Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১৫ কোটি চিঠি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:১০ এএম

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আম জনতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে ১৫ লাখ টাকা। আরও ছিল নানা প্রতিশ্রুতির সম্ভার। কিন্তু তার কোনোটাই প্রায় পূরণ হয়নি। পাঁচ বছর পর আবার ভোটের মুখে ভারত। ঘরে ঘরে চিঠি পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান দিচ্ছেন, তার সময়কালে কী কী করেছে এনডিএ সরকার। সাড়ে সাত কোটি চিঠি ছাপিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছনোর কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। আরও একটা নির্বাচনী ‘গিমিক’ বলে সরব বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, এই চিঠি ছাপতে খরচ হয়ে গিয়েছে ১৫ কোটিরও বেশি। জনগণের টাকা খরচ করে নিজের ঢাক পেটাচ্ছেন মোদী। যদিও সরকারি তরফে সাফাই দেওয়ার বিরাম নেই।
ভোটের মুখে সরকারের ‘গুণকীর্তন’-এ মোদীর নয়া ‘অস্ত্র’ চিঠি। পত্রবার্তার আপাত উদ্দেশ্য, ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প বা প্রধানমন্ত্রী ‘জন আরোগ্য যোজনা’র (পিএমজেএওয়াই) সুফল সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে ওয়াকিবহাল করানো। তার জন্য ছাপা হতে পারে ১৫ কোটি চিঠি। ইতোমধ্যেই সাড়ে সাত কোটি চিঠি ছাপিয়ে নাম ঠিকানা লিখে প্রস্তুত। বড় একটা অংশ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে এবং নাগরিকদের অনেকে সেই চিঠি পেতেও শুরু করেছেন। কিন্তু বাস্তবে শুধু আয়ুষ্মান ভারত নয়, দু’পাতার ওই চিঠিতে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’, ‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা’, ‘সৌভাগ্য যোজনা’, প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনার মতো প্রকল্পের বিষয়বস্তুও থাকছে। চিঠির খামের উপর মোদীর ছবি দিয়ে পিএমজেএওয়াই প্রকল্পের লোগো।
আর চিঠিতে মোদীর ব্যক্তিগত বার্তা। তার সারমর্ম, ‘আমি ব্যক্তিগত জীবনে দারিদ্র্যকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। গরিবদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের সবচেয়ে ভাল উপায় হল তাদের আরও ক্ষমতা দেওয়া। সেই কারণেই যখনই দেশবাসী আমাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করে তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন, তখন থেকেই সাধারণ মধ্যবিত্ত, গরিব ও মহিলাদের ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করেছি। গরিবদের জন্য বাড়ি বানানো, আয় বাড়ানো, স্বাস্থ্য থেকে শিক্ষার উন্নতিতে আমরা অনেকগুলি পদক্ষেপ করেছি।’
কিন্তু সরকারের ঢাক পেটাতে যেয়ে বিপুল অর্থব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, শুধু চিঠি ছাপতেই সরকারি কোষাগার থেকে ১৫.৭৫ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে চিঠি পাঠানোর খরচ, যা চিঠি প্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। অর্থাৎ আরও প্রায় সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকার মতো। কেরালার সিপিএম সাংসদ এমবি রাজেশ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘বাজেটে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মোট খরচই ধরা হয়েছে ২০০০ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম বাদ দিয়েও এত টাকা কোথা থেকে আসছে? ভোটের আগে এটা গিমিক ছাড়া আর কিছুই নয়।’
কেরালায় প্রায় ১২ লাখ চিঠি পৌঁছেছে বলে সূত্রের খবর। অন্যান্য রাজ্যেও চিঠি আসতে শুরু করেছে। রাজ্য প্রশাসনকে না জানিয়ে কেন্দ্র এভাবে চিঠি পাঠাতে পারে কি না, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে অনেক রাজ্যই। আবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প থেকে নাম তুলে নিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ১৫ কোটি চিঠি

২৬ জানুয়ারি, ২০১৯
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ