মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাজস্থানের রাইকা সম্প্রদায়ের গত কয়েক শতক ধরে রাজস্থানে উট পালন করছে৷ তাদের বিশ্বাস যে, ঈশ্বর রাইকা সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছেন শুধু উট পালন করার জন্য৷ তবে সময় বদলেছে৷ রাইকাদের শত বছরের উট পালার প্রথাগত জীবনযাপন এখন হুমকির মুখে৷ লাভজনক না হওয়ায় উট পালার উপর থেকে আগ্রহ অনেকের কমে যাচ্ছে৷ তবে তাদের আশার আলো দেখাচ্ছেন এক জার্মান৷ উটের নানামুখী ব্যবহারের মাধ্যমে রাইকাদের জন্য অর্থ আয়ের নানাপথ তৈরি করে দিয়েছেন তিনি৷
কৃষিকাজে এখন মেশিন ব্যবহার করে অনেককিছু করা যায়, যা করতে আগে উটের দরকার হতো৷ ফলে উটের প্রয়োজনীয়তা দ্রুত কমছে৷ গত ত্রিশ বছরে রাজস্থানে উটের বংশবৃদ্ধিও নাটকীয়ভাবে কমেছে৷ ভানওয়ারলাল নামে এক রাইকা জানান, ‘তার উটের পালও ছোট হয়ে গেছে৷ তার বাবার কাছে এর দ্বিগুন উট ছিল৷ তিনি বলেন, ‘আমাদের এই ঐতিহ্য বংশানুক্রমে চলছে৷ কিন্তু যদি আয় না থাকে, তাহলে আমরা এই ঐতিহ্য কিভাবে ধরে রাখবো? তরুণদের জীবিকার আশায় গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে যেতে হচ্ছে৷ আমার সন্তানরা স্কুলে যায়৷ আর সেজন্য আমার প্রতিমাসে অনেক টাকা খরচ হয়৷ যদি আমরা উট পেলে আর জীবিকা নির্বাহ করতে না পারি, তাহলে আমরা টিকে থাকবো কিভাবে?’
জার্মান নাগরিক ইলসা-ক্যোঁহলার-রোলেফসন একজন জাতিবিদ এবং পশুচিকিৎসক৷ হানোয়ান্ত সিং রাঠোরকে সঙ্গে নিয়ে তিনি একটি সংগঠন তৈরি করেছেন, যেটি উট পালকদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে৷ রাইকা এবং তাদের উটের জন্য এটি একটি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ৷ তিনি বলেন, ‘উট পশুচারণ নানাভাবে গাছ সংরক্ষণে সহায়তা করে৷ অনেক গাছ শুধুমাত্র জাবর কাটা পশুর সহায়তায় অঙ্কুরিত হতে পারে৷ এটা একটা প্রাকৃতিক চক্র: মানুষ, উট, বায়োটপ এবং মানসম্পন্ন খাবার উৎপাদন৷’
গত কয়েকশ’ বছর ধরে উট প্রজনন রাইকাদের উপার্জনের মূল উৎস৷ নারী উটগুলোকে তারা প্রজননের জন্য রেখে দেন৷ উটের দুধ খুবই স্বাস্থ্যকর৷ উটপালক এবং তাদের পরিবারের খাদ্য তালিকার অন্যতম উপাদান এটি৷ তারা আগে বলতো, উটের দুধ বিক্রি অনেকটা নিজের সন্তান বিক্রির মতো ব্যাপার৷ কিন্তু সেই অবস্থান থেকেও সরে এসেছেন তারা৷ এখন ভানওয়ারলাল রাইকা প্রতিদিন সকালে উটের দুধ পাশের একটি দুধ বিক্রির খামারে নিয়ে যান৷ তিন বছর আগে এলপিপিএস এই খামার চালু করেছে৷ তিনি বলেন, ‘আমি প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম৷ উট বিক্রি করে ফেলি৷ কিন্তু তখনই এই সংগঠন উটের দুধ বিক্রি শুরু করে৷ ফলে আমি আবার উটের পাল ফিরিয়ে আনি৷ এখন উটের দুধ বিক্রির মাধ্যমে আমি আমার পরিবারের অন্নসংস্থান করতে পারছি৷ এখন এই সংগঠন যদি কাল থেকে আবার দুধ বিক্রি বন্ধ করে দেয়, তাহলে আমার উটের পাল আবার বিক্রি করে দিতে হবে৷’
উটের দুধ বিক্রির এই খামার তোলারাম রাইকার ভাগ্যও বদলে দিয়েছে৷ যখন তিনি ছোট ছিলেন, তখন তাকে তার পরিবার শহরে পাঠিয়েছিল উপার্জন করতে৷ তিনি পনের বছর বিভিন্ন রেস্তোরাঁ, হোটেল এবং চায়ের দোকানে কাজ করেছেন৷ তোলারাম রাইকা বলেন, ‘আমি শহরে অনেক বছর ধরে কাজ করেছি৷ কিন্তু সেখানে এখানকার তুলনায় কম রোজগার করতাম৷ আমি এই খামারে দুই মাস আগে কাজ শুরু করেছি৷ আমি উটের দুধ সম্পর্কে অনেক কিছু জানি৷ আমি এখানে কাজ করতে পেরে অনেক সন্তুষ্ট৷ আমি আশা করছি, খামারটা ভালোভাবে এগিয়ে যাবে৷’
উটের খাদ্য তালিকা বেশ বিস্তৃত৷ ৩৬ রকমের উদ্ভিদ খায় সেগুলো৷ এসব উদ্ভিদের মধ্যে ঔষধি গুণসম্পন্ন উদ্ভিদও আছে৷ ফলে সেগুলোর দুধে অনেক রকম স্বাস্থ্যকর উপাদান আছে বলে বিশ্বাস করা হয়৷ অবিক্রিত দুধ দিয়ে সাবান তৈরি করা হয়৷ এটি এমন এক পণ্য যা ভালো বিক্রি হয়৷ আর রাইকাদের জন্য এটা আয়ের আরেক উৎস৷ আসলে নতুন কিছু উৎপাদনে রাইকাদের আগ্রহেরও কমতি নেই৷ তারা উটের লোম দিয়ে কাপড় তৈরি করছেন৷ এমনকি উটের গোবর দিয়ে কাগজও তৈরি হচ্ছে৷ সূত্র: ডয়েচ ভ্যালে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।