Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ অর্জনে পঞ্চবার্ষিকী কর্মপরিকল্পনা জরুরী

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ৭:০৪ পিএম

২০৪০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কর্ম-পরিকল্পনা না থাকায় উক্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যহত হচ্ছে। উপরন্তু, মুনাফা অর্জন অর্থাৎ ব্যবসায়ীক স্বার্থ হাসিলে তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের আন্তরিক সদিচ্ছাকে উপেক্ষা করছে তামাক কোম্পানিগুলো। ফলে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সরকারের অতীত সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে অবিলম্বে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, তামাক কর নীতি, তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ নীতি চূড়ান্ত করা জরুরী।

বুধবার (১৬ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র আয়োজনে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হোক’ শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এই আহ্বান জানান।

প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল’র সদস্য সচিব মো. বজলুর রহমান, এইড ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এবং এডভোকেসী অফিসার আবু নাসের অনীক, বাঁচতে শিখ নারী’র নির্বাহী পরিচালক ফিরোজা বেগম, ব্যুরো অব ইকোনোমিক রিসার্চ-ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ডালিয়া দাস, হীল এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জেবুন্নেসা চৌধুরী, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা শুভ কর্মকার, জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি’র কর্মকর্তা আব্দুল মাজেদ, হিমু পরিবহনের কর্মকর্তা সাগর মল্লিক প্রমূখ। কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা আবু রায়হান।

বক্তারা বলেন, ক্ষতিকর তামাকজাত পন্য উৎপাদনকারী তামাক কোম্পানিগুলোগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক নীতিসমমূহ প্রণয়ণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য নানাভাবে অপচেষ্টা চালানো সত্বেও তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের অনেক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। উল্লেখিত অগ্রগতি হওয়ার পরও ইতিপূর্বে প্রণীত নীতিসমুহ বাস্তবায়ন, সর্বোপরি কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে রয়েছে দেশ। বিশেষ করে, সুনির্দিষ্ট কোন কর্মপরিকল্পনা না থাকায় তামাক কোম্পানিগুলোর অপচেষ্টা প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে না।

জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে তামাক নিয়ন্ত্রণের সমস্যা চিহ্নিত, চাহিদা নিরূপন ও সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনেই অনতিবিলম্বে সুনির্দিষ্ট একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরী। যা তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রতিবন্ধকতা নিরুপনের মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে পর্যায় ক্রমিকভাবে তামাকমুক্ত হিসাবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।

সারা বিশে^র ন্যায় বাংলাদেশেও অসংক্রামক রোগে (হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়বেটিস)সহ বিভিন্ন প্রাণঘাতি রোগের মাত্রা বেড়েই চলেছে। এর জন্য প্রধানত দায়ী ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার। সর্বশেষ হিসাব মতে, পৃথিবীতে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশের অধিকই অসংক্রামক রোগের কারণে হয়। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুহার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

এফসিটিসি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল) বাস্তবায়নে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস্-এসডিজিতে তামাক নিয়ন্ত্রণকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। উপরন্তু, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক লক্ষ্যমাত্রাতেও তামাক নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এ সকল বৈশ্বিক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশও অঙ্গীকারাবদ্ধ। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে সুনিদিষ্ট দিক নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হলে দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম গতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ