Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে চালের দাম

ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ধানের বাজারে ধস নামায় কৃষকরা লোকশান গুনেছিলেন এখনো তুলনামূলক ধানের দাম কম কিন্তু কৃষকের হাত থেকে ধান চলে যাবার পর ঠাকুরগাঁওয়ে চালের বাজার হঠাৎ অস্থির। নির্বাচনের সময় থেকেই হঠাৎ এ অবস্থাটা শুরু হয়েছে যা অব্যাহত আছে গত সোমবার বিকেল পর্যন্ত। চালের দাম হঠাৎ বেড়েছে কেজি প্রতি ২-৩ টাকা এবং বস্তাপ্রতি ১ শ থেকে দেড় শ টাকা। কৃষক যাতে ধানের দাম পান সেজন্য চালকল মালিকদের মাধ্যমে ৩৬ টাকা কেজি দরে এ জেলায় ২২ হাজার ৪ শ ৯৩ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সোমবার পর্যন্ত কেনা হয়েছে ১৭ হাজার ১শ ৬৬ মেট্রিক টন। এ কথা জানিয়ে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা বাবুল হোসেন জানালেন, লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭৭% এরও বেশি চাল সোমবার পর্যন্ত কেনা হয়েছে , লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেও অধিক চাল কেনা সম্ভব বলে তিনি জানালেন। অর্থাৎ এমন কোনো সংকট নেই চালের বাজারে। অথচ বাজারে মোটা ও চিকন উভয় প্রকার চালের দামই কেন বাড়লো সে প্রশ্ন মানুষের মুখে মুখে।

ঠাকুরগাঁও শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার চাল ব্যবসায়ি মোহম্মদ শফি জানান, গত ৭ দিনে মোটা ও চিকন উভয় প্রকার চালই বস্তাপ্রতি ১ শ থেকে দেড়’শ টাকা দাম বেড়েছে। ৫০ কেজি চিকন চালের দাম বর্তমান বাজারে ১৮ শ থেকে সাড়ে ১৮ শ টাকা যা নির্বাচনের আগে ছিল ১৭ শ থেকে সাড়ে ১৭ শ। কেজি প্রতি খুঁচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে ২-৩ টাকা। একই কথা জানালেন , শহরের হাজীপাড়ার খুঁচরা দোকানদার আলাউল হোসেন। তিনি বললেন, আজকেও এ অবস্থাই আছে, আমি খুঁচরা বিক্রির জন্য পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের পাইকারি দোকান থেকে এক বস্তা মোটা চাল কিনলাম ১৮ শ টাকায় ,নির্বাচনের আগে যে চালের বস্তার দাম ছিল সাড়ে ১৬ শ থেকে ১৭ শ।

এদিকে একটি বেসরকারি কোম্পানির কেরানি আশ্রমপাড়ার দেবাশিষ দত্ত জানালেন , চালের দাম বাড়ায় তাদের জীবন যাপনের ব্যয় বেড়ে গেছে যা কেন হয়েছে আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। বসির পাড়ার গৃহবধু সায়রা বেগম জানালেন, চালের দাম বাড়ায় আমাদের হিসেব করা টাকায় চলতে সমস্যা হচ্ছে , কমাতে হয়েছে মাছ মাংস তথা প্রোটিনের ব্যায়।

জেলার গৌরিপুর গ্রামের নুরল ইসলাম বলেন, বাজারে ধানের দাম তো এখনো কম যদিও মূল কৃষকদের হাত থেকে এখন মূলত পাইকারদের হাতে ধান। কৃষক তো এবার ধানের দাম পায়নি। অথচ যারা নিজেরা ধানের আবাদ করে না সেই গ্রামবাসি বিশেষ করে রিক্সা-অটো চালক-দিনমজুর দের এখন বেশি দামে চাল কিনতে হয়। দিনমজুর আনসারুল বলেন , ৩৮ টাকা মোটা চাল কিনে খেতে হচ্ছে তাদের।
এ প্রশ্নে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অটো রাইস মিল মালিক বলেন, গত দুই সিজনে আমি চালের ব্যবসা করে ৬০ লাখ টাকা লোকশান গুণি। তাই এ বছর মৌসুমের প্রথম দিকে আমি ও আমার মতো ব্যবসায়িরা ধান কিনিনি , ফলে ধানের দাম খুব পড়ে যায়। চালের দাম তাদের পাইকারি বাজাওে পৌনে এক টাকা বাড়লেও তা ক্রেতার হাতে যাওয়া পর্যন্ত ২-৩ টাকা বাড়ে আড়তদাড়ের ফরিয়ারা এ দাম বাড়ায় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এই দাম বৃদ্ধি প্রশ্নে চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজু বলেন, চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আছে, একটু বেড়েছিল শুনেছিলাম কিন্তু বর্তমানে স্থিতিশীল আছে। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা বাবুল হোসেন বলেন, ইতিমধ্যেই চালের বাজার স্থির হয়েছে , নির্বাচনের সময় চাতালের লেবারদের কাজে কিছুটা বিরতী ছিল এবং স্বাভাবিক পণ্য পরিবহনে কিছু বিধি নিষেধের কারণে চালের দাম সামান্য বাড়লেও তা ইতিমধ্যেই পূর্বের অবস্থায় এসেছে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে মনিটরিং কমিটি প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করছে এবং তাদের আজকের রিপোর্ট এরকমই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাল

১১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ