মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আগামী রোববার, ৩ শে ডিসেম্বর, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে ঢাকায় নতুন যে সরকার হবে তারা আন্তর্জাতিক ফ্রন্টে হবে অনেকটা দুর্বল বা ‘উইক উইকেট’। এ অবস্থায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বাধার সম্মুখীন হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রশাসনের ‘আউট অব বাউন্ড’ নীতিতে। এই কৌশলই বলে দিচ্ছে, এটা হলো গণতান্ত্রিক স্পর্শকাতরতাকে মুড়িয়ে রাখার বাসনা।
বাংলাদেশের রাজনীতির গতিবিধি বিচার করে এটা প্রায় নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, আবারও ক্ষমতার ‘হেরেমে’ ফিরবে শেখ হাসিনার দল, তবে এবার তা হবে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসতে চাওয়া পর্যবেক্ষকদেরকে টারমার্কে পা রাখতে অনুমোদন না দেয়া হলো সরকারের প্রতিশ্রুতির ব্যত্যয়। কারণ, সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য তারা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষদের অনুমোদন দেবে। কিন্তু সেখান থেকে পিছিয়ে যাওয়া অগ্রণযোগ্য।
নির্বাচন অনুষ্ঠানে কার্যকর মনিটরিং হলো মূল অংশ। নির্বাচনের দিনে সেনাবাহিনীকে তলব করার চেয়ে এটা কম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নয়। সেনা নামানোর সিদ্ধান্তকে শেখ হাসিনার প্রতিপক্ষ বেগম খালেদা জিয়ার বিএনপি স্বাগত জানিয়েছে। এরই মধ্যে দেশজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে কয়েক হাজার সেনা সদস্য। ফলে সেনাদের প্রহরায় দেশ আরেকটি নির্বাচন প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছে। দেশ ২০১৪ সালের অভিজ্ঞতাকে মনে রেখে এ নির্বাচনে যাচ্ছে।
এদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বা ‘ভোলাটাইল সিচুয়েশন’ প্রমাণ দেয় নিজেই। গুরুত্বপূর্ণ ফারাকটি হলো, সরকার উপযুক্ত সময়ে ভিসা ইস্যু করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন (আনফ্রেল) তাদের পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানো বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের বেশির ভাগকেই উপযুক্ত সময়ে ভিসা দিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। আনফ্রেলকে পর্যবেক্ষক পাঠাতে অর্থ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে যথার্থভাবেই তারা বাংলাদেশের এমন কার্যকলাপে হতাশা প্রকাশ করেছে। তাত্ত্বিকভাবে, এমন একটি মিশনকে ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে একটি দেশের ‘অক্ষমতা’কে (ওরফে রিফিউজাল) দৃশ্যত ধরে নেয়া হয় প্রত্যাখ্যান হিসেবে। ভিসা বিলম্বিতকরণ আর কিছুই নয়, যদি সেটা ইচ্ছাকৃত না হয়।
যেহেতু আনফ্রেল তাদের পর্যবক্ষেক মিশন পাঠানো বন্ধ করেছে, গুরুত্বপূর্ণ বেক্সিট ইস্যুতে থাকা ইউরোপিয় ইউনিয়নও এবার পর্যবেক্ষক টিম পাঠাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক কিছু পর্যবেক্ষককে আটকে দেয়ার ফলে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বর্তেছে এখন স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের ওপর। যারা অবশ্যই ক্ষমতাসীন দলের কব্জায় থাকবে। উপরন্ত সরকার তাদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষমতাকে খর্ব করেছে। নির্বাচন কেন্দ্রের ভিতর থেকে ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এমনকি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই নির্বাচন ‘অবজার্ভ’ বা পর্যবেক্ষণ করা হবে আওয়ামী লীগ সরকারের বাতলে দেয়া পথে এবং পর্যবেক্ষণ হবে তাদের পক্ষে।
প্রথম ভোটটি পড়ার আগেই নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম মেঘাচ্ছন্ন। তারা যাকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলছেন তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যর্থ হয়েছে বিরোধীদের একের পর এক গ্রেফতার, সহিংসতা ও ‘ভৌতিক’ মামলায় গ্রেফতার থেকে রক্ষা করতে। পরিস্থিতি কতটা উদ্বায়ী তার একটি উদাহরণ হলো সোমবার ঢাকার কাছে নবাবগঞ্জে একদল সাংবাদিকের ওপর হকি স্টিক দিয়ে হামলা চালানো হয়।
(ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য স্টেটসম্যানের সম্পাদকীয়)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।