নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ খেলে আসছে ভারত। দীর্ঘ এই সময়ে যে কাজটি করতে পারেননি কপিল দেব, আজহারউদ্দিন, সৌরভ গাঙ্গুলি কিংবা মাহেন্দ্র সিং ধোনিরা, সৌভাগ্যের বরপুত্র বিরাট কোহলির হাত ধরে সেই সাফল্যের দেখা পেয়েছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৭১ বছরের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মত সিরিজ জিতেছে কোহলির নেতৃত্বাধীন উপমহাদেশের দেশটি।
সিডনি টেস্টে প্রথম ইনিংসে রানের পাহাড় গড়েছিল ভারত। ৭ উইকেটে ৬২২ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়াকে ৩১ বছর পর ঘরের মাঠে ফলোঅনে পড়তে বাধ্য করা হয়। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩০০ রানে গুটিয়ে ৩২২ রানে পিছিয়ে আবার ব্যাটে নামে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এ যাত্রায় প্রকৃতির সহায়তায় বেঁচে যায় টিম পেইনের দল। ম্যাচের চতুর্থ দিনে খেলা হয় মাত্র ২৭ ওভার। দ্বিতীয় ইনিংসে বিনা উইকেটে ৬ রান করে দিন শেষ করে স্বাগতিকরা। আর দিনভর বৃষ্টিতে শেষ দিনে একটি বলও মাঠে গড়াতে পারেনি। দিনের প্রথম ভাগের পর ম্যাচ ড্র ঘোষণা করেন আম্পায়ার। তাতে কেবল পরাজয়ের ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছে অজিরা। ৪ ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে ইতিহাস রচনা করে কোহলির ভারত।
সিরিজ জুড়েই ব্যাটে-বলে অসাধারণ নৈপুন্য প্রদর্শন করেছে ভারত। বিশেষ করে ব্যাট হাতে অনবদ্য ছিলেন চেতস্বর পূজারা। সিডনি টেস্টে তার ১৯৩ রানের উপর ভর করেই বিশাল সংগ্রহ গড়ে ভারত। অপরাজিত ১৫৯ রানের আরেক রেকর্ড ইনিংস খেলে তাতে অবদান রাখেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ঋষব পন্তও। আর বল হাতে তো বরাবরই সফল ছিলেন মোহাম্মদ শামি-কুলদ্বীপ যাদবরা। শুধু সিডনিতে নয়, সিরিজ জুড়েই চওড়া ছিল পূজারার ব্যাট। সিরিজে সর্বোচ্চ ৫২১ রান করে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন পূজারা। যার কারণে প্রথমবারের মত ভারতের কাছে সিরিজ হারতে হয়েছে সেই পুজারাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল, ‘কোহলির রাজ্যে পূজারা বিশেষ কিছুই।
এই সিডনিতেই ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে দলের পূর্ণ অধিনায়ক হিসেবে দায়ীত্ব পান কোহলি। চার বছর পর সেই একই ভেন্যুতে দলের ‘নতুন পরিচয়’ এনে দিলেন সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান। এই দলের সদস্য হতে পেরে গর্বিত কোহলি নিজের উচ্ছ¡াস প্রকাশে বলেন, ‘এই দলের সদস্য হতে পেরে যে গর্ব অনুভব করছি সেই অনুভুতি আগে কখনো পায়নি।’
এই সাফল্যকে ‘ক্যারিয়ারের অন্যতম বড় অর্জন’ বলে মনে করেন অধিনায়ক কোহলি, ‘ক্যারিয়ারে যা কিছু অর্জন করেছি এটি তার উপরের দিকেই থাকবে।’ এই সাফল্যকে বিশ্বকাপ জয়ের সঙ্গে তুলনা করে কোহলি বলেন, ‘২০১১ সালে যখন আমরা বিশ্বকাপ জিতলাম সেবার আমি ছিলাম দলের সর্বকনিষ্ট সদস্য। আমি দেখেছিলাম সবাই কতটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু আমি তাদের মত অনুভুতি পায়নি। এই দেশে তৃতীয়বারের মত আসার পর আমি বুঝিছি কি অর্জন করেছি, যা এর আগে কেউ অর্জন করতে পারেনি। এর জন্য আমরা গর্ব করতেই পারি। এই জয় ভারতীয় দল হিসেবে আমাদের ভিন্ন পরিচয় তুলে ধরবে এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ছোটদের প্রেরণা হিসেবে কাজে দেবে।’
সিরিজ শুরুর আগে থেকেই বলা হচ্ছিল, এটাই ভারতের সবচেয়ে মোক্ষম সুযোগ অস্ট্রেলিয়া জয় করার। কারণ একসময়ের প্রতাপশালী অস্ট্রেলিয়া নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তারকাসমৃদ্ধ একটি প্রজন্মের অবসরের পর দলটি যখন ব্যর্থতার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে ঠিক সেই সময়ই ‘মড়ার উপর খাড়ার ঘা’ হিসেবে আসে বল টেম্পারিংয়ের দায়ে দলের দুই প্রাণভোমরা স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি। যা অস্ট্রেলিয়া দলে অপূরণীয় শূণ্যতা সৃষ্টি করে। সিরিজ জুড়েই তাদের অভাব হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ইতিহাস কি আর এতকিছু মনে রাখবে। পরাজিতের সঙ্গে ইতিহাসের বিরোধটা যে অনেক প্রাচীন। ‘বিজয়ের ট্রফি উঠেছে ভারতের হাতে’ এটাই লেখা থাকবে ইতিহাসের পাতায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত ১ম ইনিংস : ৬২২/৭ ডিক্লে.।
অস্ট্রেলিয়া : ১০৪.৫ ওভারে ৩০০ (হ্যান্ডসকম্ব ৩৭, কামিন্স ২৫, স্টার্ক ২৯*, লায়ন ০, হ্যাজেলউড ২১; শামি ২/৫৮, বুমরাহ ১/৬২, জাদেজা ২/৭৩, কুলদীপ ৫/৯৯, বিহারি ০/২) ও (ফলো অন) ৪ ওভারে ৬/০ (খাজা ৪*, হ্যারিস ২*; শামি ০/৪, বুমরাহ ০/২)। ফল : ম্যাচ ড্র।
ম্যাচ সেরা : চেতেশ্বর পূজারা (ভারত)।
সিরিজ : ৪ ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জয়ী ভারত। সিরিজ সেরা : চেতেশ্বর পূজারা (ভারত)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।