পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট চুরি হয়েছে অভিযোগ করে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি ও তাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। একইসাথে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচনের দাবি করেছে রাজপথের প্রধান এই বিরোধী জোট।
দাবি আদায়ে জাতীয় সংলাপসহ তিন কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যদিও সংলাপের কথা বলার পরপরই গত রোববার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন নির্বাচনের আগে যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করেছিলেন আবারও তাদেরকে চিঠি দিয়ে ডাকবেন প্রধানমন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপের বিষয়ে এবার তেমন আগ্রহী নয় বিএনপি। সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা বা বিষয় ছাড়া সংলাপে অংশ নেয়ার কোন প্রয়োজনীয়তাও মনে করেন না দলটির নেতারা। তারা মনে করেন, অতীতে সরকারের কথায় আস্থা সংলাপে অংশ নিয়ে তা প্রহসনে পরিণত হয়েছে। এবার আর এধরণের লোক দেখানে এবং অর্থহীন কোন সংলাপে যাবে না বিএনপি। সংলাপ করতে হলে আগে এজেন্ডা জানাতে হবে। আর সেই এজেন্ডা অবশ্যই হতে হবে পুনঃনির্বাচন এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে। অন্যত্থায় সংলাপে বসার কোন প্রয়োজন দেখেন না বিএনপি নেতারা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের এজেন্ডা একটাই এই নির্বাচন বাতিল করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। অন্যত্থায় আগের মত সংলাপ হলে সেটা অর্থবহ হবেনা। নির্বাচন কেন্দ্রীক এজেন্ডা থাকলেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপে যাবে। যে কোন সংলাপেই আমাদের মূল এজেন্ডা বর্তমান নির্বাচন বাতিল করতে হবে। অযোগ্য এ নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার গঠন করতে হবে।
নির্বাচনের আগে গত ১ নভেম্বর ও ৭ নভেম্বর দুই দফা প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। ওই সংলাপে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার। নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা দেওয়া। বাক্, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন। তফসিল ঘোষণার পর থেকে সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো মামলা না দেওয়াসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছিল সরকার বিরোধী এই জোট। যদিও তাদের কোন দাবিই বাস্তবায়ন হয়নি বলে জানিয়েছিলেন বিএনপির নেতারা।
দলটির একাধিক নেতা বলেন, নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা সংলাপে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। সেসময় প্রধানমন্ত্রীর কথায় আস্থা রেখে ৭দফা দাবি জানানো হয়েছিল। সংলাপে প্রধানমন্ত্রী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা না দেয়া, গ্রেফতার বন্ধ রাখার আশ্বাস দিয়েছিলেন। মামলার তালিকা চেয়েছিলেন, বিএনপিও সেই তালিকা তার কার্যালয়ে পৌঁছে দিয়েছিল। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় যখন সংলাপে তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন তখনও সারাদেশে গ্রেফতার চলছিল। এমনকি সংলাপে তিনি আশ্বাস দেয়ার পর গ্রেফতার, মামলা, ধরপাকড় আরও বেশি বেড়ে যায়। এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের যে দাবি বিএনপির ছিল তার বিপরীতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে জাতিকে একটি জঘন্য নির্বাচন উপহার দিয়েছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। তাই এই সরকারের সাথে আর কোন সংলাপের বিষয়ে আগ্রহী নয় তারা। বরং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী, শিক্ষার্থী বিদেশী বন্ধুরাষ্ট্রদের নিয়ে জাতীয় সংলাপের আয়োজন করতে চান তারা। একইসাথে এই সংলাপে ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ডাকাতির সার্বিক চিত্রও জাতির সামনে তুলে ধরবেন তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সংলাপ এখন হতে পারে একটা গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে। একটা সংলাপে (নির্বাচনের আগে) তো কোন ফলাফল হয়নি। বরং দেশ আরও রাজনৈতিকভাবে কয়েক ধাপ নিচে নেমে গেছে। ওই সংলাপের কারণে দেশের গণতন্ত্র, নির্বাচনী প্রক্রিয়াতে কোন সুফল আসেনি। এরপর আরেকটি সংলাপের উদ্দেশ্য কী সেটা তো আমাদের জানা নেই। তিনি বলেন, দেশে সংবিধান আছে, সেখানেই মৌলিক অধিকার, ভোটাধিকার, বাক্ স্বাধীনতা, আইনের শাসনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা না মেনে সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়ে যতবারই সংলাপ হোক না কেন এটা কোন কাজে আসবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ৩০ ডিসেম্বর যেহেতু মানুষের ভোটে কোন সরকার নির্বাচিত হয়নি। তাই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। তাছাড়া অন্য কোন বিষয়ে আলোচনার সুযোগ নাই।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সংলাপ হলো সরকারের একটি চালাকি মাত্র। জনগণ যেহেতু তাদের ভোট দিতে পারেনি, তাদের ক্ষোভ রয়েছে, এজন্য সরকার তাদের ক্ষোভকে ভিন্নপথে প্রবাহিত করতে সংলাপের নামে কালক্ষেপণের কৌশল নিতে চায়। কিন্তু এধরণের সংলাপে কোন অর্জন হবে না।
আরেক ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের যে নির্বাচন হয়েছে সেটি ইতিহাসের জঘন্যতম একটি নির্বাচন। এই নির্বাচন বাদ দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে যদি আলোচনা বা সংলাপের কথা বলা হয় তাহলে বিএনপি সেটিকে স্বাগত জানাবে। অন্যত্থায় কোন আলোচনার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।