পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদের হাতে উদ্বোধন হওয়া মেলার তিনদিন গড়িয়ে আজ শনিবার চতুর্থ দিনে পড়েছে। তবে আন্তর্জাতিক এই মেলা এখনো অগোছালো রয়েছে। প্রায় ৭০ ভাগের মতো সাজ সজ্জার কাজ সম্পন্ন হলেও এখানো ৩০ শতাংশ বাকি। মেলার ভেতর চারদিকে ঠুক-ঠাক শব্দের আওয়াজও শোনা যাচ্ছে রীতিমতো। মেলায় গেলে যে কেউ এই শব্দ শুনতে পাবে। তারপরেও গতকাল শুক্রবার আশানুরুপ ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিত লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে মেলায় প্রতিবারের মতো এবারও নিত্য প্রয়োজনীয় ও ঘর সাজাতে প্লাস্টিক পণ্যের একক দাপট দেখাচ্ছে। মেলায় আগত নারী দর্শনার্থীরাও হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন প্লাস্টিক পণ্যের স্টল-প্যাভিলিয়নগুলোতে।
মেলা শুরুর তৃতীয় দিনে গতকাল শুক্রবার সরেজমিন মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, এখনো অসম্পূর্ণ রয়েছে বহু স্টল ও প্যাভিলিয়ন। ছোট-বড় বহু স্টলেই শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জার কাজ চলছে। আর বিদেশি প্যাভিলিয়নগুলো এখনও ফাঁকা। এর কোনো কোনোটিতে এখনো কাজই শুরু হয়নি। এমনকি মেলার পরিবেশ ফুটিয়ে তুলতে সাজ-সজ্জার কাজও অনেক বাকি। আয়োজক ও অংশগ্রহনকারীরা বলছেন, পুরোদমে এসব স্টলের কার্যক্রম শুরু হতে আরো সপ্তাহ খানেক সময় লেগে যেতে পারে।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, তবুও ছুটির দিন হিসেবে হাজার হাজার ক্রেতা দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন বাণিজ্যমেলায়। লোভনীয় খাবার আর হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে বাণিজ্যমেলার স্টলগুলো। সব মিলে বলা যায়, ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় প্রথম শুক্রবার জমে উঠেছে মেলা।
দেশীয় নামি-দামি বহু স্টল পুরো প্রস্তুত। এসব স্টল থেকে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা। কোনো কোনো স্টলে চলছে মালপত্র সাজানোর কাজ। প্যাভিলিয়ন বা স্টল তৈরির কাজও করছেন কর্মীরা। কয়েকটি স্টলের কর্মকর্তারা জানালেন, কিছু কিছু স্টল প্রস্তুত করতে আরো তিন থেকে চারদিন লাগবে।
মেলার সার্বিক বিষয় নিয়ে রফতনি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য বলেন বলেন, বিদেশি স্টলের কার্যক্রম শুরু হতে সবসময় একটু দেরি হয়। বিদেশি মালপত্র আনতে কাস্টমসে যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে। আমরা এরই মধ্যে কাস্টমসকে চিঠি দিয়েছি। আশা করি আগামী সপ্তাহের মধ্যে সবাই পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।
সরেজমিন দেখা যায়, এবার মেলায় মেট্রো রেলের আদলে তৈরি করা হয়েছে মূল ফটক। এই ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে ডিজিটাল এক্সিপেরিয়েন্স সেন্টার। চারটি টাচ স্ক্রিন কম্পিউটার রয়েছে এতে। দিকনির্দেশনা দিতে রয়েছেন একজন কর্মকর্তাও। এই সেন্টারে প্রবেশ করে যে স্টল বা প্যাভিলিয়নে যেতে চান তার অবস্থান জেনে নেওয়া যাবে সহজে। ডিজিটাল উন্নয়নকে জানান দিতে আধুনিক এই পদ্ধতির সংযোজন এবারের মেলায়। এছাড়া দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সবই তুলে ধরা হয়েছে মেলায়। গতবারের মতো এবারো রয়েছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এর সামনে সারি সারি সাজানো নৌকা। ভেতরেও এবার স্থান বেশি। বরাবরের মতোই এবারের মেলাতেও ইপিবির তথ্যকেন্দ্র বিশ্রামস্থল, রক্তদান ও প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রও রয়েছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে শুক্রবার ক্রেতা সমাগম বাড়ায় প্রাণবন্ত রূপ পেয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। সকালে ভিড় কম থাকলেও দুপুর নাগাদ তা বাড়তে থাকে। বিকেলে দর্শনার্থীদের ভিড় প্রাণবন্ত হয়ে উঠে মেলা। দূর দূরান্ত থেকে অনেকেই এসেছেন পরিবার পরিজন নিয়ে। ঘুরে ফিরে তারা পরখ করছেন দেশী বিদেশী বিভিন্ন পণ্য।
ক্রোকারিজ, গার্মেন্ট, প্রসাধনী, জুয়েলারি, ফার্নিচার, প্লাস্টিক পণ্য ও বিদেশি প্যাভিলিয়নগুলোকে ঘিরে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহ ছিলো বেশী। তবে প্লাস্টিক পণ্যের একক দাপট দেখা যায় মেলায়। মেলার বেশিরভাগ প্লাস্টিক পণ্য প্রাণ-আরএফএলেরর দখলে। এছাড়া বেঙ্গল, তানিনসহ অসংখ্যা কোম্পানি তাদের নিজস্ব পন্য নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছেন। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে নানা অফার দিচ্ছেন কোম্পানিগুলো বিক্রেতারা।
একাধিক বিক্রেতা জানালেন, মেলায় প্রতিবারের মতো এবার বেশি ভিড় গৃহস্থালি পণ্য, ক্রোকারিজ, গার্মেন্ট, প্রসাধনী ও জুয়েলারি পণ্যের স্টলে। তবে বিদেশী প্যাভিলিয়নের প্রতি ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহ ছিলো বেশী। তবে মেলার প্রথম দিকে একটু ভিড় ও বেচা-কেনা কম হয়। লোক সমাগম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রীও বাড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় বেশির ভাগ মানুষই ঘুরতে এসেছেন। আর তার মধ্যে বেশির ভাগই তরুণ-তরুণী। তবে বেচাকেনা তেমন একটা শুরু হয়নি এখনও। বিক্রি এখনও শুরু হয়নি এমনটি বলছেন ক্রেতারাও। তবে তাদের আশা দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ভালো থাকলে দর্শনার্থীরর আগমন বেশি হবে। আর তখনই বিক্রিও ভালো হবে। অপরদিকে, মেলা প্রাঙ্গণে এখনও বিভিন্ন স্টলের কাজ বাকি রয়েছে। চলছে স্টল বানানো এবং পণ্য দিয়ে সাজানোর মহড়া। তাছাড়া কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ হবে মেলার প্রাঙ্গণের স্টলের সব প্রস্তুতি।
মেলায় আগত আলফাজ নামে এক দর্শনার্থী বলেন, আজ (শুক্রবার) মেলায় আসা মূলত ঘুরতে। এর মধ্যে কোনো পছন্দের পণ্য কম দামে পেলে অবশ্যই কেনার ইচ্ছা আছে। আরেক দর্শনার্থী শিউলি বলেন, পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছি। তবে এখনই কিছু কেনার উদ্দেশে নয়।
মেলা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২২ দেশের ৫২ প্রতিষ্ঠান এবার মেলায় অংশ নিয়েছে।
ইপিবি জানিয়েছে, ৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া মেলা শেষ হবে আগামী ৮ ফেব্রæয়ারি। মেলা চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। এবারের মেলায় স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৬০৫।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।