পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে আবাসিক হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে ভোট নেয়ার দাবিতে সোচ্ছার ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল বাম ছাত্র সংগঠনগুলো। এ দাবিতে গতকাল সোমবার দুটি সংগঠন কর্মসূচি পালন করে। বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। অন্যদিকে বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয় মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে হলগুলোর বর্তমান অবস্থা ও সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে অনুষদে ভোটকেন্দ্র দেয়ার দাবি করে ছাত্র ফেডারেশন।
একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন, গেস্টরুম নির্যাতন বন্ধ করে প্রশাসনিকভাবে সিট বন্টন, বিগত ২৮ বছরের ছাত্র বিমুখী সকল সিদ্ধান্ত বাতিল ও শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে নির্বাচনের তাফসিল ঘোষণার দাবিতে বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্র সমাবেশ করে ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। সভাপতি ফয়েজ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব দাসের সঞ্চালনায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক আলমগীর কবির সুজন, বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকি, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির, ডাকসুর সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক নাসির-উদ-দৌজাসহ প্রগতীশীল ছাত্রজোটের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কোন ধরণের প্রহসন শিক্ষার্থীরা মেনে নিবে না উল্লেখ করে সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি জি এম জিলানী শুভ বলেন, গত আটাশ বছরে বিভিন্ন ক্ষমতার পালাবদলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সন্ত্রাসের চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। প্রশাসন যদি ডাকসু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে না পারে তাহলে নির্বাচন একটি প্রহসনে পরিণত হবে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ ধরণের কোন প্রহসনকে ছাড় দিবে না। এসময় তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের যে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে কোন অযুহাতে সেটা থেকে পিছু হটা চলবে না।
ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ৬২ শতাংশ হলের বাইরে অবস্থান করছে। তাদেরকে ভয় ভীতি প্রদর্শন করা হলে তারা হলের ভিতরে গিয়ে ভোট দিতে চাইবে না। নির্বাচনকে উৎসবমূখর করার জন্য অবশ্যই একাডেমিক ভবনে ভোট দিতে হবে। ছাত্র ইউনিয়নের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, চলমান ডাকসু নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় আমরাসহ অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন কয়েকটি দাবিতে এতমত হয়েছি। আমরা সকলেই জানি হলগুলোকে কিভাবে একটি সংগঠন তাদের রাজনীতি টিকিয়ে রাখার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তাই আমাদের সবার দাবি হলের বাইরেই ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। সমাবেশ থেকে একটি মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
বেলা ১টায় ডাকসু নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র, প্যানেল ভাবনাসহ নির্বাচনী আচরণবিধি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ছাত্র ফেডারেশন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদিক রেজা, ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক সৈকত আরিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর, ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আশরাফুল হক ইশতিয়াক, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির আবদুল্লাহ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে জাহিদ সুজন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের রাতে গেস্টরুম করা, দিনে মিছিলে যাওয়া রুটিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীরা উপায়হীনভাবে একাজ করতে বাধ্য। সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বে পরিপূর্ণ আবাসিক হলে ভোট কেন্দ্র রাখলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তাই আমরা ডাকসু নির্বাচনে হলে নয়, অনুষদে ভোট কেন্দ্র চাই। এই আহ্বানে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেছি। হলে একচেটিয়া দখলদারিত্ব ও ভীতিজনক পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীরা অনুষদে ভোট কেন্দ্র করার পক্ষে জোরালো সমর্থন দেন।
তিনি বলেন, ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে যারা ভুলুণ্ঠিত করে চলছে, আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ছেড়ে দিয়ে সুষ্ঠু ভোট করবে তা কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমরা মনে করি, ছাত্রলীগের মতো দখলদার সংগঠন এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি বাদে আপামর ছাত্রসমাজ, প্রগতিশীল ছাত্র জোট, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য, আদিবাসী সংগঠনসমূহ, শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন আন্দোলনের কর্মী, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, পাঠচক্র সংগঠন, ক্রীড়া পারদর্শী, বিতার্কিক, শিল্পীদেরকে নিয়ে ৩৮ হাজার শিক্ষার্থীর অধিকারের পক্ষে বৃহত্তর ইউনিটি দরকার। ডাকসু নির্বাচনে বৃহত্তর ইউনিটি থেকেই সকল প্যানেল দেয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছি। ছাত্র ফেডারেশনসহ প্রগতিশীল ছাত্র জোটের শরিক সংগঠনগুলো নির্বাচনী আচরণবিধি সংক্রান্ত যেসব সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছে তা বাস্তবায়ন ও কার্যকর না করলে ডাকসু নির্বাচন একটা একতরফা নির্বাচনের পথেই এগুবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা এ নির্বাচনকে স্বাগত জানাই। সারাদেশের মানুষের কাছে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য যা যা করা দরকার, বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে তা করতে হবে। তবে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন যদি একতরফা নির্বাচন আয়োজন করতে চায় তাহলে আমরা নির্বাচনে অংশ নিবো কিনা তা পরবর্তীতে বিবেচনা করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।