পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের আয় ক্রমেই বাড়ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রেলওয়ে আয় করেছে ১ হাজার ৪৮৬ কোটি ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা। যা আগের বছরের চেয়ে ১৮২ কোটি ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা বেশি। এ নিয়ে টানা দুই বছর আয়ের পরিমাণ ৬০০ কোটি টাকা। তবে আয় বাড়লেও এখনও লোকসানের ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রেলের সর্বমোট আয় ছিল ৯৩৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর পরের অর্থবছরে রেলের আয় কমে হয় ৯০৪ কোটি টাকা। তবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রেলের আয়ে বড় ধরনের উন্নতি হয়। সে বছর রেলওয়ে ১ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা আয় করে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বেশি। সর্বশেষ অর্থবছরেও রেলওয়ে আয় বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রেখেছে। রেলের সর্বশেষ অর্থবছরের আয়ের হিসাব শেষ হয়েছে স¤প্রতি। এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। রেলওয়ের প্রধান অর্থ উপদেষ্টা ও হিসাব অধিকর্তার দপ্তর থেকে রেলভবনে পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রেলের সর্বমোট আয় হয়েছে ১ হাজার ৪৮৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে আয় করেছে ৮৯৩ কোটি ৯৭ লাখ ২১ হাজার টাকা। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে আয় করেছে ৫৯২ কোটি ১৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা। এ হিসাবে আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৮৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত আয় করেছে রেলওয়ে। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চল রেলের আয় ৫৬ কোটি টাকা বাড়লেও পশ্চিমাঞ্চল রেলের আয় বেড়েছে ১২৬ কোটি টাকা।
রেলের হিসাব বিভাগের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সর্বশেষ অর্থবছরে যাত্রী খাতে আয় হয়েছে ৯০৫ কোটি টাকা। যার মধ্যে পূর্বাঞ্চলে ৫৮৬ কোটি ও পশ্চিমাঞ্চলে ৩১৯ কোটি টাকা। যাত্রী ব্যতীত অন্যান্য খাতে আয় হয়েছে ১৯০ কোটি, পণ্য পরিবহন খাতে ২৮৬ কোটি, বিবিধ খাতে ২৭৬ কোটি টাকা। যদিও বিবিধ খাতের আয় ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে কমেছে সর্বশেষ অর্থবছরে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিবিধ খাতে ৩০৬ কোটি টাকা আয় হলেও সর্বশেষ অর্থবছরে আয় হয়েছে ২৭৬ কোটি টাকা। এ খাতে আয় বাড়লে সর্বশেষ অর্থবছরের রেলের আয় প্রবৃদ্ধি ২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক ইনকিলাবকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে এগিয়ে যাচ্ছে রেলওয়ে। রেলওয়ের সেবার মান বাড়াতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী র নির্দেশে কয়েক বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। এজন্য বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। আরও বেশ কয়েকটির কাজ এগিয়ে চলছে। প্রকল্পগুলোর সুফল হিসেবেই রেলের আয় বাড়তে শুরু করেছে। রেলমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আয়-ব্যয়ের ব্যবধান কমে রেলওয়ে সবচেয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। একই সাথে যাত্রীসেবার মানও বাড়বে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের গত পাঁচ বছরের শাসনামলে ইন্দোনেশিয়া থেকে অত্যাধুনিক ১০০টি মিটার গেজ কোচ এবং ভারত থেকে ১২০টি ব্রড গেজ কোচ আমদানীর মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর রেলের বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনে নতুন করে কোচ যুক্ত হয়। এতে করে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর চেহারা পাল্টে যায়। রেললাইন সংস্কার ও সিগনালিং সিস্টেম আধুনিকীকরণের কারনে ট্রেনের গতিও বাড়ানো হয়। একই সাথে বেশ কয়েকটি নতুন ট্রেনও চালু করা হয়। সব মিলিয়ে ট্রেনের প্রতি যাত্রীদের হারিয়ে যাওয়া আস্থা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয় রেলওয়ে। গত কয়েক বছরে রেলমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হকের অক্লান্ত পরিশ্রম, আন্তরিকতা ও একাগ্রতা রেলের উন্নতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ যাত্রীরাও।
এদিকে, আন্তঃনগর ট্রেনের বেশকিছু কোচ সৈয়দপুর ও পাহাড়তলী রেলওয়ের নিজস্ব ওয়ার্কশপে মেরামত করা হয়েছে। মেরামতকৃত কোচের টাইপ পরিবর্তন করে দ্বিতীয় শ্রেণীর ট্রেনে সংযোজন করা হয়। এতে করে ট্রেনের সংখ্যার সাথে যাত্রীকোচের সংখ্যাও বেড়েছে। একই সাথে নিজস্ব ওয়ার্কশপে মেরামতের কারনে খরচ পড়েছে অপেক্ষাকৃত অনেক কম। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করেন, ট্রেনের সংখ্যার সাথে কোচের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় যাত্রী খাতে আয়ে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।
রেলের সংশ্লিষ্ট একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রেলের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি কোচ ও ইঞ্জিন সরবরাহ বাড়ানো গেলে খুব সহজেই রেলকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপ দেয়া যাবে। যার ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছে গত দুই বছর ধরে।
কর্মকর্তারা জানান, গত দুই বছরে মাত্র ২২০টি কোচ আমদানি করায় রেলের আয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। রেলের সবগুলো ট্রেনে পর্যাপ্ত কোচ ছাড়াও চাহিদা অনুযায়ী ইঞ্জিন আমদানী করা গেলে রেলের আয় দ্রুত বাড়ানোর মাধ্যমে রেলওয়ে আগের মতোই লাভজনক খাতে পরিণত করা সম্ভব।
রেলওয়ের তথ্যমতে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেলওয়ের নিট লোকসান ছিল ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। ওই সময়ে রেলের ব্যয় ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা। সর্বশেষ অর্থবছরেও রেলের ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এ হিসাবে ধীরে হলেও রেলের আয়-ব্যয়ের ব্যবধান কমে আসছে। চলতি অর্থবছরে রেলওয়ে ২ হাজার কোটি টাকার আয় লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করতে পারলে রেলের লোকসান এক-তৃতীয়াংশে নেমে আসবে বলে মনে করছেন রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।