Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পেলেটের চেয়ে বুলেটের আঘাত ছিল বেশি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

কাশ্মীর উপত্যকার হাসপাতালগুলোর তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ১৫ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে সর্বোচ্চ সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক পেলেটে নয়, বুলেটে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। এতে সাতজন নিহতসহ ৩২ জন হতাহতের মধ্যে ২০ জনই বুলেটের শিকার হয়েছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে, নিরাপত্তা বাহিনী এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) লঙ্ঘন করেছে। ৩২ বেসামরিক নাগরিকের সবাইকে পালওয়ামার পালওয়ামা ডিস্ট্রিক্ট হাসপাতাল, গভার্নমেন্ট হসপিটাল ফর বোন অ্যান্ড জয়েন্ট সার্জারি, শের-ই-কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস ও শ্রী মহারাজা হরি সিং হসপিটালে আনা হয়। ১৫ ডিসেম্বর এসব স্থানেই হতাহতদের নিবন্ধন করা হয়। পিডিএইচে আহতদের চিকিৎসা প্রদানকারী এক সিনিয়র চিকিৎসক দি হিন্দুকে বলেন, পুলওয়ামা ডিস্ট্রিক্ট হসপিটালে আনা ছয় নিহত বেসামরিক নাগরিকের মধ্যে দুজন বুলেটে আঘাতপ্রাপ্ত ছিল। এতে বোঝা যাচ্ছে, নিরাপত্তা বাহিনী লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করার জন্যই কেবল গুলি করেনি, বরং হত্যা করতে চেয়েছিল। সপ্তম ব্যক্তি শ্রীনগরের এসএমএইচএস হাসপাতালে মারা যায়। শনিবার সকাল ৮টায় তিন হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গিকে হত্যার পর প্রচন্ড সংঘর্ষের সময় সাত বেসামরিক নাগরিক বুলেটে আহত হয়ে মারা যায়। হাসপাতাল তথ্যে দেখা যায় আমির আহমদ পল বাম কুঁচকি ও বুকে বুলেটবিদ্ধ হয়েছিলেন। সোহাইল আহমদের মাথা ও গলায় বুলে লেগেছিল। লিয়াকত দারের মাথায়, তওসিফ আহমদ মিরের ডান বুকে, আকিব আহমদ বাটের বুকে, পেটে ও মাথায় বুলেটে লেগেছিল। এক চিকিৎসক জানান, তারা সবাই পেট, বুক, মাথা ও গলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। সকাল ৯.০৫ থেকে আধা ঘণ্টার মধ্যেই সব লাশ হাসপাতালে আনা হয়েছিল। আহতদের জন্য বøাড ব্যাংকের পুরো ২০ পাইন্ট রক্তের পুরোটাই প্রয়োজন হয়ে পড়ে। পরের ৯০ মিনিটে আরো ৫০ পাইন্ট রক্ত সংগ্রহ করতে হয় দাতাদের কাছ থেকে। পিডিএইচ জানায়, আট ব্যক্তি বুলেটে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। তাদের মধ্যে ছয়জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। শ্রীনগরের এসএমএইচএসএইচে ছযজন ভর্তি হয়, একজন মারা যায়। আহতদের মধ্যে তিন জন বুলেটে আঘাতপ্রাপ্ত ছিল। শ্রীনগরের জিএইচবিজেএসে সাতজন ভর্তি হয় বুলেটে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে। এসকেআইএমএসে দুজন আহত লোক ভর্তি হয়। তাদের একজন বুলেটে আঘাতপ্রাপ্ত ছিল। চিকিৎসকেরা জানান, এখন সবার অবস্থা স্থিতিশীল। পিডিএইচে জানানো হয়, তাদের হাসপাতালে বুলেটবিদ্ধ ২০জনকে ভর্তি করা হয়েছে। একদিনে ভর্তি হওয়া এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা। হাসপাতালটি ২০১৬ সালে বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর ৪৬৩ জন আহতকে চিকিৎসা দিয়েছিল। তখন এদের মধ্যে মাত্র ৪০ জন ছিল বুলেটে আক্রান্ত। ২০১৬ সালের পর শনিবারের ঘটনাই ছিল সর্বোচ্চ। প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনী ও পুলিশ অভিযান শেষ করে ফেরার সময় কাছের ধানক্ষেত ও রাস্তায় অবস্থানরত লোকদের প্রতি অর্ধ শতাধিক বুলেট ছোড়া হয়। এসওপি অনুযায়ী, অভিযান শেষে ফেরার সময় দাঙ্গাবিক্ষুব্ধ পরিস্থিতিতে গুলি করার আগে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে হবে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, শনিবারের অভিযান যেখানে হয়েছে, সেখান থেকে কিছু দূরে ২৮ নভেম্বর লস্কর-ই-তৈয়বার কমান্ডার নাভিদ জাট ও তার এক সঙ্গী নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছিল। সেদিনকার মতো পদক্ষেপ এ দিনও গ্রহণ করা হলে হতাহতের সংখ্যা হতো অনেক কম। এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ২৮ নভেম্বর পাথর বর্ষণে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছিল। জনতার পাথরে এক সৈন্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কিছু সময় শুয়ে ছিল। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শান্ত ছিল এবং জনতার প্ররোচনা সত্তে¡ও গুলি ছোড়েনি। পুলওয়ামার ডেপুটি কমিশনার জি এম দার দি হিন্দুকে বলেন, এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে ঘটনা জানা যাবে। তাছাড়া তিনি পুলিশকে এফআইআর দাখিল করতে বলেছেন। এতেও সত্য জানা যাবে। সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ