পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইতি টানতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়ার পর এবার আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে, শেষ হবে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে চলা ভয়াবহ যুদ্ধ। এ বিষয়ে গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে এক মাসের মধ্যে দেশটিতে থাকা অর্ধেক মার্কিন সেনা ফিরিয়ে আনবে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, বৃহষ্পতিবার পদত্যাগ করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস। সৈন্য প্রত্যাহারে প্রেসিডেন্টের সাথে মতভেদের কারণেই তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরুর ঠিক একদিন পরেই এবার আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিল ট্রাম্প প্রশাসন। আফগানিস্তানে কূটনৈতিক শান্তি প্রচেষ্টা জোরদার করার জন্য সেখানে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখার পক্ষে ছিলেন জিম ম্যাটিস। এ বিষয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। এর পরেই আসে তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত। তিনি পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার মতপার্থক্য হওয়ায় তিনি পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তবে সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারটি সরাসরি তিনি তার পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন নি।
শান্তি আলোচনা চললেও আফগানিস্তানে এখনও সরকারের নিয়ন্ত্রন পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখনো দেশটির অনেক এলাকা তালেবান অধ্যুসিত এবং প্রায়ই তারা সরকারী ও মার্কিন বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দীর্ঘ ১৪ বছরেও যুক্তরাষ্ট্র সেখানে শান্তি আনতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়। পরে রাশিয়ার প্রচেষ্টায় সেখানে শান্তি আলোচনা শুরু হয়।
ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তকে ভুল বলে মনে করছেন আফগানিস্তানে ন্যাটো ও মার্কিন বাহিনীর সাবেক কমান্ডার জেনারেল জন অ্যালেন। এই মুহূর্তে সেনা প্রত্যাহারের এমন সিদ্ধান্ত মার্কিন কৌশলে বিঘ্ন ঘটাতে পারে পারে বলে মন্তব্য তার।
ট্রাম্পের অন্যতম সমর্থক রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম, সৈন্য প্রত্যাহারের সম্ভাব্য বিপদ সম্মন্ধে সতর্ক করে বলেন, ‘আফগানিস্তানের পরিস্থিতিতে এই মুহুর্তে সেনা একটি প্রত্যাহার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল। এর ফলে সেখানে আমাদের অর্জন নষ্ট হবে এবং দ্বিতীয় ৯/১১-এর ঝুঁকি তৈরি হবে।
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশনের হিসাব অনুসারে, চলতি বছর শুধমাত্র জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বরে দেশ জুড়ে তালেবান হামলায় আনুমানিক ২,৭৯৮জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৫,২২২জন আহত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সাল থেকে আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েন শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে মর্মান্তিক এক হামলায় অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ওয়াশিংটন এ হামলার জন্য তালেবানকে অভিযুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে আফগানিস্তানে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। বর্তমানে আফগানিস্তানে তাদের প্রায় ১৪,০০০ সৈন্য আফগান বাহিনীর সহায়তায় কাজ করছে। সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।