পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম মুসলিম সিনেটর হিসেবে শপথ নিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত-মার্কিন নাগরিক শেখ রহমান। তিনি জর্জিয়ার জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে সোমবার প্রথমে বাইবেল নিয়ে অন্য সিনেটরদের সাথে ও পরে নির্জ ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী কোরআন নিয়ে শপথ নেন। তিনি শুধু প্রথম মুসলিম সিনেটরই নন, বরং একইসঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কোনও অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত প্রথম কোনও বাংলাদেশি।
বাংলাদেশের একটি ধনী পরিবার থেকে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন শেখ রহমান। তবে সেখানে গিয়ে কলেজের ব্যয় মেটাতে একটি রেস্টুরেন্টে ডিশ ওয়াশারের কাজ করেছেন তিনি। এর পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রমের অন্য কাজও করতেন তিনি। এভাবে তিনি ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়া থেকে ডিগ্রি লাভ করেন। তার সাফল্যের গল্প বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটিতে গর্বের সঙ্গে আলোচিত হচ্ছে। নির্বাচনে ৬৮ শতাংশ ভোট পান তিনি।
শেখ রাহমান বলেন, ‘আমি এখানে যা অর্জন করেছি তার জন্য আমি গর্বিত।’ তিনি বলেন, ‘আমার মতো দেখতে এবং আমার মতো কথা বলে এমন লাখ লাখ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি গর্বিত। এখন অন্তত টেবিলে আমাদেরও একটি আসন রয়েছে।’
তার সাফল্যের গল্প বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটিতে প্রতিধ্বনিত বা অনুরণিত হয়। এই বাংলাদেশি-আমেরিকানরা যুক্তরাষ্ট্রের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান কমিউনিটিগুলোর মধ্যে একটি। তাদের অনেকের জন্যই মার্কিন সিনেটর হিসেবে শেখ রাহমানের শপথগ্রহণের অনুষ্ঠান একটি গর্বের মুহূর্ত।
গত বছরের গ্রীষ্মে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির দলীয় প্রাইমারিতে নিজের প্রতিদ্ব›দ্বীকে পরাজিত করে সিনেটের জন্য নিজের অবস্থান সংহত করেন শেখ রাহমান। এই দলীয় প্রাইমারির মাধ্যমে নিজ নিজ দলের প্রার্থী চ‚ড়ান্ত করে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা। কিন্তু নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে আসনটিতে রিপাবলিকান পার্টির কোনও প্রার্থী না থাকায় সিনেটে তার অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পড়ে। তিনি এখন জর্জিয়ার সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় একটি জেলার প্রতিনিধিত্ব করছেন। এটি যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৈচিত্র্যময় জেলা। এখানকার জনসংখ্যার ৩৮ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ, ২৭ শতাংশ কৃষাঙ্গ। হিস্পানিক জনগোষ্ঠীর সদস্য ২১ শতাংশ এবং এশীয় জনসংখ্যা ১১ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বাংলাদেশি-আমেরিকানরা ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। তবে জর্জিয়ার সিনেটে শেখ রাহমানের প্রবেশ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এ রাজ্যে দাসত্বের ইতিহাস রয়েছে। রয়েছে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের বর্ণাঢ্য ইতিহাস।
জর্জিয়ার গ্রামীণ এলাকায় এখনও অনেক শ্বেতাঙ্গ বাসিন্দারা তাদের ঐতিহ্যের গর্বিত প্রতীক হিসেবে কনফেডারেট পতাকা বুকে জড়িয়ে নেয়। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এখনও কেউ কেউ শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের প্রতীক এই পতাকা প্রদর্শন করে। এ কারণেই হয়তো শেখ রাহমানের বিজয়ের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পর্যায়ের সংবাদমাধ্যমগুলোর নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। সূত্র: সিবিএস নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।