পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘এখন আমাদের প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য, বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে’। চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা গত শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে জাতীয় ঐক্যের এই ডাক দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বান সময়োচিত এবং অনিশ্চয়তায় ঘুরপাক খাওয়া দেশের রাজনীতির জন্য সুবাতাস হিসেবে দেখছেন বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সচেতন রাজনৈতিক মহল। প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ঐক্যের আহ্বানের প্রতি সচেতন নাগরিকদের মাঝে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে বলছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের নতুন মেয়াদের সরকারের প্রধান হিসেবে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণ রাষ্ট্রনায়ক সুলভ, দূরদর্শী এবং নিঃসন্দেহে বিচক্ষণতার পরিচায়ক।
এ বিষয়ে ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইডিইউ) ভাইস চ্যান্সেলর প্রবীন অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সিকান্দার খান গতকাল (শনিবার) দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে সবার সম্মতি নিয়ে চলার আগ্রহের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। দেশ ও জাতির স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যদি শুভ মোড় নেয় তাহলে দলমত নির্বিশেষে সবার সহযোগিতা করতে অসুবিধা কোথায়? তিনি বলেন, একথা ঠিক যে সদ্যসমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিরোধী দলগুলো স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছে না। তারা নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে তাদের বক্তব্য বা মত প্রকাশ করেছে। এখন প্রধানমন্ত্রী বিনয় সহকারে তাদের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান রেখেছেন। নির্বাচনী ফলাফল যাই হোক, এবার উচিৎ হবে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানকে সরাসরি নাকচ না করে এবং নেতিবাচক রাজনীতির দিকে না গিয়ে জাতীয় ঐক্যের আহ্বানের প্রতি সাড়া দেয়া। একটা বিষয় সবাই লক্ষ্য করেছেন বিজয় লাভের পরেও বিজয়ী দল (আওয়ামী লীগ) আস্ফালন করেনি বা করছেও না। প্রফেসর সিকান্দার খান বলেন, বিরোধী পক্ষের উচিৎ হবে জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে সময়মতো সাড়া দেয়া। কেননা হিংসাত্মক রাজনীতি অথবা পেছন থেকে সমালোচনা করে কোন ফল হবে না।
এদিকে গতকাল বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের সর্বত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য নিয়ে বিভিন্নমুখী আলোচনা-পর্যালোচনা করতে দেখা গেছে নানা শ্রেণি-পেশার লোকজনকে। এসব আলাপচারিতায় উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের কথাগুলো। যার মধ্যে রয়েছে সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা, আইনের শাসন নিশ্চিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারের দৃষ্টিতে দলমত নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিক সমান। আমরা সকলের জন্যই কাজ করবো। তিনি বলেছেন, যারা আমাদের ভোট দিয়েছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আর যারা সমর্থন দেননি তাদের প্রতিও ধন্যবাদ জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সাথে বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের অবস্থান থাকবে জিরো টলারেন্সে। কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতি উচ্ছেদ করা হবে। মাদক আগ্রাসনের বিরুদ্ধেও সরকারের কড়া অবস্থানের কথা জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
পুনঃনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এসব বক্তব্য রাজনীতি সচেতন এবং দেশপ্রেমিক সাধারণ জনগণ অত্যন্ত ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন। এখানে-সেখানে সাধারণ মানুষের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে আশার আলো। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় সদিচ্ছা থাকলে এসব ওয়াদা-আশ্বাস ও অবস্থান বাস্তবে রূপায়ন সম্ভব। কেননা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসীন হয়ে আওয়ামী লীগের সরকার দেশের জনগণ এবং বিশেষ করে ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
এক্ষেত্রে আপাতদৃষ্টিতে ‘শক্তিশালী’ বিরোধী দল নেই। যা তাদের কর্মসূচি বা কঠোর সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের পথে ‘বাধা’ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী নতুন সরকারের পথচলা যাদেরকে নিয়ে সূচনা করেছেন নতুন মন্ত্রিসভায় জনগণ আপাতদৃষ্টিতে চমক দেখেছে। প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং অপেক্ষাকৃত মেধা-প্রজ্ঞাসম্পন্ন সংসদ সদস্য বা নেতৃবৃন্দের মধ্য থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী চয়ন করেছেন। তাও আরেক দূরদর্শিতার পরিচায়ক হিসেবে দেখছেন রাজনীতি সচেতন নাগরিকবৃন্দ।
তবে জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর এসব দৃঢ় অবস্থান-অঙ্গীকার, ওয়াদা-আশ্বাস যদি বাস্তবে জনগণের সামনে দৃশ্যমান না হয় তাহলে আশাহত হবে গোটা জাতি। অবশ্য নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় থাকা বর্তমান সরকারের পক্ষে ইচ্ছাশক্তি থাকলে শুভ উদ্যোগ ও আশ্বাসসমূহ বাস্তবায়ন কঠিন হবে না। বরং জনগণই সরকারের সদিচ্ছা বাস্তবায়নের পথ মসৃণ করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।