বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্বপ্ন যখন বাস্তবে পূরণ না হয় তখন সে স্বপ্নকে দিবা স্বপ্ন বলাটা দোষের কিছু নয়। ঠিক এমনই দিবা স্বপ্ন দেখিয়ে যাচ্ছেন কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ের (কুবি) ভিসি অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী। যার কারণে তার কাছে ঘেঁসতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক তাকে ডাইনামিক ভিসি বলে অভিহিত করে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই দেখা যাচ্ছে।
জানা যায়, আগামী ৩১ জানুয়ারি ভিসি পদে নিয়োগ পাওয়ার এক বছর পূর্ণ করবেন ড. এমরান কবির চৌধুরী। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে স্বপ্ন দেখিয়ে ও লম্বা বক্তৃতা দিয়ে আর রাজনৈতিক দৌরাত্মের অবস্থান নিয়ে সময় পার করেছেন তিনি। সার্বক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানের কথা নিয়োগ পত্রে উল্লেখ থাকলেও কাজ থাকুক বা না থাকুক সপ্তাহের দুই থেকে তিন দিন তিনি রাজধানীতেই অবস্থান করেন। এমনকি তিনি যোগদান করার পর পূর্বের রেজিস্ট্রারকে সরিয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরকে রেজিস্ট্রারের চলতি দায়িত্বে নিয়ে আসেন। চলতি দায়িত্বের রেজিস্ট্রারও সপ্তাহের অনেক দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান না করার কারণে প্রশাসনিক অনেক কাজই আটকে থাকে।
এদিকে ভিসি যোগদানের পর তিনি তিন মাসের সময়সীমা না মেনে ইচ্ছেমত সময়ে সিন্ডিকেট সভা করেছেন। তার এই অনিয়মতান্ত্রিকতায় সঙ্গী হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাধিক শিক্ষক নেতা ও কর্মকর্তা। তৈরি করেছেন নিজের ইচ্ছেমত বিভিন্ন পদ ও পদবী। এদিকে শিক্ষার্থীদেরকে দেয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রæতির বাস্তবায়ন ১ বছরের মধ্যে না হওয়ায় বিষয়গুলো স্বপ্ন দেখানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখছেন ভিসি বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করার পর সে সব দাবি পূরণের প্রতিশ্রæতি দেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও বাস্তবায়ন দেখেনি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে ছিল ¯œাতোকোত্তরে ভর্তি ফি কমানো, সমাবর্তনের আয়োজন, শিক্ষার্থী কল্যাণ তহবিল গঠন, বাস সংখ্যা বৃদ্ধি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন’র (বিআরটিসি) ফিটনেসবিহীন বাস পরিবর্তন, সমগ্র ক্যাম্পাস ওয়াইফাই আওতাভুক্ত করা, হলের খাবারে ভর্তুকি প্রদানসহ বিভিন্ন দাবি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ভিসি আমাদের বারবার বিভিন্ন স্বপ্ন দেখালেও এখনো তা স্বপ্নেই রয়ে গেছে, বাস্তবে তেমন কিছুই দেখছিনা। ভিসি আসার পর থেকেই বাস বৃদ্ধি, রাস্তা সংস্কার, মাস্টার্সের ভর্তি ফি কমানোসহ বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস দিলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ভিসিকে সীমাবদ্ধ সম্পদ দিয়েই শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ আরও আন্তরিক হওয়া এবং জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক কিছুই পূরণ করা সম্ভব নয়, তাই বলে কি স্বাভাবিক কার্যক্রম থেমে থাকবে?
বিভিন্ন সময়ে বিশ^বিদ্যালয়ের সংবাদকর্মীরা তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোন বক্তব্য প্রদান না করে তার নিয়োগকৃত গণমাধ্যম উপাদেষ্টার সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। এ প্রতিবেদনের জন্যও তার বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও তাকে ফোন দিয়ে পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ভিসি মহোদয়ের আদেশে বিষয়গুলো আমরা গুরুত্বের সাথে দেখতেছি। ইতোমধ্যে ¯œাতকোত্তরে ভর্তি ফি কমানোর জন্য কমিটি করে দেয়া হয়েছে। সমাবর্তনের জন্য ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ডিসেম্বরে আশা করি আমরা সমাবর্তন করতে পারবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাস্তার টেন্ডার খুব শিগরই হবে এবং বাস চালক নিয়োগের কার্যক্রমও চলছে। খুব দ্রæতই আমরা সব সমস্যার সমাধান করতে পারবো।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য ৬৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প ২০১৪-১৫ অর্থবছরে শুরু হয়ে বর্তমান চলমান থাকলেও তা চলছে ধীরগতিতে। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের জুন মাসে। এছাড়া নতুন করে ১ হাজার ৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার মেগা প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয় গত বছরের অক্টোবর মাসে। এ উন্নয়ন কর্মকাÐে ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের কথা বলা হলেও ক্যাম্পাসকে দুই অংশে বিভক্ত করা হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনও করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব বিষয়ে কথা বললে দেশের শিক্ষা বিশেষজ্ঞ এবং বিশিষ্ট জনেরা বিষ্ময় প্রকাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, একজন ভিসির সার্বক্ষণিকই ক্যা¤পাসে থাকা উচিত, আইন অনুযায়ি নিয়মিত সিন্ডিকেটে সভা করা উচিত। কিন্তু তিনি আমার সাবেক সহকর্মী ছিলেন, তাই তার বিষয়ে মন্তব্য করাটা আমার জন্য বিব্রতকর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।