মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এমপিদের ভোট প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার এই ভোটাভুটির চুড়ান্ত ফল পাওয়া না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে এতে পরাজিত হতে যাচ্ছেন। সোমবার তিনি এমপিদেরকে দেশের স্বার্থে চুক্তিটিতে আরেকবার চোখ বুলিয়ে এর পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু ভোটে বেশিরভাগ এমপিই চুক্তিটি প্রত্যাখ্যান করবেন বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
তিন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি ও দ্যা ইন্ডিপেনডেন্ট তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘সুনিশ্চিত’ পরাজয়ের মুখে দাঁড়িয়ে আছেন টেরিজা মে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পাদিত তার ওই খসড়া চুক্তির প্রশ্নে নিম্নকক্ষের আইনপ্রণেতাদের অবস্থান বিশ্লেষণ করে ওই তিন সংবাদমাধ্যম দেখিয়েছে, লেবার পার্টিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের প্রায় সব আইনপ্রণেতাই টেরিজার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন। পাশাপাশি নিজ দলের প্রায় ১০০ আইনপ্রণেতার বিরোধিতার মুখে পড়তে যাচ্ছেন তিনি। ফলে বড় ধরনের পরাজয়ে পড়তে পারেন মে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার কথা। পরবর্তী সম্পর্কের রূপরেখা নিয়ে জোটটির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মে। সেই খসড়া চুক্তি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও চুক্তি নিয়ে দ্বিমতের কারণে পদত্যাগ করেছেন ব্রেক্সিট বিষয়ক দুইজন মন্ত্রী। অন্য কয়েকজন মন্ত্রীসহ পদত্যাগ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। তুমুল বিরোধিতার মধ্যে এই চুক্তি পার্লামেন্টে অনুমোদন না পাওয়ার আশঙ্কাই প্রবল। এরকম হলে মে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) নির্ধারিত সময় (২৯ মার্চ) পিছিয়ে দিতে বাধ্য হতে পারেন। অথবা ব্রেক্সিট নিয়ে আরেকটি গণভোট কিংবা চুক্তি ছাড়া ইইউ ত্যাগসহ নানা বিকল্প পদক্ষেপ নেওয়ার পট প্রস্তুত হতে পারে।
৬৫০ আইনপ্রণেতার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ৪ জনের ভোট দানের অধিকার নেই। তারা হলেন স্পিকার ও তার ৩ সহযোগী। আইরিশ রিপাবলিকান পার্টির আইনপ্রণেতারা তাদের আসনে বসেন না। সে কারণে ৬৩৯ ভোটের মধ্যে ৩২০ আইনপ্রণেতাদের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হবে। খবর অনুযায়ী ২৬২ আসনের লেবার দলের ভোটাধিকার থাকা ২৫৬ জনের প্রায় সব আইনপ্রণেতাই টেরিজার বিপক্ষে ভোট দিতে যাচ্ছেন। দ্য গার্ডিয়ান ধারণা করছে, এর পাশাপাশি লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের ১২ জন, গ্রিন পার্টির ১জন, প্লেইড কিমরুর ৪ জন আর স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির ৩৫ আইনপ্রণেতাও লেবারদের সঙ্গী হয়ে টেরিজার বিরুদ্ধে দাড়াতে পারেন। এদিকে ৩১৮ আসনসম্পন্ন কনজারভেটিভ পার্টির ভোট সংখ্যা ৩১৬টি। এদের মধ্যে ১০০ জন টেরিজার বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন। একই আশঙ্কা জানিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ১০০ কনজারভেটিভ আইনপ্রণেতার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির ১০ আইনপ্রণেতা তার বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন। সংবাদ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সব মিলে ২৫০ টি ভোট নিশ্চিত করতেই হিমশিম খেতে হবে টেরিজা মে’কে।
লেবার সূত্রকে উদ্ধৃত করে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, টেরিজা মে যদি তার খসড়ায় অনুমোদন পেয়ে যান তবে সেটা হবে অপ্রত্যাশিত ঘটনা।
উল্লেখ্য, ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের ১১ ডিসেম্বর। তবে আইনপ্রণেতাদের তুমুল বিরোধিতার মুখে ভোটাভুটিতে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত করেন প্রধানমন্ত্রী মে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডস অনির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত। কোনও আইন প্রণয়নের অধিকার তাদের নেই। সে কারণে তারা চুক্তি অনুমোদনের ব্যাপারে কোনও ভোট দিতে পারবে না। কেবল এ সংক্রান্ত বিতর্ক শেষে পর্যালোচনা হাজির করতে পারবে। সে কারণেই নিম্নকক্ষের ভোটাভুটির মধ্য দিয়েই ব্রেক্সিটের খসড়া চুক্তির প্রশ্নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।