচন করে তাদের দাবি দাওয়া আদায়ে পদক্ষেপ নিতে পারলেও শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে কথা বলার কেউ নেই।
কারণ গত ২৬ বছর ধরে বন্ধ আছে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নির্বাচন ‘জাকসু’। বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা ‘জাকসু’ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে ভিসি প্রফেসর আনোয়ার হোসেনের সময় ‘জাকসু’ সচলের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। বর্তমান ভিসি প্রফেসর ফারজানা ইসলামও বার বার ‘জাকসু’ কার্যকর করার আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছেন। কিন্তু কোন আশ্বাসই সফলতার মুখ দেখেনি। তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে ঘোষণা দিয়েছিলেন- ‘আবারও জাবির ভিসি হিসেবে দায়িত্বে আসলে ‘জাকসু’ কার্যকর করবেন।’ এছাড়া দীর্ঘ ২২ বছর পর অনুষ্ঠিত রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচনের পূর্বেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, ‘সিনেট নির্বাচনের পরেই ‘জাকসু’ নির্বাচনের আয়োজন করবেন।’ এরপর একবছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও এ বিষয়ে এখনও কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
যদিও তিনি বলেছেন, শিক্ষার্থীরা চাইলে আগামী বছর ‘জাকসু’ নির্বাচন করা সম্ভব হবে। কারণ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরপর বিভিন্ন নির্বাচন। এরপর মেগা প্রজেক্টটা শুরু করব। তারপর জাকসু ইলেকশনটা করব। তবে আগামী জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারির আগে সম্ভব না।
এদিকে জাকসু নির্বাচনের দাবিতেও আবারও সরব হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনসহ সব রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জাকসু নির্বাচনের বিষয়ে একমত হয়েছেন। তারা সবাই ‘জাকসু’ নির্বাচন চান। এই বিষয়ে তারা প্রশাসনকে যে কোন ভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছেন বলে ইনকিলাবকে জানিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের জাকসু নির্বাচন আয়োজনে কোন উদ্যেগ দেখা না যাওয়ায় তারা চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমন আভাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রথমে প্রশাসনের সাথে জাকসু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করবো। যদি প্রশাসন তাতে রাজি হয়ে তফসিল ঘোষণা করে, তাহলেতো খুব ভাল। আর যদি না হয় তাহলে আন্দোলনের মাধ্যমেই জাকসু নির্বাচন আদায় করে নিতে হবে। ’
বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা: ‘জাকসু’র গঠনতন্ত্রে উল্লেখ আছে ‘জাকসু’র লক্ষ্য হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্য সাংস্কৃতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিগত সহযোগিতা বাড়ানো। পড়াশুনার পাশাপাশি প্রকৃত নাগরিক রূপে ছাত্রদের গড়ে তোলা এবং তাদের মধ্য নেতৃত্বের উন্মেষ ঘটানো। কিন্তু ‘জাকসু’ কার্যকর না থাকায় এবং প্রশাসনের অবহেলায় ‘জাকসু’ ভবনের অবস্থা ভয়াবহ। অধিকাংশ সময় ভবনটিতে মাদক সেবনের আখড়া বসতে দেখা যায়। তবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পাঠস্থান হিসেবেও ভবনটি ব্যবহার করা হয়।
প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘জাকসু নির্বাচন করার ব্যাপারে প্রশাসনের আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমহল থেকে বার বার এই বিষয়ে দাবি উঠেছে। কিন্তু তারপরও প্রশাসনকে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। তাই আমরা মনে করি প্রশাসন আগ্রহ প্রকাশ করলেই জাকসু নির্বাচন করা সম্ভব।’
জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘প্রশাসনের সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ। সকল ছাত্রের সহাবস্থান নিশ্চিত করা উচিৎ এবং ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে তাদের চাহিদা অনুযায়ি জাকসু নির্বাচনের আয়োজন করলেই তাহলে কেবল লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব হবে।
জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘ছাত্র সংশ্লিষ্ট যে কোন আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাধারণ ছাত্রদের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। ‘জাকসু’ নির্বাচন আমরাও চাই। জাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকত বলেন, ‘জাকসু নির্বাচন আয়োজন করার পূর্বে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সকল ছাত্রের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।’ ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে আগামী তিন মাসের মধ্যে জাকসু নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।